
ঈঁদ যখন থেকে ইদ হইয়া গেলো, তখন থেকেই নিজের চোখ নিজেরই খুবলে নিতে ইচ্ছা করতাসে। কি দেখতাসি এসব! কি শুনতাসি? এগুলো কি প্রতারণা নয়? এইযে আমি আদর্শলিপি পইড়া পইড়া মোটামুটি শিক্ষিত হইয়া ক্লাস ওয়ানের লিখিত ইন্টারভিউ দিতে গিয়া বহুবছর আগে ফেল মারছিলাম, এখন সেই ভর্তুকি কে দিবো? সেখানেতো আমি ঈঁদকে ইদ, আর ঈগলকে ইগলই লিখছিলাম! শুধু কি তাই, গরুকে মাঝে মাঝে গুরুও লিখতাম। তখন তো বাংলা একাডেমি কিছু কইলো না, আর এখন যেইই ভুল বানান গুলা আয়ত্ত কইরা নিলাম তখুনি কিনা তারা বাগড়া দিতাসে!😡
ফেসবুকে একটা পোস্ট দিছিলাম, ক্যাপশন দিলাম, পছন্দের ভিডিও।
ওমনি কিছু বানান দরদী আইসা আমারে কইলো ওটার বানান ভিডিও না ভিডিয়ো হইবো!
রিপ্লাই দিলাম, আমি জানতাম না, ঠিক করে নিও।🙄
তাতেও মুশকিল, বলে নিও হবে না, নিয়ো!
ধুর, প্রসঙ্গ বদলাইয়া কইলাম দেখোতো আমার প্রোফাইল ছবিটা ফর্সা না হইয়া কালো হইলো ক্যামনে?
– ফর্সা বানান ভুল, এখন থেকে ফরসা লিখবা 🥴
জিজ্ঞেস করলাম এবার ঈঁদে কি গরু কুরবানী দিবা না ছাগল?
-ইদে আমি গোরু কোরবানি করি।
ওও, কিন্তু আরবি ভাষায়তো ও কার নাই, হরফের নিচে পেষ দেয়ার পর উ হয়ে যায়! 😉
– জানিনা, বাংলা একাডেমিরে জিগ্যেস করো
হায় আল্লাহ, এইভাবে ঈঁদকে ইদুর থুক্কু ইদ বানানোর জন্যেই কি গরুকে গোরু বানাইয়া দেয়া হইলো! 🤔
ইচ্ছে ছিলো অনেক কিছু লেখার। কিন্তু লিখতে ভয় লাগতাসে। কে জানে ভুল বানানের ফেরে পইরা কোনটা শুদ্ধ আর কোনটা না জানি সিদ্ধ হইয়া যায়! 🤭
অনেকদিন পরে ব্লগে আইসাও কিছু লেখতে পারলাম না, হায়রে বানাম, 😭
ছবি, নেট থেকে হাওলাত করসি।
২৭টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
বাংলা একাডেমিও শব্দ ও বর্ণ হাওলাত করে চলছে ।
পর্তুলিকা
একদম ঠিক, ছোট্ট কমেন্টে বড় একটা ধন্যবাদ দিলাম।
প্রদীপ চক্রবর্তী
বাংলা একাডেমী একেএকে বাংলা বানানের শ্রাদ্ধ করে দিবে। যা অবস্থা দেখছি।
যথার্থ লেখনী।
পর্তুলিকা
আসলেই। বানান বিভ্রান্তি নিয়ে ক্রমশ জোট বেধে যাচ্ছে 🙁
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অনেক দিন পর আপনার লেখা পড়লাম। বানান নিয়ে এমন আধুনিকায়ন আমারও ভালো লাগেনা। আদর্শলিপি, এতো বছরের শিক্ষা সব এক নিমিষেই ভেঙে দিলো। আমাদের শিক্ষা তাহলে কিভাবে, কোথায় কাজে লাগাবো? সবতো মিথ্যা করে দিলো। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা রইলো।
পর্তুলিকা
একটু ব্যস্ত ছিলাম বন্ধু। ছুটি পাওয়া মাত্রই চলে এসেছি সোনালী বন্ধুদের কাছে। বর্তমান বাংলা বানান গুলো নিয়ে যেসব তামাশা হচ্ছে তাতে আমরা সংখ্যায় গরিষ্ঠ মানুষেরা বিপাকে পড়লেও কিছু মানুষ বেশ আনন্দেই আছে। আমাদের লাভ/লস নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই, এই শ্রেণীটা চাচ্ছে বাংলাকে বাঙলা ভাষা বানাতে। বাংলাদেশী ভাষা নয়।
আলমগীর সরকার লিটন
বেশ মজার লেখেছেন আপু
পর্তুলিকা
ধন্যবাদ কবি ভাই।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
