সারাজীবনে " আমি ভালো হয়ে যাব" এই
প্রতিজ্ঞাটি মানুষ বোধহয় সবচেয়ে
বেশিবার করে... আর ভাঙে।
-
পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ মানুষটিও
জীবনের কোন না কোন সময় ভালো মানুষ
ছিল। হয়তো দেখা যাবে তার জীবনের প্রথম
প্রেমটিতে তার কোন অসততা ছিল না।
জীবনের প্রথম প্রেমে প্রেমিকেরা কখনো
প্রতারক হয়না!
-
তারপর... আস্তে আস্তে সে যখন বুঝতে
শিখলো, তখন সে অপরাধী হয়ে উঠলো। আর...
বুঝতে পারাটাই হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
ব্যাপার! এই পৃথিবীতে কোন অবুঝ অপরাধী
নেই। তা নাহলে হিংস্র প্রাণীরা সব
কারাগারে থাকতো। পাগলকেও কোর্টে
যেতে হত। শিশুরা কাঠগড়ায় দাঁড়াত।
-
আমি মনে করি মানুষের হাতে ন্যায়বিচার
সবসময় সম্ভব না। একজনের কৃতকর্মের ফল সেই
মানুষটি নাও ভোগ করতে পারে। কারন
প্রকৃতির নিজস্ব কিছু নিয়ম আছে। এমনটা না
হলে কোন মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে
ছেলেটি প্রেগন্যান্ট হয়ে যেত। উল্টোটি
হয়... তাই ধর্ষক হয় বাদশাহ আর মেয়েটিকে
হতে হয় বেশ্যা।
-
এক ভাইয়ের লেখায় পড়লাম '' ক্লাস এইটের
এক মেয়ে ধর্ষিত হয়েছে। সে ঘটনাটি
কাউকে না জানিয়ে চেপে গেছে।
কিছুদিন পর যখন বুঝতে পারলো সে
প্রেগন্যান্ট... সে তার মাকে জানালো।
পরে দেখা গেল ধর্ষক তার আপন ভাই।
-
কিছু মানুষ আছে যারা কবরস্থানে গিয়ে
রাতদিন পড়ে থাকে। অপেক্ষা করে... যদি
দেখে কোন মহিলার লাশ ওখানে কেউ
দাফন করেছে, সে আবার অপেক্ষা করে...
সবাই চলে যাওয়া পর্যন্ত। তারপর সে কাছে
গিয়ে খুঁড়ে খুঁড়ে লাশটাকে কবর থেকে
তুলে ফেলে... তারপর সেই লাশটাকেই ধর্ষণ
করে!
-
মা কে নিয়ে গুগলে সার্চ দিলে প্রথমেই
কয়েকটি খারাপ লেখা সামনে চলে
আসবে। ঐ লেখাগুলোও কারো না কারো
মায়ের সন্তানের লেখা। তার মা কি
জানে তার ছেলে তাকে নিয়ে কি-সব
চিন্তা করে?"
-
একটি মেয়ে ধর্ষিত হলে... অনেক দিন পার
হওয়ার পর, সেই মেয়েটি বায়োলজিক্যালি
একসময় ব্যাপারটি হয়তোবা মেনে নিতেও
পারে। এবার ভাবুন কি ভয়ংকর সমস্যায়
আপনি পড়তেন যদি ঐ মেয়েটির জায়গায়
আপনি ধর্ষিত হতেন আর আপনি একটি ছেলে
হতেন!
আপনি কি ভুলতে পারতেন? কাউকে বলতে
পারতেন? ধর্ষককে খুন করতেন? ধর্ষিত অনেক
ছেলে আত্মহত্যা করেছে, আপনি করতেন?
-
একটা ইন্টারনেট জরিপে দেখেছিলাম
অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেদের ধর্ষিত হওয়ার হার,
অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের মোট ধর্ষিত হওয়ার
হারের এক চতুর্থাংশ। শিশুদের মধ্যে কোন
ছেলে-মেয়ে তফাৎ হয়না। আর
দুষ্কৃতিকারীদের কাছে ভোগের ক্ষেত্রে
ছেলে মেয়ে জেন্ডার ভেদ নেই।
অন্যভাবে চিন্তা করলে একটা ছেলে
কিভাবে আরেকটা ছেলেকে ধর্ষণ করতে
পারে?
