দূরের ইউক্যালিপ্টাস গাছটায়..
শীতের আগেও পাতা ছিল।
শীতেও পাতা দেখেছি।
ফুল ধরতো কিনা জানিনা।
দৃষ্টি পৌঁছাতো না অতদূর।
মাঝেমাঝে জানালার এ পাশটায় দাঁড়িয়ে
খুঁজি দূরের সৌন্দর্য।
দূরে যেখানে আকাশ ঠেকেছে সেখানটাতে
অথবা ইউক্যালিপ্টাসে।
সাদা মূর্তিমান দেহ, চুনের মতো সাদা।
পাতাগুলো যেন কেশর।
পাখিদের বসতে দেখিনি কখনো গাছটাতে।
হয়তো বসেছে !
হয়তো চোখেই পড়েনি !
শীত ফুরিয়ে বসন্ত..
গাছটাতে পাতা নেই একটিও।
কেশরহীন সিংহ দেখতে যেমনটা লাগে !
তেমনই লাগছে।
হঠাৎ এমন বিশ্রী হয়ে গেল কেন?
ইউক্যালিপ্টাস কি পত্রঝরা উদ্ভিদ?
যেখানে প্রতিবেশী গাছগুলো ছন্দে-আনন্দে
দুলছে মৃদু বাতাসে।
সেখানে সব হারিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে ইউক্যালিপ্টাসটা।
নড়াচড়া তো দূরের কথা-
নিঃশ্বাস নিতেও মনে হয় ভয় পায়।
ওর ভিতরও বোধকরি একটা দুটো
বিশ্বাসের পাতা
গজিয়েছে এতোদিনে।
জীর্ণ-শীর্ণ দেহে দাঁড়িয়ে আছি এই তো অনেক!
একদিন এক ভোরে দূরে তাকাতেই
হঠাৎ চোখ আটকালো ইউক্যালিপ্টাসে
চশমাটা রাখা ছিল বালিশের কাছেই।
তরিঘরি করে চোখে লাগিয়ে নিলাম
একি, ইউক্যালিপ্টাসে কেশর !
ঠিক দেখছি তো!
এই দুদিন আগেও তো!
মৃদু বাতাসে আমার ভিতরটা দুলে উঠলো যেন!
যেন আমার ভিতর থেকে ধীরপায়ে
বেড়ে উঠছে কচিপাতারা!
যেন আমিই ধারণ করছি নতুন এক সত্তা।
যেন আমিই ঐ ইউক্যালিপ্টাসটা।
২২টি মন্তব্য
মেহেরী তাজ
নতুন কিছু লাভের জন্য পুরাতন অনেক কিছুই ছাড়তে হয়।
বিশ্বাস যখন আছে তখন বেঁচে ওঠা অনিবার্য…..
ইকরাম মাহমুদ
বেঁচে থাকায় বিশ্বাস, জেগে উঠায় বিশ্বাস থাকতে হয়, রাখতে হয়।
মিষ্টি জিন
বিশ্বাসই আমাদের বাচিয়ে রাখে।
ভাললাগা রইলো কবিতায় ভাইয়া।
ইকরাম মাহমুদ
ভালো লাগল সুন্দর মন্তব্যে।
নীলাঞ্জনা নীলা
কবিতা পড়লাম। মনের কতো কথা যে বলে ফেললেন!