বানান নিয়ে ফেসবুক থেকে সর্বত্র কি যে চলছে বুঝি না। মাঝেমধ্যে উল্টা পাল্টা বানান দেখে নিজেও দ্বিধায় পড়ে যাই। সুন্দর লেখার জন্য শুভেচ্ছা ।
পর্তুলিকা
আর কইয়েন না। কিছু লেখতেই এখন ভয় পাই। বানানের এত্তো অত্যাচার কবে শেষ হইবো বাংলা একাডেমিই ভালো কইতে পারে।
সুরাইয়া পারভীন
হা হা হা হা হা হা
আগে হেসে নেওয়া যাক…
বাংলা একাডেমী থেকে আপনাকে পুরুষ্কৃত করা উচিত।
কেননা কয়েক বছর আগে এর প্রচলন আপনিই শুরু করেছিলেন
পর্তুলিকা
আসলে আমিও এইটাই কইতে চাইসি। এক্টু ঘুরাইয়্যা পেচাইয়্যা কইলাম আপু।
কমেন্ট এ এত্তো গুলা ধইন্যবাদ।
সাবিনা ইয়াসমিন
তাইতো বলি এখককার ঈদ এমন মাটি-মাটি লাগে কেন! ঈঁদ থেকে চন্দ্রবিন্দু উধাও হয়েছে যখন থেকে চাঁদ দেখা কমিটির চোখ দিয়ে আমরা চাঁদরাত দেখা শুরু করেছিলাম। এখন ইদ আসে আর যায়, ঈদের আনন্দ আর আসে না। বানান নিয়ে ইদানিং আমিও ভয়াবহ সমস্যায় আছি, কোনটার বানান কোনটা লিখবো ভাবতে ভাবতেই লেখার আইডিয়া পালিয়ে যায়।
ভালো থাকুন, যথাসাধ্য নিয়মিত হোন।
শুভ কামনা 🌹🌹
পর্তুলিকা
সেইম প্রব্লেম! আপনার জন্য সমবেদনা ছাড়া কিছু রাখতে পারলাম না।
ধন্যবাদ জানবেন।
সুরাইয়া নার্গিস
স্বাগতম আপু ব্লগে আমি আসার পর আজ প্রথম আপনার লেখা পড়ালা।
দারুন লেখছেন আপু।
বানানের যে অবস্থা দেখতেছি তাতে খুব দুঃখজনক, মনে হচ্ছে এতদিন ভুল পড়াশোনা করেছিলাম।
ছোট একটা ঘটনা শেয়ার করি,, আমি এইচ.এস.সি পরীক্ষা দিচ্ছি প্রথম বেঞ্চে আমার সীট তো স্যার,মেম সবাই বেঞ্চের কর্ণারে বসে চা খেতে বা গল্প করতেন।
আমার লেখা বেশ সুন্দর তাই আমি লেখা পরিস্কার বলে ভুল, শুদ্ধ বুঝা যায় সেটা যে দাঁড়ায় সেই খেয়াল করে।
আমি তাড়াহুড়া করে গুরুজন লিখেতে ফেলি গরুজন লিখে ফেলি। স্যার সেটা দেখা মাত্রই আমাকে ধমক দিলেন “আলিফ বানান ঠিক করো” আমি যতবার দেখছি বানান ঠিক আছে ভুলটা ধরতে পারছি না অবশষে রুমে সব স্যার মেম হাজির স্যারের ধমকে আমার কান্না শুরু।
পরে কাঁদতে কাঁদতে ৭ বার লিখার পর গিয়ে বানান ঠিক হয়ে গেল।
পরে স্যারের ধমকের কারন বুঝতে পারলাম, এটা আমার শিক্ষা জীবনের সেরা পাওয়া।
আপু আপনার লেখা পড়ে ভাবতেছি “কবে আবার গুরুজন গরুজন হয়ে যায় 😂, আর আমার কান্না বিফলে যায় ☺।
ভালো থাকবেন আপু,
শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।
পর্তুলিকা
ওয়াও!! এতো সুন্দর কমেন্ট এর জবাবে কি লিখবো বুঝতে পারছি না। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপুমনি।
সুপায়ন বড়ুয়া
এক এক দেশের এক এক ভাষা।
একেক রকম লেখা।
ছেলে বেলায় যা শিখেছি
হৃদয়ে আছে আঁকা।
তাই বলে কি সহজ সরল ভাষায়
আর হবে না দেখা ?
ভাল লাগলো। শুভ কামনা।
পর্তুলিকা
আপনার কবিতা কমেন্ট পেয়ে অনেক ভালো লাগলো কবি। ধন্যবাদ 🌹🌹
নিতাই বাবু
কে করল রে এই বাংলায় বাংলা একাডেমি আবিষ্কার?
এই একাডেমির জন্যই হারিয়ে গেল ‘ঈ’, ‘ঊ’, ‘ঈ’-কার, ‘ঊ’-কার!
