আস্তিকতা বনাম নাস্তিকতা

আতা স্বপন ৬ এপ্রিল ২০২০, সোমবার, ১১:৫০:৫৫পূর্বাহ্ন বিবিধ ১৩ মন্তব্য

১.
আমার অনেক নাস্কিক বন্ধু আছে। এরা মাঝে মাঝে এমন ভাব নেয় যেন মহাজ্ঞানী এরিষ্টেটল। আর এমন সব প্রশ্ন করার চেষ্টা করে -ভাব খানা এমন তোরে আজকা পাইছি টাইপ। এমন একজন আমাকে বলল আচ্ছা তুই ধর্ম কেন মানিস? ধর্ম না মানলেইতো ভাল। স্বাধীন জীবন লিড করা যায়। ধর্ম মানলেই যত গেনজাম। বিশ্ব আজ ধর্মিয় উগ্রতার স্বিকার।
আমি বললাম তোর কথা শেষ? নাকি আরো কিছু বলবি?
না আগে এইটাই বল তুই ধর্ম মানিস কেন?
আমি বললাম, তার আগে তোকে একটা প্রশ্ন করি। তুই জামা কাপর পরিস কেন?
কেন আবার! আমিতো আর জংগলি না। মানুষ। আমার শরম আছে । লজ্জা আছে। তাই পরি।
জামা না পরলেইতো ভাল। জামা পরাতেতো যত গেনজাম। জামা না পরলে এর খচরটা বেচে যেত। স্কুল কলেজ অপিস আদালতে কোন ড্রেস কোড থাকত না। সবাই এক নেংটো বাবা ।

কি সব পাগলের মত কথা বলছিস!
ওমা আমি বললাম বুঝি। তুইতো বললি।
আমিতো বলছি ধর্মের কথা।
এইতো । আমার ধর্ম আমার পোষাক। ধর্ম ছাড়া আমাকে নেংটো লাগে। তাই আমি ধর্ম মানি। ধর্ম মানাতে গেনজাম না। ধর্ম কে ব্যাবহারে গেনজাম।
মানে?
খুবই সহজ। জামা না পড়লে সভ্য মানুষ অস্বস্থিতে পড়ে ঠিকই। তাই বলে এখন যদি কেউ লুংগি পড়ে অফিসে যায় অফিসে ঢুকতে পারবে? পারবে নাতো । কেন ড্রেস কোড মানা হয়নি। কিন্তু সে বলে আমি এটাই পড়ে অফিস করব দেখি কোন মা কা লাল আমারে বাধা দেয়? অফিসের বস তাকে অফিস থেকে বের করে দিল। এখন সে যদি বলে, শালা এই কাপরই পরুম না। নেংটাই ভাল। কোন গেনজাম নাই। কাজটা কি ঠিক হবে? এর জন্য কি জামা দায়ি?
সোজা কথা ! জামা দায়ি হবে কেন? ঐ উল্লুকে পাঠাই দায়ি। যে ড্রেসকোড মানে নি।
আমিওতো তাই বলছি । ধর্ম আমার পোষাক । তাই আমি এটা মানি। তার একটা কোড আছে। এর ব্যবাহার উল্টা পাল্টা করা যাবে না । কোড মেনে করতে হবে। না মানলেই যত গেনজাম। এবার বল এর জন্য দায়ি কে? ধর্ম নিশ্চয় নয়।