দেখলাম ঋতুর বৈচিত্র আর মানব মনের আনাচ-কানাচ।
ওহ ইউক্যালিপ্টাস গাছের ফুল খুব সুন্দর। শ্বেতশুভ্র কেশরের মতো। আমাদের দেশে এই গাছকে নীলগিরি বলেও ডাকা হয়ে থাকে।
ইকরাম মাহমুদ
ধন্যবাদ আপু। ঋতু ও মনের বৈচিত্র্যই তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি ইউক্যালিপ্টাসীয় সত্তার আড়ালে। নীলগিরি নামটা বইয়ে পড়েছি আর ইউক্যালিপ্টাস নামটা বলতে কঠিন হলেও এটাই বলে সবাই।
তবে গ্রামে এটাকে সাদা গাছ বলে।
নীলাঞ্জনা নীলা
গ্রামে সাদা গাছ বলে? আমি জানতাম না।
ছাইরাছ হেলাল
আপনার লেখায় ঋতুর বৈচিত্র ধরা পড়েছে,
তাও ভাল চশমাটি যথা সময়ে খুঁজে পেয়েছিলেন।
ইকরাম মাহমুদ
ধন্যবাদ ভাইয়া। চশমাটা সঙ্গী হয়েছে বছর ৮ হলো। এটাকে চোখের আড়াল হতে দেই না। যতোটা সম্ভব কাছে রাখা যায়।
মোঃ মজিবর রহমান
যেন আমিই ধারণ করছি নতুন এক সত্তা।
যেন আমিই ঐ ইউক্যালিপ্টাসটা।
সময়ের আবর্তনে সব ক্ষয়ে যাবে
ভূমিষ্ঠ শিশু আজ প্রায় ৩০ হয়েছে
আরও পরে লাবন্য হারাবে
আরও পরে যুবকতা হারাবে
আরও পরে জিবনের জোলশ হারাবে
একদিন এধরা থেকে বিদায় নেবে।
এটাই স্রষ্টার নিয়মে।
ইকরাম মাহমুদ
সময়ের আবর্তনে সব ক্ষয়ে
যাবে। স্রষ্টার নিয়মের কোনো হেরফের হয়না। সুন্দর মন্তব্য। আপনাদের মন্তব্য, সমালোচনা আমার পাথেয়।
মোঃ মজিবর রহমান
ইকরাম ভাই, সমালোচনা, আলোচনা জানতে এবং শিখতে অনেক অনেক সুবিধা আমার কাছে যা জানিনা তা জানব। আমি কিছুই জানিনা জানতে চাই, শিখতে চাই সাধ্যমত।
অরণ্য
শুভ কামনা রইল ইউক্যালিপ্টাসটার জন্য।
ইউক্যালিপ্টাসের ছোট ছোট ফলে দারুন সুগন্ধ আছে।
ভাল থাকুন ইউক্যালিপ্টাসের মতো করে দৃঢ়তা নিয়ে।
ইকরাম মাহমুদ
নিজেকে খুঁজে পাওয়ার মন্ত্রণা পেয়েছি। হারাতে চাইনা। শুভেচ্ছা জানবেন।
আবু খায়ের আনিছ
ঋতু পরিবর্তেন ছোয়াই বাস্তবিকই এমন অবস্থা হয় এই গাছের। আর কি যেন বলেছিলাম ভুলে গিয়েছি।
ইকরাম মাহমুদ
ইউক্যালিপ্টাসের পাতা বেঁটে খাও, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পেতে পারে
প্রহেলিকা
শব্দের বাক্য বন্ধনে কাব্যকে সুনিপুনভাবে গ্রন্থিত করেছেন। শব্দ চয়ন এবং আবহ ও দৃশ্যকল্প সৃষ্টিতে চমৎকারিত্ব স্পষ্ট। খুব সুন্দর!
ইকরাম মাহমুদ
অসাধারণ মন্তব্য। প্রশংসা আর সমালোচনা যেটাই হোক আপনাদের মন্তব্য আমার অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
গাজী বুরহান
মনের মত করে পড়লাম। বেশ ভালো লেগেছে। বুঝতেই দেয়নি যে কোথায় আছি।
ইকরাম মাহমুদ
-{@ -{@
নীরা সাদীয়া
খুব নস্টালজিক কবিতা লিখেছেন আপনি। প্রকৃতি এখানে চমৎকার আবহ তৈরি করেছে।
ইকরাম মাহমুদ
ধন্য+
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।