অপরাধ যেটাই হোক সেটি দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা, চাওয়া, এবং প্রতিফলন। পৃথিবীর কোন কাজই সেটা ভালো হোক কিংবা মন্দ কেউ একদিনে করে না।

কোন মেয়েকে উঠিয়ে নিয়ে বেঁধে রেখে ধর্ষণ, বাসে একা পেয়ে ধর্ষণ, কবর থেকে তুলে কিংবা মর্গে রাখা লাশ ধর্ষণ। বর্তমানে আলোচিত ঘটনা মাষ্টার মাইন্ডের শিক্ষার্থী ধর্ষণ;অতঃপর তার অতি রক্তক্ষরণে মৃত্যু। কোন ধরনের মানুষ দ্বারা এগুলো ঘটে বা ঘটানো হয়। কিংবা কোন ধরনের মানুষ এসব করে? তারা কি রাষ্ট্রের কাছে ক্ষমা পাবার যোগ্য? নাকি সরাসরি শাস্তি পাবার যোগ্য?

একটা ছয় বছরের শিশু যখন ধর্ষিত হয়, সে চিৎকার করে, কাঁদে। একটা মেয়েকে ধর্ষণ করে দশজন সেইসাথে অন্যান্য অশ্লীল আচরন এবং ভিডিওধারন করে থাকে। সেও নানা ভাবে বাঁচার আকুতি জানায় কিংবা এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তারপরও ধর্ষক থামেনা। বৃদ্ধা নারী, ছেলে বাচ্চাকে ধর্ষনের সময় নিজের মা বা সন্তানের মতোও মনে হয়না। এসব স্বাভাবিকতার বাইরের আচরন। শুধু সে সময় নয় তার ভেতরে ‘মনুষ্যত্ব‘ নামক বিষয়টি অনুপস্থিত।

মেয়েরা না হয় অশালীন পোশাক পরে কিংবা উদ্ভট সাজগোজ কিংবা শালীনভাবে বের না হওয়ার ভিত্তিতে নির্যাতন হয়। কিন্তু একটি ছেলেশিশু তো আর পোশাক বা উদ্ভট কোন আচরন করে না। মেয়েদের মত তাদের শরীর লোভনীয় নয়। তাহলে যে ব্যক্তিটি তার সাথে এমন আচরন করে সমস্যা তার নিজের। সে বিকারগ্রস্ত, মানষিক রোগী। সারাদিন পশুর মত খায় আর যৌন চাহিদাও পশুর মত। আর একটা কারন হল পশুদের যেমন কোন বিনোদন মাধ্যম নেই। এই নরাধম, বিকারগ্রস্তরা বিনোদনের অন্য কোন মাধ্যম খুঁজে পায় না। তাই বিনোদনের জন্য তারা ধর্ষনকেই বেছে নেয়।

গবেষণা বলে, মানসিক বিকারগ্রস্ত ব্যক্তির শরীরে সে সময় এমন বাজে পরিস্থিতি তৈরি হয় যে, সে শুধু ছেলেশিশুকে না, যে কোন মাদী ছাগল কিংবা ভেড়ার সাথেও যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে বাধ্য।

রাষ্ট্র এমন অপরাধীকে প্রাণভিক্ষা চাইলে, প্রায়শই ক্ষমা করে দেয় এই মর্মে, আর কখনো এমন কাজ করবে না কিংবা ভুল করে ফেলেছে। এখন প্রশ্ন, সে কি আসলেই এমন কাজ আর করে না? আসুন দেখি একজন অপরাধীর ক্যাটাগরী কেমন? সে মানুষ রুপে সত্যিকারের মানুষ নাকি অন্যকিছু?

মনোবিজ্ঞানীদের মতে, মানব মন তিনটি উপাদানের সমন্নয়ে গঠিত।

১.ইগো (মানব মনের সকল চাওয়াগুলোর সমন্বয়কারী) মনের ভেতর চরম আকার ধারণ করে আছে কোনকিছু পাবার উত্তেজনা। কিন্তু ইগো মনকে বোঝাতে সক্ষম হয়, এটা এখন তোমার জন্য নয়। একটু ধৈর্য ধর একসময় ঠিক তোমার হবে। মন তখন শত চাহিদার পরও অন্যায় থেকে সরে আসে। ন্যায়ত তাকে পাবার প্রয়াস চালায়।

২.এরপর সর্বোচ্চ বাধাদানকারী, মানুষের অতি আত্মসম্মান বোধ এটাকে বলে সুপার ইগো।এ ধরনের মানুষ কখনোই কোনরকম অন্যায় কাজ করেনা। কারন তার মন ও মস্তিষ্ক এতটাই তিক্ষ্ন ও বাস্তববোধ সম্পন্ন যে লোভ লালসার হরমোন কাজ করার চেয়ে; বাধা প্রদান কারী হরমোন শরীরে বেশি থাকে। এজন্যই একশ্রেণীর মানুষ কখোনো কোন অন্যায় করে না। সমাজের সবচেয়ে  উচ্চতম মানসিকতার মানুষ এরা।

৩.আমাদের জৈবিক সত্তাকে ইড বলা হয়। (কামনা,বাসনা, চাওয়া, চাহিদা, লোভ) এটা হল ইড।

এটি মানুষ ও পশু সবার থাকে। পশুদের মাঝে শুধু ইড কাজ করে। অনেক সময় আমাদের যা খুশি করতে মন চায়। মন বলে যা হবে হোক এটা করেই ফেলি।এটা পাশবিক আচরন। তাহলে আমরা দেখতে পেলাম একজন ধর্ষক আর পশুর কোন তফাত নেই। গবেষণা বলে, মানসিক বিকারগ্রস্ত ব্যক্তির শরীরে সে সময় এমন বাজে পরিস্থিতি তৈরি হয় যে, সে শুধু ছেলেশিশুকে না , লাশ, পশুর সাথেও যৌন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য তৈরি থাকে।

জোর পূর্বক যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা। জীবিত বা মৃতদেহ কিংবা পশুর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করা একটি মানসিক রোগ। এই ধরনের রোগকে চিকিৎসা ‘নেক্রোফিলিয়া‘ বলা হয়ে থাকে। এ রোগের চিকিৎসায় অধিকাংশ রোগী ভালো হয়না,কিন্তু ভান করে ভালো হবার। এবং সুযোগ পেলে আবার একই কাজ করে।

এ অবস্থায় রাষ্ট্রের কি করা দরকার? তার চিকিৎসা কিংবা  রাষ্ট্রীয় ক্ষমা? আলোচনায় বলে, কোনটাই না। কারন সে তো মানুষ হিসেবে গন্যই হচ্ছে না। অযথা আইন আদালতে এদের টানাটানি না করে  বরং ইসলামী আইনের বিধান মোতাবেক তার সাজা হওয়াই উচিত। কারণ সাথে সাথে সাজা না হলে ধর্ষণের মত মারাত্মক অপরাধের অবসান কোনদিন হবে না। আইনের কঠোর বাস্তবায়ন জরুরী।

ছবি- নেট থেকে।

0 Shares

১৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