২.
নাস্তিক বন্ধুটি এবার বলল আচ্ছা ভাল কথা তুই ধর্ম মানিস । কিন্তু ইসলামই কেন? আরোত ধর্ম আছে?
এইতো তুই আস্তে আস্তে আস্তিক হইবার ছবক নিচ্ছিস। শুন তুই মাছ বাজরে গেলি। বাজারেতো অনেক মাছ তুই কোন মাছটা কিনবি?
কেন ভাল আর তরতাজা মাছটা।
আমিও তাই করেছি ধর্মের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ ধর্মটা গ্রহন করেছি।
তোর ধর্মই যে শ্রেষ্ঠ বুঝলি কি করে?
গুড বয়! ভাল কথা। তা তুই ভাল মাছ চিনবি কি কইরা?
যাচাই বাছাই করতে হবে। টিপে টুপে দেখতে হবে।
আমিও তাই করেছি। মাছ যদি যাচই কইরা কিনা লাগে ধর্ম গ্রহান করব যাচই করব না। এখন বলতে পারিস কিভাবে যাচাই করলাম? তুই বলেছিস মাছ টিপে টুপে দেখে ভাল মাছ নির্বাচন করবি। আমাকেও তাই সকল ধর্মের মুল জিনিসগুলো দেখতে হবে। তা নিযে একটু জানাতে হবে।
তুই কি জানিস?
তেমন না। তবে কিছু ধারনা আছে। দেখ আমাদের ধর্মে মহান আল্লাহ বলেছেন, এসো সেই কথায় যা আমাদের আর তোমাদের মধ্যে এক। এর প্রধান হল আল্লাহ ছারা কোন মাবুদ নাই। তুই যদি এখন অন্য প্রধানধর্ম গুলাতে এই জিনিসি খুজিস। তা পাবি। খ্রিষ্টান ধর্মে আছে, হিন্দু ধর্মে আছে। যে মহান ইশ্বর এক। কিন্তু ঐ ধর্মের অনুসারীরা কি এটা মানছে? কেউ মানছে তিনজন স্রষ্টা । কেউ মানছে একাধিক স্রষ্টা। সৃষ্টিও তাদের স্রষ্টা। অথচ ইসলাম ধর্মের অনুসারিরা মহান আল্লাহর ঐ কথা মেনে একস্রষ্টার ইবাদত করে। এখন বল যে সঠিক জিনিস মানে যা সকল ধর্মেরই জিস্ট। সে কি ভুল হতে পারে। এই কথা স্বীকার করলেই একজন মুসলিম হওয়া যাবে। এখন মুসলিম যদি এক আল্লাহ স্বীকার করে তবেতো প্রকারান্তরে সেতো খ্রিষ্টান আর হিন্দু ধর্ম দুটোর ধর্মীয় আইনি মানছে। যা ঐ ধর্মের অনুসারির দাবিদাররাও মানে না। কাজেই আমার ধর্ম নির্বাচন ১০০% সঠিক ৯৯% ও নয়। পুরোটা। তাই আমি মুসলিম। আমার ধর্ম ইসলাম।
আচ্ছা বুঝলাম কিন্তু আল্লাহ যে এক এইটা তোর ধর্ম বিশ্বাস আছে তুই মানছিস। কিন্তু আমরাতো মানব না। তুই প্রমান করতে পারবি আল্লাহ এক?
আচ্ছা বলতো তোর বাপ কয় জন?
এইটা কোন ধরনের প্রশ্ন? ফাইজলামি করস।
আরে না! বল না!
কেন একজন। আমর ও তোরও সবার বাপই একজন।
ভাল কথা! কি কইরা বুঝলি?
এটাতো সাধারণ কথা। শালা খালি ফাউল কথা। আচ্ছা আমি যদি বিয়ে করি আমার সন্তানের পিতা আমি না হয়ে আর কে হবে?
আরে এতো চটছিস কেন? তুই বিয়ে করলে তোর সন্তানের পিতা কে এটা বলতে পারে তোর বউ। সে সর্বশেষ কার সাথে ছিল সেইতো জানে।
না আমি আমার বউকে বিশ্বাস করি। সে এমন ধারার নয়। আর যদি এমন হতো একদিন না একদিন আমি ধরতে পারতাম। আমার চোখে ধরা পরত।
এইতো লাইনে আইছো চান্দু। এতো সিরিয়াস ভাবে নিস না । বুঝানোর জন্য বলছি। মহান আল্লাহ এক । এক যদি না হতো এক দিন না একদিন কেউ না কেউ এতে অসংগতি ধরতে পারতো। এর দাবিদার থাকতো অনেক। কেউ বলত এখন দিন । কেউ বলত এখন রাত। মহা গেনজাম লেগে যেত। কোন কোন গেনজাম কি দেখা গেছে? আসল হল বিশ্বাস পরে হল যু্ক্তি। তুই তোর বউকে আগে বিশ্বাস করেছিস। যেহেতু তুই কোন অসংগতি দেখিসনি তাই তোর বিশ্বাস ঠিক ধরে নিয়েছিস। কিন্তু যদি দেখতি তখন আসতো যুক্তি দিয়ে তা প্রমান করার কথা। আল্লাহ এক এটা সর্বপ্রথম আমার বিশ্বাস। মুসলমানের বিশ্বাস ই সব যুক্তি প্রমান দরকার হয় না। হ্যা শুধুমাত্র নাস্তিককে টাইট দিতে একটু যুক্তি প্রয়োগ করতে হয় মাঝে মাঝে । এই আরকি।