আসলে সমকামীদের সাইকোলজিক্যালি
আকর্ষণ হয় সমলিঙ্গের প্রতি। সেটা সম্পূর্ণ
তার ভিতর থেকেই আসে ঠিক যেমন একটা
ছেলে একটা মেয়েকে দেখে যেমন আকর্ষণ
অনুভব করে, ঠিক তেমনি... এক্ষেত্রে তাদের
কিছু করার থাকেনা, কারন তারা আসলে
বাস্তবে নারী। তাদের মনটা আটকে আছে
একটা পুরুষ দেহের ভেতরে। এখন তারা
জৈবিক চাহিদা মেটাতে কার কাছে
যাবে? নাকি মেটাবে না? তারাও তো
মানুষ! মানবিক দিক চিন্তা করলে তাদের
জন্য আমাদের কি করার আছে?
শুধুমাত্র মানবিক দিক চিন্তা করে প্রথম
বৈধভাবে সমলিঙ্গের বিয়ের অনুমুতি
দিয়েছিল নেদারল্যান্ডস ২০১০ সালে।
তারপর অনেক দেশে এটা স্বীকৃত হয়েছে।
-
অনেক দেশে লিভ টুগেদার বা বিয়ে না
করেও একসাথে থাকার অনুমতি আছে।
বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড একসাথে থাকে।
তাদের বাচ্চাকাচ্চা হয়, তারাও বড় হয়...
একসময় বয়ফ্রেন্ড গারলফ্রেন্ড মন চাইলে
বিয়ে করে... তাদের ছেলে মেয়েরা
তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকে।
আমদের দেশে প্রকশ্যে এমন কোন
ছেলেমেয়েকে পাওয়া যাবে যে তার
বাবা মায়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত
ছিল? আমাদের বাবা-মা থাকতে হয়, সবার
আগে পরিবার থাকতে হয়। মরার আগে আমরা
তাদের ওল্ড হোমে ফেলে আসতে পারি
না। এদেশে এতিম ছেলেটাও কাঁদার সময়
'বাবা-গো, মা-গো' চিৎকার করে...
-
এক দেশে যেটা অপরাধ অন্য দেশে সেটা
ন্যায়সঙ্গত হতে পারে। একেক দেশের
অপরাধীর অপরাধের ধরন ও ঐ দেশের অপরাধ
দমন ও নিয়ন্ত্রনের কৌশল একেক রকম। এত
ভালো মনের মানুষগুলোর মধ্যেই আমাদের এই
দেশে হিংস্র অপরাধী আছে। কিন্তু
তাদেরকে আমার মানবিক দিক থেকে
ততটা খারাপ বলে মনে হয়না।
আমার মনে হয় জগতের সবচেয়ে নিকৃষ্টতম
লোকটিও একদিন ভালো হওয়ার সিদ্ধান্ত
নিয়েছিল। তারপর... হঠাৎই সে খারাপ হয়ে
গেল। হয়তো একটানা দুদিন সে ভাত না
খেয়ে ছিল...তারপর সিদ্ধান্তটা নিল।
অথবা বাবা- মা মরে যাওয়ার পর, কিংবা
প্রেমিকা ছেড়ে যাওয়ার পর... অথবা
জেলখেটে আসার পর কিংবা এইচ.এস.সি
ফেল করে!!
হয়তো দেখা গেল তার চোখে দেখা
সবচেয়ে ভালো মানুষটি তার সবচেয়ে বড়
ক্ষতি করলো...
