আসছে কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস

ইঞ্জা ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, শনিবার, ০১:৩০:২৯অপরাহ্ন স্বাস্থ্য বার্তা ৪৮ মন্তব্য

হয়ত শিরোনাম শুনেই কেউ কেউ আঁতকে উঠলেন, আবার কেউ কেউ বাঁকা হাসি হাসলেন, কিন্তু বিষয়টা অপ্রিয় হলেও সত্য, সে আসছে, সে আসবেই, গবেষকরা ও জাতিসংঘ বলছে, সারা পৃথীবি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হবে, প্রতিটি দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়বে, এর অর্থ কি বুঝতে পারছেন?

এ মহা কেয়ামতের সমান কিছু হবে সারা বিশ্বের মানুষ লাখে লাখে মরবে।

করোনা ভাইরাস কি এখন কারো অজানা নয়, এ খুবই ছোঁয়াছে রোগ, এ পর্যন্ত চীনেই সরকারী ভাবে মারা গেছে তিন হাজারের মতো মানুষ, আল্লাহই জানেন বেসরকারি ভাবে কত হাজার বা লক্ষ মানুষ মারা গেছে।
কিন্তু আমি কেন বলছি সে আসছে?
কারণ আছে তো অবশ্যই, তার আগে বলে নিই কেন বলছি।

আপনারা খেয়াল করেছেন কি, কিভাবে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন দেশে?
যেখানে আমাদের মুমিনরা দাম্ভিকতার সাথে ঘোষণা করছিলো, চীনে চায়নিজরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও সেইখানকার চায়নিজ মুসলিমরা খাদ্যাভ্যাসের কারণে আক্রান্ত হচ্ছেনা, আর আমরা অতি ধার্মিকরা সাব্বাশি দিচ্ছিলাম আর গর্ববোধ করছিলাম নিজেরা মুসলিম বলে, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, কোভিড করোনা ভাইরাস এখন ধর্ম মানছেনা, সে ধর্মমত নির্বিশেষে সবাইকে আক্রান্ত করছে, যেমন ধরুন ইরানে এখন করোনা ভাইরাস হানা দিয়েছে, এমন কি তাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, মৃত্যুহার ওখানে কম হলেও খুব শীগ্রই তা বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে, ইতিমধ্যে সৌদি আরব তাদের ওখানে ওমরাহর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, হয়ত সামনের হজ্বও নিষিদ্ধ হতে পারে করোনা ভাইরাস আতংকে।

এছাড়া ইটালিতে ইতিমধ্যে চারশরও অধিক মানুষ তাদের জীবন হারিয়েছে করোনা ভাইরাসে, আক্রান্ত কয়েক হাজার, ফ্রান্সে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।
ইতিমধ্যে সিঙ্গাপুরে আক্রান্তের হার বেড়ে গেছে, মালেশিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, কুয়েত সহ আরও অনেক গুলো দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত পাওয়া গেছে।

জাতিসংঘ ইতিমধ্যে দ্বিতীয় বারের মতো রেড এলার্ট জারি করেছে সারা বিশ্ব ব্যাপি, যেকোনো দেশ এখন আক্রান্ত হওয়ার সমূহ ঝুঁকিতে আছে, এই ক্ষেত্রে ভারতে জনসংখ্যার ঘণত্বের কারণে বড় ঝুঁকিতে আছে।

এখন আসেন আমাদের দেশের উপর এর ঝুঁকি কি আছে তা আপনাদের সাথে আলোচনা করি।
আমাদের দেশের সরকারের করোনা ভাইরাস নিয়ে চিন্তাভাবনা নিয়ে এই দেশের জনগণ সত্যি শংকিত।
আমাদের প্রতিটি বর্ডারে, যেমন সকল ইন্টার ন্যাশনাল বিমানবন্দর, সকল জাতীয় বর্ডার গুলোকে গুরুত্বের সাথে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য সতর্কতার মধ্যে আনা জরুরি, সেইখান থেকে কোন মানুষকে আসতে হলে বহির্গমণ দেশ থেকে করোনা ভাইরাস মুক্ত সার্টিফিকেট সাথে আনতে হবে বলে নির্দেশনা দিতে হবে, সে যেই হোক।
সাথে সাথে বর্ডারগুলোতে দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত সকল ডাক্তারদের জরুরী স্বাস্থ্যসেবা, করোনা ভাইরাস নির্ধারণে জরুরী কিট শতভাগ ভাবে সহজলভ্য রাখতে হবে, যাদের সিনটম বা করোনা ভাইরাসের চিহ্ন বহন করছে বলে ধারণা করা হবে, তাদের তৎক্ষনাৎ কোয়ারেন্টিনে নিয়ে যেতে হবে যা জনমানবশূন্য স্থানে হতে হবে এবং সময় সেইস্থানে উপযুক্ত স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং রুগীকে একক বা একলা একটা রুমে রাখতে হবে যেন অন্য কেই এর সংস্পর্শে আসতে না পারে।

এছাড়া আমাদের সাধারণ মানুষদের সকলকেই অনুরোধ করবো যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য, যেমনঃ
(১) মুখে মাস্ক পরিধান করুন।
(২) সবসময় নিজেকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন।
(৩) কারো সর্দি কাশি হলে তার থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন।
(৪) দরকার হলে হাতে প্লাস্টিকের গ্লাভস পরিধান করুন।
(৫) প্রতিদিনের ব্যবহৃত কাপড় প্রতিদিন ধুয়ে ফেলুন, ঘরদোর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন।
(৬) যেখানে সেখানে কফ, থু থু ফেলবেননা।
(৭) যাদের সর্দি কাশি আছে তারা রুমাল কয়েকটা সাথে রাখুন, এবং তা প্রতিদিন পরিস্কার রাখুন।
(৮) কারো সর্দি কাশি, জ্বর এবং সাথে হাঁপানির মতো অনুভূত হয়, তাহলে দ্রুত স্থানীয় আইসিসিডিআর বির হাসপাতাল, বা সরকারের নির্ধারিত হাসপাতালে গিতে নিজের চিকিৎসা নিন।
(৯) জনবহুল এলাকা, যেমন বিয়ে, বার্থডে, ইত্যাদি বা মেলা হয় এমন স্থান করোনা ভাইরাস আক্রান্তের জন্য উতকৃষ্ট স্থান সমূহ এড়িয়ে চলুন।

এইসব বিধি মেনে চললেই হয়ত আমরা এই কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস নামক এই অভিশাপ থেকে বাঁচতে পারি।

সুতরাং আমি জনস্বার্থে সবাইকে অনুরোধ করছি, প্লিজ সবাই সাবধান হোন, সাবধানে থাকুন, কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস আসছে, আসবে নিশ্চিত।
সাধুগণ এখনই সাবধান হোন, নইলে আমাদের দেশের মতো জনঘনত্বের দেশে করোনা ভাইরাস আসলে আর রেহাই নেই।

ছবিঃ গুগল।

 

0 Shares

৪৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