৩.
একবার এক নাস্কিক বন্ধু আমায় মহানবী সা: বহু বিয়ে নিয়ে জিজ্ঞেস করল। আচ্ছা তোর ধর্মগুরু মুহাম্মদ সা. তিনি বহু বিবাহ করলেন কেন? আবার তার মধ্যে একজন শিশু (কথাগুলো সে একটু ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ করে বলেছিল। মহানবী সা. এর সম্মান রক্ষায় সেভাবে প্রশ্নটি করলাম না।) ।
তোর প্রশ্নের জবাব দেব। তার আগে তোকে ক্ষমা চাইতে হবে। তুই বিশ্বাস করিস আর না করিস ওনি আমার নবী। ইসলামের নবী। তাকে এভাবে তুচ্ছ তাচ্ছিল করা তো একদম ঠিক হয় নাই। নিজেকে এতো পারফেক্ট ভাবিস কেন? তোর ভাবনাই ঠিক এমন ভাবছিস কেন? কোন জিনিস পুরোপুরি না জেনে এভাবে সার দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ মানুষ সম্পর্কে ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ করা তোর মোটেই ঠিক হয় নাই। তুই ক্ষমা না চাইলে তোর উত্তরও দিবনা আর তোর সাথে আমার সম্পর্কও শেষ।
সরি সরি! তুই এতটা দু:খ পাবি ভাবিনি। যা ক্ষমা চাইলাম।
ধর্ম খুবই সেনসেটিভ বিষয়। এই নিয়ে কখনো হাসি ঠাট্টা করবি না। তোর কনফিউশন থাকতে পারে। তাই বলে তাকে খাটো করার অধিকার তোর নাই।
ক্ষমাতো চাইলাম ! আর কেন? এবার উত্তরটা শুনি।
আচ্ছা তুই বিছানায় প্রতিদিন প্রসাব করিস কেন?
কি বলছিস এসব! আমি বিছানায় ......প্রতিদিন.....। এই তুই কি পাগল হইয়া গেলি নাকি।
পাগল হই নাই। তুই ছোট বেলায় প্রতিদিন বিছানায় প্রসাব করতি না?
সেইটা বল। শালা! কয় কিনা আমি প্রতিদিন....। ছোটবেলায় সবাই ঐরকম ই করে। কেন তুই করিস নাই। কি জিজ্ঞেস করলাম আর কি পেচাল শুরু করল।
সেইতো। ছোটবেলায়। তখন বিছানায় প্রসাব করলে কেউ কিছু মনে করত না। এটাই স্বাভাবিক ছিল। কি বলিস ? তাইতো!
হ্যা ঠিক তাই।