-
আসলে ভালো আর খারাপ মানুষের
সংজ্ঞা আমরা কেউই জানিনা... ভালো
খারাপ হয়ে কেউ জন্ম নেয় না। সময়-
মানুষকে কোন এক দিকে ঠেলে দেয়।
আমি জানি... এই পৃথিবীর একদম সব মানুষ
কখনোই ভালো হয়ে যেতে পারবে না
অথবা একদম সব মানুষ একসাথে খারাপ হয়ে
যেতে পারবে না।
-
''আমি চাই এই পৃথিবী হবে জেলমুক্ত পৃথিবী।
কোন কারাগার থাকবে না। ভালো মানুষ
খারাপ মানুষ সব একসাথে থাকবে।''
দেখা যাবে এই কথাটি শুনে অনেক খারাপ
মানুষ ভালো হয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা
করবে... আর অনেক ভালো মানুষ পরিকল্পনা
করবে খারাপ হয়ে যাওয়ার!
-
-
জেলখানার ভিতরে যারা থাকে তারা
সবাই কিন্তু খারাপ মানুষ হয় না।
তাহলে জেলখানার বাইরে যারা
থাকতো... তারা সবাই হত- প্রচণ্ড রকমের
ভালো মানুষ...!!
Thumbnails managed by ThumbPress
১২টি মন্তব্য
নীলাঞ্জনা নীলা
অন্যরকম লেখা।ভালো লেগেছে। কিছু কথা বলতে চাই—-
প্রথম প্রেমে অসততা নেই, কে বললো? প্রচুর দেখেছি। আর মেয়েগুলো চরম আবেগী, এমনভাবেই প্রেমে পড়ে ১০০ ভাগ বিশ্বাস করে। তখন আমরা বান্ধবীরা হই শত্রু।
নারী শরীরের মতো সুস্বাদু এবং সস্তা খাদ্য আর কোথায়? চাহিবা মাত্রই পাওয়া যায় ঘরে কিংবা বাইরে। জীবিত কিংবা মৃত।
এরচেয়ে ঘৃণিত কি আর কিছু আছে? “মা” মাত্র একটি অক্ষর দিয়ে গঠিত এই একটি শব্দ যা আমাদের মুখে প্রথম উচ্চারিত হয়। যার থেকে প্রথম খাদ্য গ্রহণ করি, যে তার গর্ভে আমাদের আশ্রয় দেয়। তাকে নিয়ে কি জঘণ্য সব। ছিঃ! ছিঃ!! আমি একজন মা, কোথায় রাখি এই লজ্জ্বা?
ধর্ষণ এই শব্দটি আমি উচ্চারণ করতে পারিনা। অনেক যন্ত্রণা হয়।
আমার কাছে সমকামীতা পাপ না। ঘেণ্ণাও করিনা। এমনকি লিভটুগেদার এটাকেও খারাপ বলে দেখিনা আমি। যতোদিন মনের-শরীরের সাথে মিলছে, থাকছে। নয়তো চলে যাচ্ছে। আমাদের দেশে এমন হয় স্ত্রীর সাথে রাত কাটাচ্ছে আর ভাবছে অন্য নারীকে। ক’জন পুরুষ আছে যারা অন্য নারীর শরীর নিয়ে ভাবে না?
“এতো আড়ম্বর কেন?
কি, বিয়ে?
