এ-কোথায় এলাম!! জিউসের গোপন দরবার!! না-কী কাশিম বাজার কুঠি!! ঘসেটি বেগমকে-তো দেখছি না!!
হবু-গবুর দরবার!! নাকি কোন নাট্য মঞ্চ!! দারুণ অপ্সরী বা সাধের মায়াঞ্জন-ডাইনিদেরও না!! ঠিক ঠাওর করতে পারছিনে।
ফিসফাস ফিসফাস, গুজগুজ, গুজগুজ, ধমক থেকে হাল্কা হাসি-মস্করা পর্যন্ত!! এটা-কী কোন রাজনের বন-দুর্গ (চাণক্য)!!
অন্ধের পোড়া-চোখ, চোরাচোখে চোখ পাতলাম, চোরা কান-ও,
(বিউগল ও হাল্কা ডঙ্কা-ধ্বনির মধ্য দিয়ে পর্দা উঠে যাবে, দরবারে রাজা প্রবেশ করে আসন গ্রহণ করবেন,
এর আগেই মন্ত্রী-ফন্ত্রী সহ-পরিষদ ও গুটি-কয়েক ভাঁড় থাকবে অপেক্ষমাণ।)
রাজা--------
এ-এক দুর্বিষহ জ্বালার যন্ত্রণা, নেই দিন-রাত রাত-দিন, সকাল-সন্ধ্যা থেকে শেষ
রাত অব্দি, গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীত-বসন্ত, পাহাড়-পর্বত গিরি-খাদ, ঝর্ণা নদী সমুদ্র থেকে অরণ্য,
স্বর্গ-মর্ত থেকে পাতালও বাদ যাচ্ছে না, ডাইনি থেকে জিউস রাজ্যেও অগাধ যাতায়াত,
ভাগ্যিস তল-কুঠুরি এখনো অক্ষত।
অফুরন্ত বিষয়, শেষহীন আলোচনা, শুধু কিলবিলে লেখা আর লেখা, ঘুমে-জাগরণে,
স্বপ্নেও, মন্তব্য-প্রতিমন্তব্যেও কী কী সব আউল-ফাউল লিখে দ্যায় যখন-তখন। আর সহ্য হচ্ছে-না,
বিহিত করা দরকার। রাজ্যে অরাজকতা ছড়িয়ে পড়ছে, ছোঁয়াচে ছোঁয়াচে, সব কুবি ও ল্যাখক হয়ে যাচ্ছে।
জাতীয় দুর্দিন আসন্ন।
সভাসদ বৃন্দ----
বিহিত করা দরকার, বিহিত করা দরকার (তাল-ছন্দ সহকারে)
রাজা-------
কী করা যায় এর-থেকে মুক্তি পেতে?? শক্ত হাতে দমন করা দরকার।
বলুন আপনারা আপনাদের মতামত এবার।
পোটকা মন্ত্রী-------
মুণ্ডিত মাথায় পচা-ঘোল/পচা-ডিম মেখে ঢোল-সহরত করে ঘোরানো শেষে বাঁশ-ডলা সহ
মাইঙ্কা চিপার ব্যবস্থাই উত্তম।
রাজা--------------
খামোশ।
ঢ্যাংগা বড় মন্ত্রী---------
রজম বা শিরচ্ছেদ সব থেকে ভাল ব্যবস্থা, তবে শূলা-শূলীও করা যেতে পারে।
রাজা---- চোপড়াও, কমবখত।
(রাজা এবার ম্লান-মুখে কবি তাদেউশ রোজেভিচ এর ভ্রম সংশোধন কবিতাটি আবৃত্তি করবেন)
মৃত্যু পদ্যের একটি পংক্তিতেও
সংশোধন করবে না,
সে কোন ভ্রম সংশোধক নয়
নয় কোন দরদি
সম্পাদিকা;
একজন বিরক্তিকর লোক মৃত্যুর পরেও বিরক্তিকর,
একজন আহাম্মক কবরের ওপার থেকেও
চালিয়ে যায় তার বকবকানি।
(সভার সকলে মিলে কান্নার রোল ফেলে হুহু করে কাঁদতেই থাকবে,
একটু পরে রাজার হাতের ইশারায় কান্না বন্ধ হবে)
রাজা...............