আচ্ছা ! এবার তাহলে মহানবীর বহু বিয়ের উত্তরে আসি। সে সময়টা ছিল আইমে জাহেলিয়াতের যুগ। যাকে বলে অজ্ঞতার যুগ। তখন নারীদের সমাজে কোন দাম ছিল না। তাদের ভোগের বস্তু মনে করা হত। তাই কারো কন্যা সন্তান হলে সে হিনমন্যতায় ভুগতো। আর এ পরিনামে মেয়েটিকে জিবন্ত কবর দেয়া হতো। একটা গৃহ পালিত পশুর ও মূল্যছিল। মেয়েদের তাও ছিল না। সম্পত্তির অধিকার ছিল না। চাইলে যেখানে মেয়েদের ভোগ করে যেত সেখানে বিয়ের সম্মান পাওয়া মেয়ে কমই ছিল। বহু বিয়েতো কি তখন বিয়ে ছাড়াই বহু মেয়ের সাথে সম্পর্ক করা যেত। মোট কথা মেয়েদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের জিন্দেগী ছিল। তাইতো ?
তাতো ঠিকই।
সেই সময় আল্লাহর রহমত হয়ে সেই নারকিয় ভুমিতে আর্বিভুত হলেন আমার নবী সা.। শান্তীর ধর্ম ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে অজ্ঞতা যুগের অবসান ঘটালেন। মেয়েদের সম্মানিত করলেন। বললেন মায়ের পায়ের তলে সন্তানের বেহেশত। যার তিনটি কন্যা আর সে যদি তাদের ইলম শিক্ষা দিয়ে ভাল বিয়ে দেয় সে জান্নাতি। তার উপর নাযিলকৃত পবিত্র আল কুরআনে সুরা নিসায় মেয়েদের সম্পদের অধিকার দেয়া হয়েছে। মেয়েদের নিয়ে একটি সুরা নায়িল কত বড় ঘটনা। সুরা নিসা তার প্রমান। মহানবী সেই সময় বহু বিবাহ করেন। যেখানে তিনি ইচ্ছা করলে বিয়ে ছাড়াই শত শত নারী ভোগ করতে পাড়তেন। আর শিশু বিয়ের কথা। এটা তখনকার রেওয়াজ ছিল। কন্যার বাবা মা চাইলে তা করা যেত। তিনি তাই করেছেন। একটা কন্যাশিশুকে যে সময় জীবন্ত কবর দেযা হতো তখনকার সময় তাকে বিয়ে করায় তেমন ভুল কিছু হয়নি। এটা সময়ের দাবি ছিল। আর এটাই তখনকার স্বাভাবিক পরিবেশ। আর আমারা মুসলমানরা আল্লাহর ইচ্ছার উপর চলি। তিনি যা করান তাই মানি। উনি চেয়েছেন বলেই নবী বিয়েগুলো করেছেন। পবিত্র আলকুরআনে আল্লাহ এর অনুমতি দিয়েছেন নবী সা. কে। হ্যা তোর মত মাথামোটা কিছু বলবে যে, নবী কুরআন রচনা করে নিজে সুবীধা নিয়েছেন । নাউজুবিল্লাহ। আসলেই কি তাই। যেখানে চাইলেই যেকোন মেয়েকে নবী এমনই ভোগ করতে পারতেন সেখানে তার আয়াত রচান করে সুবীধা নেয়ার যুক্তিকতা কোথায়? এমন করে তারা যাদের চরিত্রের ঠিক নাই তারা । নিজেকে সাধু প্রমানের জন্য। আমার নবী ছিলেন সর্বজন কতৃক স্বীকৃত একজন চরিত্রবান মানুষ। ওনার শক্রও ওনার চরিত্র সম্পর্কে প্রশ্ন তোলেনি কখনো। তারত চরিত্র প্রমান দেবার কিছু নাই।