ওহ নারী-পুরুষের সম্ভোগপূর্ব অনুষ্ঠান বুঝি?” কবিতাটি লিখেছিলাম ১৯৯৬/’৯৭ সালে।
ভালো-খারাপ শব্দটা নিয়ে এই গত সপ্তাহেও ভাইকে বলেছি এই বলতো আমার খারাপ কি কি? এ জীবনে একটিবারের জন্যেও তো বললি না। ভাই+বন্ধু আমার চলমান ডায়েরী রানা বললো, ওর চোখে কোনো কিছুই খারাপ না। বরং একেকটি ভুল জীবনকে শেখায়। এরপর বললো, “কে, কি বলে তাতে মন খারাপ করিস ক্যান? you are the best.” না আমি যদিও ওর এই কথাকে সাপোর্ট করিনা পুরোপুরি, আবার ফেলেও দেইনা। কারণ সত্যিই তো ভালো আর খারাপ মানে কি? কলেজে শিক্ষকতা করেছি। যেসব ছাত্র-ছাত্রী পড়ালেখা করেনা তারা পেছনে বসে। ওদেরকে খারাপ বলে। আমি ওদেরকে সামনে বসাতাম, ওদেরকে যে সব কারণে খারাপ বলা হতো, তাদেরকে আমি সেসব ধরিয়ে না দিয়ে ওদের যে চাপা দেয়া গুণগুলো আছে ওসবই তুলে ধরতাম। একদিন যারা ওদেরকে খারাপ বলেছে, তাদের চোখেই ভালো হয়ে গেলো।
অনেক লিখে ফেললাম। আসলে লেখাটা মন ছুঁয়েছে। তাই এতো বড়ো মন্তব্য হয়ে গেলো। বিরক্ত হবেন না যেনো।
সাজ্জাদুর রাহমান সাজিব
আপু প্রথম পেম এ আমি প্রতারিত হয়েছি,তাই আমার কাছে এমন মনে হইছে।
আপনাদের মন্তব্য আমার অনুপ্রেরণা।
তাই আশা করি মন্তব্য করতে সংকোচবোধ করবেন নাহ।
শুন্য শুন্যালয়
অপরাধের পেছনে কোন লজিক খাটেনা, অপরাধ অপরাধ। আমরা মানুষ, একটা দেশ, একটা পৃথিবী কনট্রোল করে ফেলছি নিজের বুদ্ধিশক্তি দিয়ে, আর নিজের সামান্য রাগ, হিতাহিত জ্ঞান, ভালো মন্দ ভুলে যাচ্ছে সময়ের পরিবর্তনে।
আপনার পোস্টটি ভালো লেগেছে। বেশ কিছু কথা মনে ধরেছে। প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই ভালো মন্দ আছে। একজন খুনী হয়তো সেও ভালো ছিল, কিংবা তারও অনেক ভালই বর্তমান আছে। তবে সে খুনিই। জেলখানায় ভালো মানুষ আছে এর চাইতে বেশি আফসোস আমার যে, জেলের বাইরে খারাপ মানুষ গুলো ঘুরে বেড়াচ্ছে।
এই পৃথিবীতে কোন অবুঝ অপরাধী নেই। যে অপরাধ করে তার কাছে সেটাই ঠিক। এই বিচারে পৃথিবীতে কোন অপরাধীই থাকবেনা। ঘুরে ফিরে কি আমরা তবে পেছন দিকে যাচ্ছিনা?
সাজ্জাদুর রাহমান সাজিব
আমার কাছে মনে হচ্ছে আমরা প্রত্যেকই কোন না কোন ভাবে মারাত্নক অপরাধী 🙁
তাই এমনটা মনে হইছে আর লিখে ফেললাম আপু।
ধন্যবাদ আপু আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামতের জন্য।
🙂
রাসেল হাসান
কিছুই বলার নেই। শুধু বলবো সকাল সকাল অসাধারন একটা পোষ্ট পড়লাম! খুব সুন্দর করে লিখেছেন। লেখাটা খুব ফিল করলাম!
সাজ্জাদুর রাহমান সাজিব
ধন্যবাদ ভাইয়া।
🙂
অনিকেত নন্দিনী
পৃথিবীতে কোন অবুঝ অপরাধী নেই – খুবই সত্যি কথা। এও সত্যি যে জেলের ভিতরে থাকা অপরাধীর চেয়েও জঘন্য অপরাধী জেলের বাইরে আমাদের মাঝে ঘুরে বেড়ায়।
সাজ্জাদুর রাহমান সাজিব
হ্যা।
ঠিক।
আমাদের সভ্য সমাজ এ অপরাধীর সংখ্যা অনেক।
খেয়ালী মেয়ে
লাশকেও ধর্ষণ করে 😮
সাজ্জাদুর রাহমান সাজিব
হ্যা করে।
এত রকম অন্যায় ঘটে প্রতিনিয়ত,এটা ও অস্বাভাবিক কিছু নাহ।
খেয়ালী মেয়ে
মানুষ নয় জানোয়ার এরা….
সাজ্জাদুর রাহমান সাজিব
হ্যা
ওরা মানুষরূপী জানোয়ার