
“ছোটবেলা বলতে আমি তেমন ভাবিনা কারন আমি মনে করি, এখনো আমি বড় হয়নি। আমি বাবা মায়ের সেই ছোট আলিফ আছি”
আব্বু চাইতেন অন্তত আরেকটা প্রমোশন হোক তবে সেটা যোগ্যতায়, উপরের মহলকে ঘুষ দিয়ে নয়।
রমজান মাস সকাল ৮ টায় আমার মায়ের জুড়ে ছোট পরী জন্ম নিলো নাম রাখা হলো আলিফ। ওই দিনের আব্বু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রমোশন পেলেন,সৌভাগ্যের প্রতীক হিসাবে আমি চিহৃিত হলাম, পরিবারে তৃতীয় সন্তান।
আমার পরিচয় হলো ইউএনও সাহেবের মেয়ে এটা অনেক আনন্দের,গর্বের জায়গা ছিলো। আমি ছোটবেলা থেকে ময়মনসিংহ শহরে থাকি। তাই ঈদের বা রোজার আনন্দ গুলো সব সময় চার দেয়ালের ভিতরেই সীমাবদ্ধ থাকবো।
৪-৬বছর বয়সে রোজার মানে বুঝতাম না,তবে সেহেরি খেতে হবে এটা বুঝতাম। আব্বু আম্মু সাথে সেহেরি খাইয়ে তারপর ঘুমাতে দিতেন।
৭-৯ বছরে বুঝতে পারলাম রোজার মানে। বন্ধুরা শখ করে রোজা রাখে, তো আমাকেও রোজা রাখতেই হবে।আব্বুর কাছে বায়না ধরলাম রোজা রাখবো তিনি বুঝালাম সারাদিনে যতবার খাব তত গুলো রোঝা হবে।এই বিশ্বাস মনে রেখে আলহামদুলিল্লাহ্ জীবনের প্রথম রমজানে ৯০টা রোজা পূর্ণ করলাম, আর ঈদের দিন আব্বুর কাছ থেকে দামী গ্রিফ্টও পেলাম 😍।সেই ঈদটা হয়তো জীবনের খুব বেশি স্পেশাল হয়ে রইল।
১০-১৩ বছর আমার বয়সের তুলনায় স্বাস্থ্যটা কম ছিলো। তাই আম্মু,আব্বু চেষ্টা করতেন আমার স্বাস্থ্য বাড়াতে কিন্তু নিজেকে বড় বলে দাবী করতাম এবার রোজা রাখবোই।অবশেষে দাদু বললেন আচ্ছা রোজা রেখে অভ্যাস করুক সমস্যা কি.?
আল্লাহ্ ভরসা চেষ্টা করতে করতে ৭ তম রোজাটা রাখার সিদ্ধান্ত হলো। সারাদিন ফোনে সবাইকে জানালাম আমি রোজা, এটা নিয়ে খুব গর্ব হচ্ছিল। সারাদিন আম্মুকে বললাম কি কি ইফতারিতে খাব তার লিস্ট জানালাম আব্বু, আম্মু আবার আমাদের খুব স্নেহ করেন তাই লিস্ট অনুযায়ী সব রান্না করলেন। বিকাল ২ টা বাজে ইফতারের শেষ সময় সন্ধ্যা ৬.২০ মিনিট দেওয়াল ঘড়ি দেখতে দেখতে সময় যেন আর শেষ হচ্ছিল না।
ক্লান্ত হয়ে বিছানায় শয্যা নিলাম।শরীরে অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেলে,উঠতে গিয়ে মাথা ঘুরে পড়ে গেলাম। বাসায় কান্নার বিলাপ শুরু হলো। আব্বুকে অফিসে ফোন দেওয়া হলো তিনি বাসায় ফিরে দেখলেন।আমি শুধু সবাইকে চেয়ে দেখতে পারি কথা বলার অবস্থায় নেই।তাড়াতাড়া হাসপাতালেে নেওয়া হলো, স্যালাইন, সুচ ছোটবেলা থেকেই ভয় পাই তারপর রোজা ট্যাবলেট খেলে রোজা ভেঙ্গে যাবে! শরীরের সর্বত্র শক্তি দিয়ে উঠে দাঁড়ালাম আব্বু আমি সুস্থ আছি প্লীজ স্যালাইন দিও না।