মোট কথা ছোটবেলায় তোর প্রসাব করাটা যেমন স্বাভাবিক ছিল সে সময় বিবেচনায়, যা এখন তোর কাছে অস্বস্থীর, বললেই লজ্জা লাগে। মহানবীর বহুবিয়ে সেই বিবেচনায় সে সময়ে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট একটি বিষয় ছিল। যা বর্তমানে অনেকের চুলকানির কারন। তবে এটা ঠিক ওনি একটি বিয়েও নিজের খায়েসের জন্য করেন নি। তার প্রত্যেকটি বিয়ে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় তার কুমারী স্ত্রী ছিল শুধু একজন । বাকি গুলো তাদের ইচ্ছায় বা বিপদে সাহায্য করার জন্য করেছেন। এদের মধ্যে যুদ্ধে নিহতদের স্ত্রীই ছিল বেশী। এখনকার জমানায় বসে নবী বহু বিয়ে নিয়ে কথা বলা তেমনি বোকামী যেমন তোর ছোট বেলায় বিছানায় প্র্রসাব করা বিষয়ে বলাটা। একটা কাজের সমালোচনার আগে তার সময়কাল ও অবস্থাটা জানতে হবে। গভীরভাবে ভাবতে হবে। মহানবীর বেলায়তো বারংবার ভাবতে হবে। তার শানে বেয়াদবি করার পরিনাম খুবই খারাপ। বড় পাপ।
একটা গল্প বলি , একটা লোকএর একটা টায়ার দরকার। কিন্তু তাকে দেয়া হলো একটি গাড়ি। সেকি টায়ার নিবে না গাড়ি? বলতো দেখি?
কেন !সহজ উত্তর! গাড়িই নিবে।
তেমনটা্ই তো হবার কথা ছিল। তা হয় নি। মহানবী সা: কিন্তু ভোগবিলাসের সুযোগ পেয়েও কষ্টের জীবন বেছে নিযেছিলেন। তায়েফের ময়দানে রক্তাক্ত নবী তার প্রমান। যেখানে তাকে অফার করা হয়েছিল আরবের সবচেয়ে সুন্দরী কুমারীদের। সেখানে তিনি গ্রহন করেছেন বিধবাদের। আর বিযের পবিত্র বন্ধনে বেধে। ইচ্ছা করলেই এমনিতেই ভোগ করতে পারতেন। সেই যুগটাই এমন ছিল। কিন্তু তিনি করেন নি। যুগের সুযোগ কে কাজে না লাগিয়ে। যুগটিকেই পরিবর্তন করে দিলেন। নাস্তিকদের আল্লাহ সুম্মুন বুকমুন করে দিয়েছেন । তাদের অন্তর সিল গালা করে দিয়েছেন তাই তারা এ্ই সত্য বুঝতে পারে না। নবী সা. সম্পর্কে মিথ্যা বলে। নবীর বহু বিবাহ নিয়ে অনেক মুসলমানও দেখা যায় ফয়াদা নিতে চায়। ভুল ব্যাখা করে। তারা নবী সুন্নত বলে বহু বিবাহ করে। এইটুকুই। কিন্তু নবী স্ত্রীদের যে অধিকার দিয়েছেন তাকে সুন্নত মানে না। স্ত্রীদের সাথে দুব্যবহার করে। তাদের অধিকার ঠিক ভাবে আদায় করে না। শুধু ভোগের জন্যই নবীর সুন্নতকে ঢাল বানায়। এরা আসলেই সুবীধাবাদি। মুনাফেক। এদের সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। এদের দিয়ে ইসলাম ধর্ম বিচার করা ঠিক হবে না।