আপনার পোস্টের ফিচার ছবি দেখুন! বাংলা একাডেমি’র নিচে লেখা রয়েছে, “ষ্টাফ বাস”। আধুনিক বাংলা বানানে বিদেশি শব্দে ‘ষ’ হবে না। ‘ষ’ পরিবর্তে ‘স’ হবে বলে জানি। তাহলে “ষ্টাফ” বানান ভুল! ওখানে লেখা লেখা দরকার ছিল “স্টাফ বাস। এবার বুঝুন ব্যাপার! যাঁরা বানান নিয়ে এতএত হৈচৈ ঘষামাজা করছে, তাঁদের নিজস্ব পরিবহনেই টানানো থাকে ভুল বানানে লেখা সংবলিত সাইনবোর্ড।
সময়োপযোগী লেখার জন্য আপনাকে অজস্র ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
পর্তুলিকা
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্যে। ফিচার ছবিটা যে উদ্যেশে দিয়েছি আপনি সেটা ধরতে পেরেছেন। আমরা চাইলেই অনেক কিছু বলতে পারি না আমাদের সীমাবদ্ধতার জন্যে। কিন্তু যারা সীমাবদ্ধ নয় তারা দিনেদিনে স্বেচ্ছাচারিতায় লিমিট ক্রস করে ফেলছে। ফিচার ছবিতে দেখুন, বাংলা, শব্দটা বাদে একাডেমি-ষ্টাফ-বাস, তিনটি শব্দই বিদেশি ভাষায় ব্যবহার করেছে। কেন? যারা বাংলা ভাষা নিয়ে গবেষণা করতে পারে তারা এই শব্দ গুলোর বাংলা সমার্থক শব্দ খুঁজে নিতে পারলো না?
নিতাই বাবু
মনের কথাই বলেছেন, দিদি। ফেসবুকে “শুদ্ধ বানান চর্চা শুবাচ” গ্রুপে এ্যাড হয়ে অনেকের পোস্টে মন্তব্য করেছিলাম এভাবে–”পৃথিবীর আর কোনও দেশের ভাষা নিয়ে এতো যুগ যুগ ধরে গবেষণা হয় না। হয় এবং হচ্ছে শুধু আমাদের বাংলা ভাষা নিয়ে এতএত গবেষণা-সহ বছর বছর ঘষামাজা। এর ফলে বাংলা নিয়ে স্বয়ং খাঁটি বাঙালিরাই মহা বিপদের মধ্যে আছে। এভাবে চলতে থাকলে বাংলা ভাষার প্রসার তো দূরের কথা, বরং এই প্রিয় মাতৃভাষা রসাতলেই যাবে বলে মনে হয়।”
তৌহিদ
লক্ষ্য করলে দেখবেন বাংলা একাডেমী কোন শব্দের বানান পরিবর্তন করলে => এরকম একটি চিহ্ন দেয়। এর মানে হচ্ছে আদি শব্দটি এরুপ যা বর্তমানে আমরা অন্য রকম পড়ছি বা জানি। যেমন গরু => গোরু। ঈদ => ইদ। তারমানে গরুর আদিশব্দ গোরু। এবং ইদ এসেছে ঈদ থেকে। ঈদ, ইদ, গরু এবং গোরু দুটোই বলা যাবে।
বাংলা একাডেমীর কাজই হচ্ছে বাংলা শব্দ নিয়ে গবেষণা করা। কিন্তু এসব পরিবর্তন আমাদের দ্বিধাদ্বন্দ্বে ফেলে দেয় বৈকি।
ভালো লিখেছেন। শুভকামনা সবসময়।
পর্তুলিকা
সুন্দর বলেছেন। বহু বছর ধরে ব্যবহৃত প্রচলিত শব্দ গুলো এতবেশি নাড়াচাড়া না করে ভালো হতো তারা যদি ভাষার সুরক্ষা এবং সর্ব সাধারণকে মাতৃভাষার প্রতি দায়িত্বশীল করানোর ব্যাপারে মনোযোগ দিতো।
মনির হোসেন মমি
এতো দেখছি সব উ কার এর খেলা! সিঙ্গাপুর মালেশিয়ায় সব কথার শেষেই” লা” যেমন No-la ok la ইত্যাদি এখন আমাদেরকেও উ কার যোগ করে কথা বলতে হবে!!
সুন্দর উপস্থাপনা।
পর্তুলিকা
ধন্যবাদ ব্লগার বন্ধু। কিন্তু আফসোস আমি আপনার লেখা খুঁজে পাইনা। আপনি কি এখানে লেখেন না?
মনির হোসেন মমি
বিশেষ ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার অদমের লেখার বিষয়ে খোজ খবর নেয়ার জন্য। এ ব্লগে লিখি না যে তা নয় তবে আপনাদের মত এতো এতো লিখতে পারি না,আপনাদের লেখাগুলো পড়ে নিজের লেখার মনের তৃপ্তি মেটাই।আমার প্রোফাইলে গেলেই দেখতে পাবেন আমি কেমন ফাকিবাজ ব্লগার বন্ধু।করোনায় আমাকেও আরো ফাকিবাজ বানিয়ে দিচ্ছে। ধন্যবাদ।
আরজু মুক্তা
বানানের সালতামামি!
মাথা চোখ সব আউলায় গেছে এইসব বানান দেখে।
আমি ভাবি এগুলো মনে থাকবে তো!