
বান্দরবানের থানচি উপজেলার দুর্গম নাক্ষিয়ং নামক স্থানে অবস্থিত বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জলপ্রপাত আমিয়াখুম। পাহাড়ী সাঙ্গু নদী তার বয়ে চলার পথে অজস্রে স্থানে ছোট ছোট জলপ্রাপাতের সৃষ্টি করেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে আমিয়াখুম। খুম মানে হচ্ছে যেখানে পানি কখনো একেবারে শুকায় না। ঝর্নার পানি শুকাবে কিন্তু খুমের না। এটার অবস্থান বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের পাশে।
এ্যডভেঞ্চারের ষোলকলা যদি কেউ পুরণ করতে চান, তাহলে ছুটে যান বান্দরবানের পর্বতমালার গহীণে সাতভাইখুম আর আমিয়াখুমে। মনে হবে পৃথিবী এমন সুন্দর হতেই পারেনা, এ কোন কল্প লোকের স্বর্গরাজ্য। আসুন আমার ক্যামেরায় ঘুরে আসি সেই স্বর্গরাজ্য।
(২) আমিয়াখুমে যাওয়ার আগের রাতটা আমরা কাটিয়েছিলাম এই সাজাই ভ্যালীতে। খুব ভোরে উঠেই ছুটতে হয়েছিলো আমিয়াখুমের উদ্দেশ্যে।
(৩/৪) ভোরে পাহাড়ি এমন চমৎকার লোকেশনে হাটতে কিন্তু মনের ভেতর কোনও ক্লান্তি আসে না। যদিও পাহাড়ি জোঁকগুলো আমাদের বেশ যন্ত্রণা দিচ্ছিল।
(৫) পাহাড়ি লোকেরা ফুলের চাষ করে কি জন্য জানা হলো না। এক পর্যায়ে দেখলাম প্রচুর ফুল গাছ পাহাড়ে।
(৬) তাদের ফুল বাগানের ভেতর দিয়াই আমাদের রাস্তা করে এগোতে হচ্ছিল।
(৭) এক সময় আমাদের নেমে আসতে হলো এমন পানি পথে।
(৮) জিরিয়ে নেওয়া এবং ছবির পোজ একই সাথে করে নিলাম।
(৯) অসাধারণ সাতভাই খুমের পাশ দিয়া আমরা আমিয়াখুমের দিকে গেলাম।
(১০) নাক্ষিয়ংমুখে এসে আমরা আটকে গেলাম, দুই পাশেই আকাশ ছোয়া খারা পাথুরে পাচিল, আর মাঝখানে ছুটে চলা হীম শীতল জলের রাজ্য, সামনে যাওয়ার পথ একটাই, বাঁশের ভেলা।
(১১) নাক্ষিয়ংমুখে দাঁড়িয়ে আছি এমন সময় জঙ্গলের ভেতর থেকে হঠাৎ কিছু লোক এসে ইলেক্টিক সক দিয়ে মাছ ধরা শুরু করলো। এই পদ্ধতির মাছ ধরা আগে কখনো আমরা দেখিনি।
(১২) ভর দুপরের আলো আধাঁরিতে অদ্ভুত রহস্যঘেরা সৌন্দর্য্যে যে কারো চোখ ধাঁধিয়ে যাবে। আমার মনে হয় আমার দেখা সেরা জায়গার একটি।
(১৩/১৪) দুইজন তিনজন করে বাঁশের ভেলা দিয়ে সেই অসাধারণ পাহাড়ি খাল পার হলাম।
(১৫) ভেলায় পার হওয়ার সময় কিছুটা ভিজে যাওয়ায় আগুন জ্বালিয়ে কিছুটা গরম হওয়ার চেষ্টা।
(১৬) আমাদের ট্রাকিং এর সমস্ত ক্লান্তি দূর করার জন্য পাাড়ি এই সিঁদুরে কলমীগুলো খুবই সচেষ্ট ছিলো।
(১৭) ভেলা থেকে নেমে আরো কিছুটা পাথুরে পথ অতিক্রম করতে হয়েছিলো আমাদের।
(১৮) এক সময় আমাদের সামনে ভেসে উঠে সেই কাঙ্খিত ঝর্ণা আমিয়া খুম।
(১৯) আমিয়াখুমের জলধারার দুইপাশের গঠনশৈলী একেবারে অন্য রকম। প্রকৃতির তৈরী সিড়িঁর পর সিঁড়ি, যেন কোন শিল্পীর অনেক দিনের সাধনায় তৈরী কোন আরাধ্য প্রতিমা।
(২০) সব শেষে আমিয়াখুমে আমি।
তবে এই আকাশ ছোয়া পাহাড়, পিচ্ছিল পাথর আর ঘন জঙ্গলের স্বর্গরাজ্যে আবার আসবো সেটা আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম। জানিনা আবার আমি কখনো সাহস আর সময় বের করতে পারবো কিনা আমিয়াখুমের রূপসুধা পান করার। তবে মনের গহীনে যদি আমার কোন সুপ্ত ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে সে অবশ্যই আমিয়াখুমের জন্য
২১টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
আগে মাছ ধরার বর্ণনা দেন।
কামাল উদ্দিন