৪.

নাস্তিকদের মধ্যে ইদানিং নারীর অধিকার নিয়ে বেশী বেশী চুলকানী। অথচ তারাই নারীর অধিকার বেশী লংঘন করছে। নারী স্বাধীনতার কথা বলে তাদের কৌশলে ভোগ করছে। কৌশলে তাদের বস্র হরন করে উলংগ করছে মায়ের জাতিকে। তাদের বাজেরের পন্য বানিয়ে ছেরেছে।
আমার এক নাস্কিত বন্ধু বলল, বিশ্বে ধর্মের সৃষ্টি হয়েছে নারীকে শোষনের জন্য। এমন কোন ধর্ম দেখলাম না যেখানে নারীর তার যোগ্য সম্মান পেয়েছে। তুই এই যে বিয়ে করে বৌ কে ঘরে আনলি তারপর থেকে শুরু করলি তোর খবরদারি। এই সংসার কে আপন করে নাও। হাদিস শোনাস, স্বামীর আনুগত্য যে করে সে জান্নাত পাইবো। এইসব। স্বামীর আনুগত্য কেন তাকে করতে হবে? তার কি কোন স্বাধীনতা নাই? তার পার্সোনালিটি তে কেন আঘাত করতে হবে? তার কি কোন প্রাইভেসী থাকবে না। পুরুষ কে বৌএর আনুগত্য করতে হবে এমন হাদিস নাই কেন? পুরুষ আর নারী সবারই দুই হাত দুই পা । নাক মুখ চোখও একরকম। তবে নারীকে পুরুষের কেন আনুগত্য করতে হবে? আমারে বলতে পারবি নারীরে ইসলাম ধর্ম কেমনে সমান অধিকার দিল?
আছা আমাদের হাততো দুইটি! নাকি?
দুইটিই তো।
ঠিক কথা! একটা ডান হাত। একটা বাম হাত। দুই হাতরে কাজ কি এক?
না!
ভালো কথা! ডান হাত দিয়া করি?
কেন! ভাত খাই। বেশীর ভাগ লোক ডান হাতে লেখে।
ঠিক বলেছিস। এগুলোতো করে প্রায় সবাই। কিন্তু মুসলমানরা ডান হাত দিয়ে সকল ভাল কাজ করে। ডান হাতে দান করে। ডান হাতকে শুদ্ধ কাজের ক্ষেত্রে অগ্রগন্য করে। আর আল্লাহ ভালো লোকদের ডান হাতেই আমল নামা দেবেন। এবার বলতো বাম হাত দিয়া কি করি?
এই তুই কি হাতের উপর পিএইডি করবি নাকি? কি শুরু করলি?
আরে বাবা বল না? বাম হাত দিয়া কি করি?
যত খারাপ কিছু ধরি। ওয়াশরুমেতো এই হাতই কাজে লাগে। নোংরা আবর্জনা ধরি।
তাইতো! এই বার বলতো আমি যদি তোকে ডান হাত দিয়ে বাম হাতের কাজ করতে বলি তুই কি তা করবি?
ছি: ছি: মাথা খারাপ! যেই হাতে খাই ওই হাতে এই কাজ কবর কিভাবে। ঘৃন লাগবে না।
বাহ! নিজের বুজ পাগলেও বুঝে। তাইলে এইবার ভাব ডান হাত দেখতে হুবহু বাম হাতের মত । পাঁচটি আংগুল। অথচ কাজ ভিন্ন। ডান হাত ইচ্ছে করলে বাম হাতের কাজ করতে পারে? কি বলিসি? পারে না?
তা পারে। কিন্তু.............
কিন্তু কি? এইটা বলবিতো এই সব নোংরা কাজ ডান হাত দিয়ে পারতো পক্ষে না করাই ভাল। মহান আল্লাহ নারীকে সুন্দর আর কোমল করে গঠন প্রকৃতি দিয়েছেন। যা সবাইকে আকৃষ্ট করে। তার গঠন প্রকৃতি অনুযায়ী তাকে কাজও দিয়েছেন। এই কাজের মান ১০০। আবার পুরুষ কে দিয়েছেন তার গঠন প্রকৃতি অনুযায়ী কাজ । এর মানও ১০০। উভয়ই তাদের কাজের ক্ষেত্রে ১০০ মার্ক এর হকদার। পুরুষ আর নারী একই রকম কাজ করলেতো মানে ব্যালেন্স হয়তো আসতো কিন্তু দুনিয়ার নিয়মনীতি হত ব্যালেন্স ছাড়া। এতে নারী পুরুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য ব্যহত হত। তাই আল্লাহ ভিন্ন ভিন্ন দায় দায়িত্বে মান সমান করেছেন। কোথাও একটি কাজে পুরুষ মানে এগিয়ে আবার কোথাও নারী একটি কাজে মানে এগিয়ে। ডান হাত বাম হাতের কাজ করতে পারে ঠিকই কিন্তু করলে যেমন ঘৃন ঘৃন লাগে, দৃষ্টিকুটু লাগে। তেমনি নারী পুরুষের কাজ করতে পারে ঠিকই করলে ঘৃন ঘৃন লাগে। দৃষ্টিকুটু লাগে। সমাজ ব্যলেন্স ছাড়া হয়ে পড়ে। তাই তাকে তার বৈশিষ্ট্যমত কাজ দেযা হয়েছে। আর তাতে সেই শ্রেষ্ঠ। পুরুষ হাজারো চেষ্টা করলে মা হতে পারবে কি? মাযের পায়ের নিচে বেহেশত। পুরুষের কি সে যৌগ্যতা আছে?

বুঝলাম এই ভাবে বললেতো ঠিকই আছে। তবে নারীকে কেন পর্দা করতে হবে? পুরুষকে নয়?

এইটা একটা ভুল কথা। নারী পুরুষ উভয়েরই পর্দা করতে হবে। শুধু নারীর জন্য পর্দা নয়। তাইতো ইসলামে পুরুষের শরীর ঢাকার বিধান যেমন রয়েছে তেমনি নারীরও রযেছে। যাকে ছতর ঢাকা বলে। পুরুষের ছতর নাভির নীচ থেকে পায়ের টাকনু গীড়ার আগ পর্যন্ত। আর নারীদের মাথার চুল থেকে শুরু করে পাযের পাত পর্যন্ত। অবশ্য প্রয়োজনে মুখ ও হাতের কব্জি দেখানো যাবে। এটাই শরিয়তের বিধান। পর্দা করা উভয়ের জন্যই ফরজ।

দেখ এইখানে পুরষকে বলে নাভিথেকে আর নারীদের বলে পুরো শরীর। কেন বাবা এই বৈষম্য? তাছাড়া নারীকে পর্দা দিয়ে আবদ্ধ করে রাখা কেন?