ডাক্তার হাসতে হাসতে বললেন ইউএনও সাহেব সন্তানদের স্নেহে পাগল হয়ে গেছে সুস্থ মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে আসছেন। আমাকে সুস্থ থেকে সবাই খুশি হলো, বাসায় নিয়ে ফিরল তখন আনুমানিক ৫.৪০বাজে।আমাকে দাদুর রুমে শুইয়ে দিল যাতে গল্প করে সময়টা কেটে যায়। সময় ভালোই যাচ্ছে শরীরের কিছুটা সুস্থতা অনুভব করছি।
বাসায় টিভি অন করা ইফতারের আগের সময়টা কোরআন তেলাওয়াত হচ্ছে আমি জেগে জেগে সব শুনছি।এর মধ্যেই কাজের মেয়েটা এসে দাদুর রুমে ইফতার এনে বিছানায় সাজাতে লাগলো।জিঙ্গাস করলাম সুমি আম্মু কোথায় রে? খালাম্মা রান্না করতেছে অপনি অসুস্থ তো তাই,আজ সবাই দাদুর রুমে ইফতার করবে।শোনে খুব খুশি হলাম, কারন এতক্ষন শুয়ে শুয়ে মন খারাপ হচ্ছিল আমি অসুস্থ বলে হয়ত আব্বু,আম্মু, আপু,ভাইয়া সবাই একসাথে ইফতারি করবে।সামনে এত্তো ইফতারি আয়োজন বার বার মনে হচ্ছিল কখনো আজান হবে! ইফতার করবো লোভ হচ্ছিল। দাদু বয়স্ক মানুষ কানে কম শোনেন, তিনি এত ইফতারি দেখে ভাবলেন হয়ত আজান হয়েগেছে। রোজা খোলার দোয়া বলেই খেজুর, সরবত খেয়ে ইফতারি করলেন, আলিফ ইফতার করো আমিও সরবত খেয়ে নিলাম,খেজুর খাচ্ছি।
আম্মু কোন কাজে রুমে আসছিলেন তিনি হাসবেন না কাঁদবেন বুঝতে পারছিলেন না। দাদু আম্মুকে দেখেই বললেন সারাদিন কি করো ইফারের সময় চলে যাচ্ছে! এখনো কড়াই হাতে ঘুরছো কেন? আম্মু হাতের কড়াইটা চেয়ে দেখে বললেন মা, বুট গুলো গরম করছিলাম।দাদু আম্মুকে আরো তাড়া দিলেন যাও আজিজকে বলো ইফতারের জন্য আমি ডাকছি।
আম্মু চুপচাপ চলে গেলেন আমরা দুজন মিলে প্রায় ইফতারি শেষ করে ফেলতেছি, রুমে ভাইয়া ঢুকলো সর্বনাশ আম্মু কোথায় তুমি? আমি হেসে বললাম ভাইয়া আমার ১ রোজা করেছি।বড় আপ্পি দেখে হাসছে!ছোট বোনটা দৌঁড়ে আসলো আমাকে রেখে সবাই ইফতার করে ফেলছো ম্যা ম্যা ম্যা করে কান্না জুড়ে দিল।আব্বু টিভির সামনে মোনাজাত ধরবেন তারপর আজান শুনে টিভি বন্ধ করে ইফতার করতে দাদুর রুমে আসবেন।