সে-তো আমাদেরই লোক। বরং তাঁকে আমরা সুকঠিন আদর-সোহাগ সহ তীব্র চুম্মা-চাট্টি
দিয়ে ঠাণ্ডা করে রাখতে পারি, আপনারা কী বলেন? {এ-রাজ্যেও স্বজনপ্রীতি, আমারা করলেই দুষ!!}
(হাহা হি হি শব্দ চলবে কিছুক্ষণ, হঠাৎ রাজার চিৎকার )
রাজা-------
শাস্ত্রীইইইইইইইইইইইইইইই, পাকড়াও।
(নাকারা বাজবে, ঢোল বাজতে থাকিব, ডুম ডুম ডুম হাল্কা দ্রুত লয়ে, পর্দা নামবে )।।
(খুব মৃদু লয়ে ঢোল বাজার সাথে সাথে স্বল্প-আলোতে একটি দেয়াল দেখা যাবে,
দেয়ালের দিকে মুখ করে একটি চোখ-বাধা আলুথালু উদভ্রান্ত যুবক (প্র-হে-লি-কা) দাঁড়িয়ে থাকবে,
হাতড়ে হাতড়ে দেয়াল হাতাবে, দেয়ালে পিঠ লাগিয়ে হেলান দিয়ে দাঁড়াবে,
শেষে দেয়াল ঘেঁষে চিৎ/উপুড় হয়ে শুয়ে থাকবে, এখন ব্যাকগ্রাউন্ডে গান বাজবে........
মধু হই হই বিষ খাওয়াইলা, নিজে ন’খাইলা........
একটু পর......
গান ও ঢোল থামবে, রাজার সামনে বন্দী হাজির, শাস্ত্রী পরিবেষ্টিত,
পা-হড়কানো রুগ্ন বলদের মত কাঁপা-কাঁপা হাঁটুতে করজোড়ে আর্জি)
বন্দী...............
রাজাজী-হুজুর-আব্বা-আম্মা-বাবু-বাবাই-আম্মুউউউউউউউ
আমি কলা খাই-না, খাই-নি, খামুও-না!! পরকালেও-না!!
(রাজা হাত দিয়ে হাসি আড়াল করবে, পর্দা নেমে যাবে।)
রাজবন্দী ভদ্রোচিত পোশাকে চোখ-হাসি নিয়ে দাঁড়াবে, এক-ঝাঁক পরী আস্তে আস্তে চারদিক দিয়ে
ঘিরে ডানা দিয়ে ঢেকে ফেলবে নাচের তালে তালে। সরু স্পট-লাইট ঝলমলে ডানায় ঘুরে বেড়াবে।
অরণ্য-সবুজ রঙের পর্দায় ফুল আঁকা থাকবে সাথে অনেক উড়ন্ত মৌমাছি, এই পর্দাটি আস্তে আস্তে নামবে,
আলো কমতে থাকবে, সাথে একটি গান বাজতে থাকবে।
আগের জনম গেল বৃথা.................. ।।
*************************************************************
দুর্বলতম অ-বৈজ্ঞানিক কারণে দু’টি ডাইনি দৃশ্য কাটছাঁট করা হলো।
অবশ্য আপনারা নিজ উদ্যোগে নাটুয়া না হয়েও নাটিকাটির সেই দৃশ্য সমেত উপভোগ করতে পারেন!!
৩০টি মন্তব্য
প্রহেলিকা
শেষ থেকে শুরুঃ
কাটাকুটি চলবে না। ডাইনী দৃশ্যতো আলবৎ লাগবে। নাট্যকার পাবো কই এই তল্লাটে। ফাঁকিবাজি বন্ধ করেন।
শুরু থেকে শুরুঃ
যা মাঝে মাঝে আবজাব ল্যাহা ল্যাহি কইরা ভাবসাব বাড়াতে চাইছিলাম সেখানেও আপনার দরবার-ফরবারের ভয় না দেখালে কি চলতো না? কুবি সাজতে গিয়ে যদি এই নাজেহাল অবস্থায় পড়তে হয় তাহলে কবিতা বাদ। তা নাট্যকারের সংখ্যাও যদি এই কবিদের মতোই হয় তাহলে রাজা কি শাস্তি দিতে পারে তাই ভাবছি। তবে এটা সত্য মৃত্যুর পরেও থামানো যাবে না।
যাক পরে চুম্মা-চাটির দৃশ্যাবতরনের পর শান্তি শান্তি লাগছে। ল্যাহাল্যাহি চালু থাকবে।
চুক্তি হইছিল নাটকে পার্ট দেয়া হবে। ভুইলা গেলেন না’তো আবার! না মানে প্র-হে-লি-কা এই পার্টটা প্রহেলিকাকে দেয়া যায় তাই বলছিলাম আর কি।
ল্যাখা কিন্তু সেই পর্যায়ের ভাল হয়েছে।
ছাইরাছ হেলাল
ডাইনি পর্ব আপাতত বাদ,
অনেক বড়-সড় হয়ে যাবে, পরে ভাবা যাবে এটি নিয়ে।
আপনি কবি মানুষ আপনার কাজ-কাম নিজ গুনে চালু রাখবেন, সমস্যা নেই!!