দেখ বললামইতো নারীর বৈষষ্ট্যাটাই আকর্ষনীয় করে গঠিত। নারী যতই দেখতে কালো বা কুচ্ছিত হোক তার গঠন কিন্তু আকর্ষনীয় সবসময়ই। তাই তার গঠন প্রকৃতি যাতে দুষ্টের (কোরআনের ভাষায় যাদের অন্তরে রোগ আছে) তাদরে বদ নজরে যাতে না পরে তাই মহান সৃস্টিকর্তা আল্লাহ এই বিধান দিয়েছেন। পর্দা নারীর সম্মান রক্ষায়। হেফাজতের জন্য। যেমন ডান হাত দিয়ে যদি কখনো নোংরা কাজ করতেই হয় তখন তাতে গ্লাফস পড়ে নিলে জিবাণু আক্রমন করবে না। হাতটি হেফাজতে থাকবে। ঠিক তেমনই নারী যদি পুরুষের সমাজে বাধ্যহয়ে চলাফেরা উঠাবসা চাকুরী-বাকরী করতেই হয় এই নোংরা সমাজের জীবাণুগুলো থেকে বাঁচতে তাকেতো গ্লাফস পড়তেই হবে। তাই নয়কি?

যাই বলিস না কেন এতে নারীদের সম্মানের ছুতায় স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হচ্ছে। নারীকি নিজেকে রক্ষা করতে পারে না। পুরুষ থেকে নারীরা এখন অনেক এগিয়ে। শিক্ষা দিক্ষায়।

একদম ঠিক কথা। যদি নারী পুরুষের অবাধ মিলামশার মাধ্যমে সেই শিক্ষাকে কুলষিত করা হয় তার দাম কোথায়? ছেলে মেয়েরা আজ আধুনিক শিক্ষার নামে অবধা মেলামেশা আর নোংরমীতে মক্ত। হায়া বা লজ্জা বলে যে কিছু আছে দুনিয়ায় তা ভুলতে বসেছে। এই শিক্ষার কি মূল্য আছে? ওরাতো শিক্ষিত শয়তান।

তুইতো দেখছি বর্বর জাতির মত কথা বলছিস। শিক্ষাদিক্ষা করতে গেলে একটু আধটুতো মেলামেশা হবেই। তা কি দোষের?

আচ্ছা তোর বোন আছে? মা আছে?

আছে।

ভাল কথা। তোর বোনকে যদি তার বয় ফ্রেন্ড কিস করে আর তুই তা দেখেফেলিস । বা তোর মাকে যদি অন্যপুরষের সাথে দেখিস ঢলাঢলি করতে তখন তুই কি করবি?

ব্যাক্তিগত ভাবে জড়িয়ে প্রশ্ন করছিস কেন? এটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না?

দোস্ত! কুল ডাউন! এটা জাস্ট উদাহরন..........ডোন্ট মাইন্ড প্লিজ। বল তুই কি করবি?

এমন হলে অবশ্যই খুন করব শয়তানের বাচ্চাদের।

বাহ! একটু আগে আমি বর্বর হয়ে গেলাম তাদের যখন শিক্ষিত শয়তান বলেছি। আর তুই এখন তাদের খুন করতে চাচ্ছিস। কেন? নিজের সম্মানের উপরে আঘাত আসলো বলে? কেনরে ভাই দ্বিমুখী নিতী? শুন যারা এসব করছে বা যারা স্বিকার হচ্ছে তারা কারো মা। কারো বোন। কারো স্ত্রী। আমরা অন্যের মা বোন স্ত্রীদের যেভাবে দেখি নিজের বেলায় তা চাই না। আমরা আসলেই ভন্ড। এই আমাদের শিক্ষা। যারে বলে আধুনিক শিক্ষা। পুরুষরা যে নারীদের স্বাধীনতার নামে তাদের ভোগ করছে। তাদের অসম্মান করছে। তাদের বাজারে নামিয়েছে। মডেলিং করছে তাদের নিযে। সুন্দরী প্রতিযোগীতা করছে তাদের শরীর নিযে। তারা তাকে স্বাধীনতা ভাবছে। তারা বুঝতে পারছে না। এ কোন শিক্ষা তারা পেল যা তাদের জ্ঞান না দিয়ে অজ্ঞান করে ফেলল।

তাই বলে কি নারীরা শিক্ষা গ্রহন করবে না? আর তারাতো পোষাক পড়েই। নেংটো হয়েতো যায় না?