কিন্তু দাদুর রুমে হৈ চৈ শুনে কান্ড কি দেখতে আসলেন, তখনো ইফতারের ৫ মিনিট বাকী মা আজান হয়নি তো! আম্মু থামিয়ে দিয়ে বললেন টিভির দিকে তাকালে আশেপাশের কিছু শোন? আব্বু বোকা হয়ে গেলেন। শোন টিভিতে আজান দিতে দেরি হয়, আমাদের মসজিদে আজান হয়েছে মা ইফতার করছেন সমস্যা নেই।দাদু যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন রোজাটা রক্ষা পেল।আম্মু টিভি বন্ধ করে দিলেন যাতে আজানের আগে ইফতার করেছেন দাদু তা বুঝতে না পারেন।আব্বুকে আড়ালে বুঝালেন দাদু বয়স্ক মানুষ, আমি বাচ্চা মানুষ আল্লাহ্ নিশ্চয় রোজা কবুল করে দিবেন।
আমরা সবাই ইফতার করলাম জীবনের প্রথম রোজা রেখেছি এই বিশ্বাসটা পরবর্তী দু-বছর ছিলো। হঠাৎ একদিন রাগ করে বড় আপ্পি বললেন তোমার রোজা হয়নি, আম্মুর কাছে সত্যিটা জানলাম খুব হাসি পেল তবে রোজা ভাঙ্গার বোকামীর জন্য আক্ষেপ রয়ে গেল।
১৪ বছরের পর আব্বু, আম্মু নিষেধ করলেও রোজা রাখলাম।আব্বু অনেক সৎ মানুষ ছিলেন তাই অনেক উচ্চপদে চাকরি করেও আমরা সাধারন ভাবে জীবনযাপন করতাম।খুব বিলাসিতা আব্বু,আম্মু পছন্দ করতেন না, তবে রমজান ঈদে, কুরবানী ঈদে সার্ধমতো আমাদের নতুন জামা দিতেন।
২০০৫ সাল, বাসায় ফ্রিজটা প্রায় ৩ মাস নষ্ট ছিলো, নতুন ফ্রিজ কিনার কথা তারা ভাবেই না। যখন হাতে বেশি টাকা আসবে তখন কিনবেন। লোন বা কিস্তি সুদ এমন অফার গ্রহন করবেন না। কারন সৎ কর্মজীবনে এক টাকা ঘুষ খাননি তাই কাউকে সুদ দিবেন না।
সেই রমজান মাসে আম্মু অনেকটা কষ্ট করে রান্না করতেন, ফ্রিজের অভাবে সব সদ্য রান্না করতে হতো, ঠান্ডা পানি খেতে ইচ্ছে করলেও পেতাম না। এটা নিয়ে আব্বুর কাছে আম্মুর কোন অভিযোগ ছিলো না।কিন্তু আব্বু বুঝতে পারতেন আম্মু রাজকীয় জীবনযাপনে অব্যস্ত এই পরিবারে তার কষ্টে হয় কিন্তু সংসারের মায়ার সব মেনে নেন।
ছোটবেলা থেকে প্রতি ঈদে নতুন কাগড় পেয়ে আসছি, হঠাৎ আব্বু আমাদের সব ভাই,বোনকে ডেকে বললেন এবার রমজান ঈদে তোমাদের কাউকে নতুন কাপড় দিব না।আমাদের সবার কিছুটা মন খারাপ হলো তবে আমার একটু বেশি, কারন আমি সাঁজতে খুব ভালোবাসি। আম্মু আমাদের বুঝালেন বাবা হয়ত টাকাটা কোন দরকারে খরচ করবে,তাই
সবাই আব্বুর সিদ্ধান্ত মেনে নিল।রমজান ঈদের আর ৫ দিন বাকি নতুন জামা পাইনি বলে খুব বেশি আক্ষেপ নেই। তবে সবাই মিলে অনুসন্ধান করতে ব্যস্ত আব্বু টাকায় দিয়ে কি করবেন কোন সুরাহা পাচ্ছিলাম না।
আব্বু তখন কিশোরগঞ্জ চাকরি করেন সপ্তাহে বৃহস্পতিবার বাসায় আসেন শনিবারে চলে যান।ঈদের ছুটিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭ টা আব্বু বাসায় ফিরছিলেন না। আম্মু,দাদুর টেনশন বেড়ে গেল, এতরাতে অফিসে কেউ নেই তখন মোবাইলের যোগাযোগ কম ছিলো।