প্রকৃত কবিরাই কবি, তাদের চিন্তার কিচ্ছু নেই।
আব্জাব ল্যাখকরা অক্কা পায়, আর কবিরা অমর-অজর, তাই তারা চালিয়েই যেতে থাকে, ওপাড় থেকেও।
প্রহেলিকার পার্ট আরেকজন আন্ধারে দিছি, তার খুপ দেয়াল সখ্যতা, দেয়ালই শেষ ঠিকানা,
এই ল্যাহা ভাল হইছে কইয়া পার্ট লওয়া ঠিক না।
প্রহেলিকা
পার্ট টার্ট নেইনি সোজাসাপ্টা করে বলে দেয়া যাকে বলে। বলে দিলাম। প্রথম মন্তব্যকারী কিন্তু আমি আন্ধারে দেয়া গেলেও ফিরিয়ে নেন। মাঝেমাঝে ফিরিয়ে নেয়া ভালো। কথা রাখতেই হবে এমন কোনো কথা আছে নাকি।
কবি বলে কবিদের হাসাইয়েন না। জীবনবাবু এমনিতেই ক্ষেপে আছে।
ছাইরাছ হেলাল
কবিরা অ-কবিদের নিয়ে হাসতেই পারে, হাসুন, অসুবিধা নেই।
বুঝলাম না, আপনি-ই কি দেয়ালি মানুষ নাকি!! ইট দেয়াল, স্লিপ দেয়াল, থিঙ্ক দেয়াল!!
তা হলে কিন্তু ভয় আছে।
নাটিকা নিয়ে মকশো করলাম মাত্র এই প্রথম, এটি খুব কঠিন একটি বিষয়,
প্রহেলিকা
হায় হায় দেয়ালের এতো প্রকারভেদ পাইলেন কোথায় ? আসলে লেখকদের সাথে কথা বলে পারা মুশকিল।
কঠিন বিষয় কঠিন থাকবে না আর পানির মতো সহজ হয়ে যাবে এবার। আমরা আশাবাদী।
ছাইরাছ হেলাল
দেয়ালে কপাল ঠুকে আলু তুলবেন আর আমরা বললেই হায় হায় করবেন
তা কিন্তু ঠিক না,
অনেক কম জানাশোনা নিয়ে নাটকের মত এত উৎকৃষ্ট বিষয় নাড়াচাড়া করা ঠিক না।
প্রহেলিকা
আজকেই কোথাও বলেছিলাম একটি কথা আবারো আপনাকেই বলছিঃ
বৃহৎ যা কিছু আছে আজ এই ধরায়, শুরুটা হয়েছিল নিদারুন খরায়।
এবার তাহলে একমত হোন যে নাড়াচাড়া করা ঠিক। ঠিক ঠিক।
ছাইরাছ হেলাল
নাড়াচাড়া নাড়ানাড়ি করতে সমস্যা নেই, তবে খুব সাবধানে এবং যথেষ্ঠ প্রস্তুতি নিয়েই।
আটঘাট বেঁধেই নামা উচিৎ।
নীহারিকা
মনে হলো পড়ে পড়ে নাটক দেখে ফেললাম।
আপনি পারেনও …… 🙂
ছাইরাছ হেলাল
বাহ্, দেখার কাজ সেরে ফেলেছেন!!
নিজে কিছুই করত-পারলাম-না।
নীহারিকা
বড়ই আফসোস!
ছাইরাছ হেলাল
আপনি-ই বুঝলেন শুধু।
মেহেরী তাজ
সেন্সরবোর্ড লাগবেই লাগবে। একটু অংশ কেটে কেটে কুচিকুচি আবার একটু কিছু সংযোজন(আপনি যে অংশ কেটে বাদ দিতে চাইছিলেন সেটা।)।
ছাইরাছ হেলাল
ডাইনি পর্ব বাদ দিয়ে দিতেই হয়েছে, ওরা একটু ইয়ে মতন হয়,
ডাইনিদের নিয়ে অন্যকিছু লিখব হয়ত,
লেখা চাই-ই।
ব্লগার সজীব
রাজা বলেন এদেশে সব কবি হয়ে যাচ্ছে, তার কথা আদেশ বুঝতে হলে কবি তো হতেই হবে।জনগন কবি না হলে রাজার কথা বুঝতে পারবে?বন্দী যে সব কলাই খেয়েছে এতে রাজার হাসিরইবা কি আছে?পাত্র পাত্রী নিয়ে কি যে লিখলেন,মনে পড়ছে আবার পড়ছে না। রাজ্য থেকে পলায়ন লাগপে 🙁
ছাইরাছ হেলাল
রাজার ভাব-সাব ও ভাল মনে হচ্ছে না, সে যে ভাবে আবৃত্তি করে ফেলল তাতে আরও
সমস্যার কথাই মনে করিয়ে দেয়।
এমন মজার রাজ্য থেকে পালানো ঠিক না, ঠিক না।
মিষ্টি জিন
ভালই নাটক লিখেছেন। শাস্তি হিসাবে বাশ ডলা মাইনকা চিপা খারাপ না , তবে কেমনে এই শাস্তি প্রয়োগ হয় তা দেখতে মুন্চায়।! হা হা হা হা
ডাইনি বেগম কে বাদ দিলেন কেনু ? দুস্ক পাইছি।
এন্টেনাটা যে কই গেল???