ইসলাম নারী পুরুষ উভয়কেই শিক্ষায় উৎসাহিত করে আর তা হল নৈতিক শিক্ষা। যা মানুষকে নম্র ও ভদ্র করে। মানুষকে মানুষ হিসেবে চলতে শিখায়। পুশু হিসেবে নয়। নারী ও পুরুষ উভয়েরই পর্দা মানতে হবে। পোষাক পড়ার পরও যদি নিজেকে ঢেকে রাখা না যায় সে পোষাক পড়ার দরকার কি? টাইটফিট পোষাক ছেলেমেয়ে উভয়এর জন্যই নিষিদ্ধ। এতে শরিরের গঠন বুঝা যায়। ইসলাম মতে মোটা আর ঢিলাঢালা পোষাক পড়তে বলে। ইসলামি শরিয়ত মানলে নারী হবে ঘরের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। বাজেরর পন্য নয়। আমি বুঝি না তারা কি শিক্ষা পেল যে কোনটা ভাল আর কোনটা মন্দ তা এখনো বুঝতে শিখল না। বড়ই আফসোস। বেকুবে দুনিয়া আজ সয়লাব।

নারীকে সম্পদ বলা হচ্ছে কেন?

নারীকে এখানে জড় পদার্থ টাইপ কোন সম্পদ বলা হয়নি। এখানে মহা মূল্যবান টাইপ কিছু, এটাই বুঝানো হয়েছে। আচ্ছা আমরা যদি বলতে পারি তুমি চাদের চেয়েও সুন্দর। যদি বলতে পারি ফুলের চেয়েও কোমল। শ্রেষ্ঠ সম্পদ বললেই দোষ না।

ঠিক আছে মানলাম সব। তবে এভাবে পুরোপুরি ঢাকার দরকার কি? একটু বেশী বেশী বারাবাড়ি না? তাদের কি মনে হতে পারে না পোষাকটা একটা কাড়াগার?

আধুনীক শিক্ষার নামে নারীরা ইভটিজিং এর স্বীকার হচ্ছে। কিন্তু নারীরা তা বুঝতে পারছে না। ভাবছে তাদের স্বাধীনতা হরন করে তাদের পোষাকের কাড়াগারে বন্দি করা হচ্ছে। আচ্ছা মহশুণ্যে যখন মানুষ যায় তখন একটা মোটা পোষাকের ভিতর বন্দি হতে হয়। কেন? মহাশুন্যের জন্য ওটা উপযুক্ত পোষাক । কেউ আমার অস্বস্থি লাগছে বলে তা খুলে ফেলে না। কিংবা সাগরে ডুবুরিরা যখন নামে তাদেরও পোষাকে বন্দি হতে হয। কেন? সাগরে ঐ টাইপের পোষাক পরলেই সহজে সাতার কাটা যাবে। কই কেউতো বলে না আমাকে পোষাকের কাড়াগার থেকে মুক্ত করে দাও। কেন বলে না? বলতো?

কেন আবার ! ওটাতো ওদের সুরক্ষার জন্যই তৈরি করা হয়েছে। মহাশূন্য আর সাগরে তাদের নির্বিঘ্নে চলাচলে জন্য এই ব্যবস্থা। পোষাক না থাকলেতো তারা সমস্যায় পড়বে। মৃত্যু ঝুকিতে পড়বে।

আমিতো তাই বলছি। মহাশুন্যে সাগরে যেমন পোষাক আছে । দুনিয়াতেও নারী পুরুষ উভয়্কেই তাদের নিরাপত্তার জন্য পোষাক দিয়েছে ইসলাম। আজ পোষাক হয়েছে ফ্যাশন। হয়েছে আধুনিকতার নগ্ন মাপকাঠি। আসলে যাদের অন্তরে ইসলামের জ্ঞান আল্লাহ দিতে চান না না তারা তা পায় না। পবিত্র আল কোরআনইতো বলেছে সুরা বাকারায়- এই সেই কিতাব! যাতে বিন্দু মাত্র সন্দেহ নেই । আর এটা মোত্তাকী (খোদাভীরু)দের জন্য পথ প্রদর্শক। অর্থাৎ আল্লাহকে যারা ভয় পায় তারাই এর জ্ঞান বুঝা ও মানার সৌভাগ্য অর্জন করবে। জ্ঞান পাপীরা নয়।

 

0 Shares

১৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