ভাগ্যিস কল দিয়ে অফিসের পিয়নকে পেলাম,তিনি জানালেন মামনি, স্যার আজ কিশোরগঞ্জ একটা ফ্রিজের শোরুমে গিয়েছেন।
১৪সেপ্টি একটা ফ্রিজ কিনেছেন, বিকাল ৪টায় আমি স্যারকে ট্রেনে তুলে দিয়েছি ম্যাডামকে চিন্তা করতে নিষেধ করবেন। স্যার রাত ৯ টার মধ্যে ময়মনসিংহে পৌঁচ্ছবেন, আর মামনি স্যার ফ্রিজ বিষয়টা আপনাদের সারপ্রাইজ দিবেন, তাই কারো কাছে বলবেন না।আমার খুশিটা অনেক কষ্টে আটকে রাখলাম, আম্মুকে জানালাম আব্বু ট্রেনে আসছে, সবাই চিন্তামুক্ত হলো।
রাত ১০টা আব্বু বাসায় ফিরলেন ফ্রিজ দেখে সবাই খুশি, নতুন জামার কষ্ট ভুলে গেলাম।আব্বু বললেন তোমাদের সারপ্রাইজ দিতে চাইছিলাম তাই আগে বলি নাই।আম্মু সকালে বললেন সবাই রেডি হও আমরা মার্কেটে যাব, সবাই অবাক হলাম টাকা নেই তো!আম্মু মাস খরচ থেকে টাকা বাঁচিয়ে ফ্রিজের জন্য ১৩ হাজার টাকা জমিয়ে ছিলেন তা আব্বুর হাতে তুলে দিলেন। যাও বাচ্চাদের নিয়ে ঈদের শপিং করো, আব্বুর চোখে সেদিন প্রথম পানি দেখেছিলাম আম্মুর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বললেন।তোমার মতো স্ত্রী প্রতিটা ঘরে থাকলে সংসারে অশান্তি বলে কিছু থাকতো না, আমরা খুশি মনে মার্কেটে গেলাম।সবার পছন্দ মতো কাপড় কিনলাম, আব্বুর পছন্দ করে আম্মুর জন্য কাপড় কিনলেন।এই ঈদটাও জীবনের সারপ্রাইজ হয়ে রইল।
২০১৮ সাল বয়স ২৪ চলছে কিন্তু মন মানসিকতা সেই ১৪ বছরেই আটকে আছে। ছোটবেলা জনতাম আম্মু মাস্টার্স পাশ মনে মনে গেঁথে নিলাম পড়াশোনা করে মাস্টার্স পাশ করবো।পড়তে বসলে আঁকাআঁকি বেশি করতাম, গল্প,কবিতা লিখতাম,পড়তে ইচ্ছে করতো না। সবাই টেনশন করতো আমি হয়ত পাশ করতে পারবো না।আব্বু বলতেন মায়ের মতো পড়াশোনা করতে হবে! ২০১৮ সালে আমি মাস্টার্স পরীক্ষা দিলাম,১৪ আগস্ট নিজেই রেজাল্ট নিলাম Ist Classe পেলাম।
সর্ব প্রথম আব্বুকে ফোন দিয়ে জানালাম আব্বু খুব খুশি হলেন।রমজান মাস আব্বু কখনো জন্মদিনে উৎসব পছন্দ করেন না, ১৭ আগস্ট আমার জন্মদিন ছিলো আব্বু নিজেই কেক আনলেন, ধুমধাম করে বুড়ি মেয়ের ভালো রেজাল্ট আর জন্মদিনের সারপ্রাইজ দিলেন এবং জীবনের প্রথম গ্রামে গিয়ে আমরা সবাই ঈদ করলাম, আত্মীয়স্বজন সবাই আসলেন, অনেক আনন্দ করলাম, দিনটা জীবনে স্বরণীয় খাতায় চলে গেল….!
