একবার আমাদের পাড়ার মসজিদের ইমাম তাঁর দেশের বাড়ি বেড়াতে গেছেন । আমি তখন ক্লাস টু'তে পড়ি । আমার ক্লাস ওয়ান পড়া হয়নি । আমার আগের ভাই-বেরাদররাও ক্লাস ওয়ান পড়েনি । আমার দাদা আমাকে বললেন যাও আজান দিয়ে আসো । আমি আজান দিলাম । দাদা এসে নামাজ পড়ালেন । নামাজ পড়লাম । নামাজ শেষে দাদা বললেন আল্লাহ্র কাছে কি দোয়া করছো ? আমি বললাম , আমার যেন প্রতিদিন স্কুলে যেতে না হয় । স্কুল যেন সবসময় বন্ধ রাখে এসব । দাদা আমাকে মমতাহীন একটা চড় দিলেন । তারপর বললেন এখন থেকে আল্লাহ্র কাছে একটা জিনিস চাইবে ''আল্লাহ আমাকে জ্ঞান দাও'' ।
বড় হবার সাথে সাথে আমি শিকড় ভুলে গেছি । দাদা কিছুদিন আগে মারা গেছেন । আমি জীবনের কঠিন সময়গুলোতে তাঁকে মিস করি । কি কঠিন মানুষ ছিলেন ! গ্রামের একটা প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষকের এত সম্মান কিভাবে সম্ভব ! । খুব বদমেজাজী ছিলেন । বাড়ির সামনে স্যান্ডেল উল্টো দেখলে রাগ করতেন । বদনা খালি দেখলে সামনের পুকুরে লাথি মেরে ফেলে দিতেন । দাদা মারা যাওয়ার দু-একদিন আগে আমাকে ছোট্ট উপদেশ দিয়ে গেছেন এবং বলে গেছেন সারা জীবন বলার জন্য- "আল্লাহ আমাকে জ্ঞান দাও" ।
মাঝে মাঝে মনে হয় যার জ্ঞান আছে তার সব আছে । আবার পরক্ষনেই মনে হয় কি দরকার এত জ্ঞানের ? মারা গেলেইতো পোকায় খাবে ।
ভোরের আলো নেমে আসে
স্মৃতির শিশির ঘাসে
মনে হয় কোথাও যেন তুমি
ডাকছো আমায় উচ্ছ্বাসে
কতো কথা হয়নি বলা
তুমি আমি এপাশ ওপাশ
দৃষ্টিজুড়ে শুধুই কেন তবে
মৃদু মৃদু নিপাট সর্বনাশ
প্রাণের টান আজান হয়ে
নাড়ছে কড়া মনে
পাপ পাপ উল্লাসে আমি
ডুবছি বেবিলনে
গল্পের কীট যাচ্ছে ভেঙ্গে
ধুলোয় ধুলোয় ছাই
তুমি আমি এদিক সেদিক
নিজেকে খুঁজে বেড়াই ।
Thumbnails managed by ThumbPress
৬টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
অনেক অনেকদিন পরে এলেন, চমত্কার একটি লেখা নিয়ে। জ্ঞানের প্রয়োজন আছে নইলে বেঁচে থাকতেই পোঁকায় খাবে।
কবিতাটি খুব সুন্দর। আল্লাহ্ আমাকে জ্ঞান দাও.
প্রিন্স মাহমুদ
ঈদের শুভেচ্ছা রইল । আমিতো অনেকদিন পর পরই আসি 🙂
খসড়া
নিজেকেই খুঁজি।
প্রিন্স মাহমুদ
হু । নিজেকেই খুজি । কেমন আছেন ?
লীলাবতী
জ্ঞান এর জন্য বেশ কিছু হাদিস আমরা পড়েছি ছোট বেলায়ই। ভালো লিখেছেন ভাইয়া ।
প্রিন্স মাহমুদ
আপনাকে শুভেচ্ছা ।