একজন ধর্ষিতা ও Two-finger Test

ফাহিমা কানিজ লাভা ৩১ অক্টোবর ২০১৩, বৃহস্পতিবার, ০৭:৫৫:৫৫অপরাহ্ন এদেশ, সমসাময়িক ১৬ মন্তব্য

একজন ধর্ষিত নারী ধর্ষণের ফলে শারীরিক ও মানসিকভাবে যখন সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়ে, ঠিক তখনই আদালতে তাকে 'Two-finger Test' নামক অপমানজনক পরীক্ষা দিতে হয় নগ্ন হয়ে কতোগুলো পুরুষ চিকিৎসকদের সামনে।

আমাদের দেশে একজন ধর্ষিত নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কিনা তা যাচাই করার জন্য আদালতে 'Two-finger Test' করানো হয়। এই টেস্ট করানোর জন্য কি দেশে নারী চিকিৎসক নেই, তাদের দ্বারা কি এই টেস্ট করানো যায়না? কেন পুরুষ চিকিৎসকদের সামনেই একজন নারীকে নগ্ন করতে হবে?

এই পদ্ধতিটা কতোটা কার্যকর বা যুক্তিযুক্ত? ধর্ষণের ফলে ধর্ষিত নারী কুমারীত্ব বা সতীত্ব হারিয়েছেন কিনা তা যাচাই করা হয় এই টেস্টের মাধ্যমে। কুমারীত্ব বা সতীত্ব শব্দগুলো পুরুষতান্ত্রিক সমাজের সৃষ্টি করা। একজন নারী অনেক ভাবেই কুমারীত্ব হারাতে পারেন, ধর্ষণ ছাড়াও। কোনো দুর্ঘটনা, বা পূর্বে সে ধর্ষিত হয়েছিল, বা সে স্বেচ্ছায় কারো সাথে মিলিত হয়েছিল, অথবা সে বিবাহিত। এক্ষেত্রে কি এই 'Two-finger Test' দ্বারা তার সুবিচার নিশ্চিত করা যাবে? এসব ক্ষেত্রে ফলাফল আসবে যে তার কুমারীত্ব আগেই নষ্ট হয়েছে, এবং তাকে প্রতিপক্ষের আইনজীবিরা ধর্ষককে নির্দোষ প্রমাণ করে ফেলেন সহজেই। যার কুমারীত্ব নেই, সে কি তাহলে বেশ্যা নাকি?

সম্প্রতি উচ্চ আদালতে ধর্ষণ পরীক্ষার আপত্তিকর, ত্রুটিপূর্ণ, নারীর প্রতি অবমাননাকর এই মেডিক্যাল টেস্ট বাতিলের লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ জারি করা হয়েছে। উচ্চ-আদালতের এই সুবিবাচনাপ্রসূত নির্দেশকে আমরা মনে-প্রাণে স্বাগত জানাই। নারী হোক অথবা পুরুষ, সকলের মানুষ হিসেবে প্রাপ্য সম্মান ও সুবিচার নিশ্চিত করা প্রত্যেকের মানবিক দায়িত্ব।

 

0 Shares

১৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