ওদের পিঠে একটা বক্সে ব্যাটারি বসানো থাকে, ব্যাটারি থেকে লম্বা একটা লৌহ দন্ডে বিদ্যুৎ পরিচালনা করা হয়। তারপর এই খড়স্রোতে ওরা মাছদেরকে কিভাবে দেখে আমি বুঝিনা। মাছের গায়ে লৌহ দন্ডের স্পর্শ লাগলেই মাছটা অচেতন হয়ে যায়। আর সাথে সাথেই ওদের অন্য হাতে থাকা ছোট জাল দিয়ে মাছটাকে ওরা ধরে নেয়।
জিসান শা ইকরাম
১৮, ১৯, ২০ নং ছবির দিকে তাকিয়েই আছি,
এত সুন্দর যা ভাবাই যায় না, কল্পনাকেও অতিক্রম করে গিয়েছে।
এত সুন্দর আমিয়াখুম জলপ্রপাতকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ঈদ মুবারক,
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ ইকরাম ভাই, পাহাড়ি যতগুলো ঝর্ণা এই পর্যন্ত আমি দেখিয়াছি তার মধ্যে এটাকেই আমি সেরা মানি……..ভালো থাকবেন, ইদ মোবারক।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
১২, ১৩, ১৬,১৮,১৯,২০ এক কথায় অসাধারণ। ভাইয়া আপনাকে আমার খুব হিংসা হয়। এতো ঘুরেছেন যে আপনার জীবন সত্যিই ধন্য , আমি মনে করি। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। নতুন ভ্রমণ কাহিনীর অপেক্ষায় রইলাম
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ফুল দিয়ে পূজা করার জন্যই হয়তো আলাদা করে চাষ করে?
কামাল উদ্দিন
হতে পারে পুজোতে ওদের কিছু ফুল লাগে, কিন্তু পাহাড়ের উপড় বিশাল এলাকায় এমন ফুলের চাষ দেখলে মনে হয় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এর ব্যবহার হয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো ওখান থেকে সভ্য সমাজে ফুল নিয়ে এসে বানিজ্য করা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। ভালো থাকবেন আপু।
ফয়জুল মহী
অসাধারণ । ভালো লাগলো।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ ভাই, ইদ মোবারক।
প্রদীপ চক্রবর্তী
অসাধারণ দাদা।
তুলনা হয় না!
এতো সুন্দর সুন্দর জায়গায় ভ্রমণ করছেন সত্যিই আপনি ভাগ্যবান।
শুভকামনা রইলো দাদা।
কামাল উদ্দিন
মাঝে মাঝে আমার নিজেকে সত্যিই ভাগ্যবান মনে হয়, আবার বর্তমান সময়ের বিপদে মনে হয় দূর্ভাগা…….ভালো থাকবেন দাদা।
সুপায়ন বড়ুয়া
প্রকৃতির অপরুপকে সুন্দর করে তুলে এনেছেন।
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
শুভ কামনা রইলো
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ দাদা, আপনার জন্যও শুভ কামনা সব সময়।
সঞ্জয় মালাকার
অসাধারণ সব গুলো ছবি…
প্রকৃতির অপরুপকে সুন্দর করে তুলে এনেছেন।
এতো সুন্দর সুন্দর জায়গায় ভ্রমণ করছেন সত্যিই আপনি ভাগ্যবান।
ধন্যবাদ দাদা ভালো থাকবেন সবসময় শুভ কানা।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ দাদা, সম্ভবত আমি ঠিকই ভাগ্যবান…..ভালো থাকবেন সব সময়।
সুরাইয়া পারভীন
এটা স্বর্গ থেকে নেমে আসা স্বচ্ছ ঝর্ণা ধারা হলেও আমি জীবনেও যেতাম না। যেখানে জোঁক থাকে তার ত্রিসীমানায় আমি নেই।
সবকটা ছবি দারুণ।
কামাল উদ্দিন
আমি আবার উল্টো আপু, সৌন্দর্য্য দেখার জন্য যতো কষ্টই হোক করতে আমার কোনও আপত্তি নাই, ভালো থাকবেন আপু।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আপু আপনার সাথে এখানে আমার ও মিল । জোঁক, সাপ, কেঁচো , বিছা যেখানে আছে সেখানে আমি নাই।
কামাল উদ্দিন
এসব না থাকলে এ্যডভেঞ্চারটা পাবেন কোথায় আপু?
হালিম নজরুল
আহ কি সুন্দর!
কামাল উদ্দিন
হুমম, সত্যিই অনেক সুন্দর ভাই