ছাইরাছ হেলাল
ডাইনি বাদ না দিলে কী না কী বলে বসবে তার ঠিক নেই।
আমারও দেখতে মুঞ্চায় কেমনে চিপায় পড়ে চিক্কুর দেয়।
অ্যান্টেনা লাগিয়ে নিন।
নীলাঞ্জনা নীলা
যাক আমাদের কুবিরাজ ভাই “একান্ত অনুভূতি” ছেড়ে “সাহিত্য” জগতে এলেন। সুস্বাগতম!
সাহিত্যের অনেক ভাগ আছে আমাদের সোনেলায়, কিন্তু এই প্রথম নাটক পড়লাম এই সোনেলায়। নাট্যকার ছাইরাছ হেলাল আপনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা। -{@
নাটক জব্বর হইছে। সোনেলার বর্ষবরণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবেনা? হলে এই নাটকটা মঞ্চস্থ করলে মন্দ হয়না।
এত্তো পরশংসা পাইয়া কি ঘাবড়াইয়া গেছেন? ডরান খাওয়া স্বাস্থ্যের লক্ষ্মণ। 😀
ছাইরাছ হেলাল
ধুর এগুলাইন সাহিত্য-ফাহিত্য কিচ্ছু না, নাটুক-ফাটুকও না,
মুন চাইল তাই আবর্জনা তৈরি করলাম।
নাহ্, আপনার গুণগান করা শুন্র ঘাবড়ানোর কিছু নেই, এতো মধুবর্ষী!!
আরও একটু ঢালুন,
নীলাঞ্জনা নীলা
বেশি মধু কিন্তু ভালো না।
তাই সাবধান। 😀
ছাইরাছ হেলাল
মধু মধুই!!
শুন্য শুন্যালয়
হা হা হা এইসব কী লিখছেন? 😀 সম্পাদিকা ততোটা দরদী নয় যে বিনা পয়সায় এইসব খাজুড়া নাটিকা সম্পাদাইবে 🙂
দেখুন নাচের অংশটি পরী বাদ দিয়ে ডাইনী নৃত্য দিলেই পারতেন। কাঁটছাঁট করলে কী আর নাটিকা চলবে?
চোখ বান্ধা লোক দেয়াল হাঁতড়াইতাছে শুইন্যা প্র-হে-লি-কার পাশাপাশি নাট্যকারের কথাও মনে পড়লো। দেয়ালের সাথে কথা বলার হিস্ট্রি তো তার ও আছে। দুইজনে মাথা ঠুইক্যা না গেলেই হয়।
আহা মধু হই হই মৌমাছিই খাইয়া ফালাইলা। :D)
ছাইরাছ হেলাল
কী সব লিখি মানে, আমি-তো এমুন-ই লিখক!!
খাজুড়া কওন ঠিক না, ইহা পৃথিবীর অন্যতম বিখ্যাত নাটিকা!!
আর সম্পাদকদের কাম-ই হইল অন্যের জিনিষ ঘাটাঘাটি করা,
ডাইনির অংশতো বাদ দিলাম, যদিও ওরাই একান্ত আপনজন।
নাহ্ আমাদের মাথা ঠুকাঠুকি হপে না।
আপনার তো মাছি-মুছি কিচ্ছু নাই, তাই মধু-ফধুর ব্যাপারটা বোঝতারবেন না।
তয় প্রজাপতি খুব বোঝেন দেখতেই পাচ্ছি।
ইঞ্জা
পুরাই যেন নাটক দেখলাম, খুব খুব ভালো লিখলেন ভাইজান, বিমোহিত হলাম। 😀
ছাইরাছ হেলাল
ধুর, কিসের মধ্যে কী!!
পড়েছেন এতেই অনেক ধন্যবাদ।
ইঞ্জা
শুভকামনা
ছাইরাছ হেলাল
আপনাকেও,
চাটিগাঁ থেকে বাহার
আমার পরানডা এখনও ধুক ধুক করতেছে।
মসে হচ্ছে যেন শিশু পার্কের ট্রেনটি ভুতের গলিতে ঢুকে পড়েছে।
ছাইরাছ হেলাল
ভয়ের কিচ্ছু নেই,
ভুতের গলিও গলি!!