আমি এখনো ঈদে প্রচুর সাজগোজ করি,বাচ্চাদের মতো সারা বাসা ঘুরে বেড়াই।
#অনেক কিছু লেখা হয়নি তবু লেখাটা অনেক বড় হয়ে গেল, কারন আমি আমার পুরো আমিত্বটা তুলে ধরতে চেয়েছি।
বাবা মায়ের ভালোবাসার কোন তুলনা হয়না ওনারের ভালোবাসা নিঃস্বার্থ নির্ভেজাল,নিরাপদ আশ্রয়।
আমার পৃথিবীর সেরা দুজন মানুষ আম্মু,আব্বু। স্যালুট জানাই তোমাদের আদর্শকে,সততাকে,ভালোবাসা রইল আজীবনের জন্য তোমাদের জন্য।
আলিফ।
৩৮টি মন্তব্য
মাছুম হাবিবী
আপনার ছোটবেলার স্মৃতিগুলো পড়লাম। বেশ ভালো লেগেছে, ছোটবেলার রোজার দিনগুলো বেশ সুন্দর ছিল। খুব মিস করি সেইদিনগুলো। অনেক সুন্দর লিখেছেন,
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইল ভাইয়া।
ছোটবেলাটা অনেক সুন্দর, আনন্দের ছিলো, খুব মিস করি দিনগুলো।
আমার ছোটবেলা রোজা রাখা হয়নি, বড় হয়ে রোজা রাখি, তবে ছোটবেলার আনন্দটা পাই না।
আপনার সুন্দর মতামতে মুগ্ধ হলাম, দোয়া রাখবেন।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আপনার স্মৃতিচারণ অসাধারণ হয়েছে। এমন করেই সবার ভালোবাসা নিয়ে ভালো থাকুন সবসময় শুভ কামনা রইলো
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইল দিদি ভাই।
ছোটবেলাটা অনেক সুন্দর, আনন্দের ছিলো, খুব মিস করি দিনগুলো।
আপনার সুন্দর মতামতে মুগ্ধ হলাম দিদি , দোয়া রাখবেন।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ছোটবেলা আসলেই অনেক আনন্দের আর মজার।ভোলা যায় না সেইসব স্মৃতি।
সুরাইয়া নার্গিস
ঠিত তাই দিদি ভাই।
ভালো থাকবেন।
সুরাইয়া পারভীন
দারুণ উপভোগ্য ছিলো আপনার স্মৃতি রোমন্থন। দাদু নাতনির ইফতার করাটা বেশ ছিলো। ভালো থাকুন ভালোবাসায়
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ও ভালোবাসা রইল আপু।
আমাদের রোজা রাখতে দিত, এখকার বাবা মায়েরা সন্তানদের রোজা রাখতে নিষেধ করে।
ভালো থাকবেন, নিরাপদে থাকুন।
ছাইরাছ হেলাল
এমন বাবা মা পাওয়া সত্যি ভাগ্যের। এমন বড় লেখা আরও বড় হলেও ভাল-ই লাগে
ফিরে দেখা হয়ে যায় নিজের নিজেকে, ভাল কথা জানিয়েছেন, তা আমাদের তো একটু কবিতা লাগে/লাগবে।
তো অপেক্ষার শুরু করে রাখলাম।
প্রত্যেকের ই রোজায় প্রায় কমন উপাদান, একদিনে অনেক ক’টি রোজা।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ও ভালোবাসা রইল ভাইয়া।
আমি শুধু ছোটবেলাটা আমার জীবনটা সব সময় নিয়ে লিখেছি, রমজান রোজা,ঈদ, আনন্দ,কষ্ট সবটা।
অনেক সুন্দর মতামত দিলেন, ভালো লাগলো ভাইয়া।
ভালো থাকবেন, নিরাপদে থাকুন।
ইঞ্জা
আহা এতো কষ্ট করে অল্পতেই রোজা ভেঙ্গে ফেলা শুনে হাসতেই আছি, পাই পাই জুড়ে বাবার ফ্রিজ কেনা, একি ভাবে মার জমানো টাকা দিয়ে ঈদের শপিং করা, এগুলো সত্যিই চোখে পানি এনে দিলো।
লেখাটি প্রিয়তে নিলাম আপু। 😊
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইল ভাইজান।
ছোটবেলাটার স্মৃতি গুলো সত্যি অনেক আনন্দের কিছুটা বেদনার, তারপরও ভালো লাগে।
সেই সময় আব্বু সৎ ছিলো বলে ফ্রিজ নষ্ট হবার ৩মাস পর নতুন ফ্রিজ কিনতে হয়ে ছিলো।
এবারও রমজানের দুদিন আগে সেই ফ্রিজটা ১৫ বছর পর নষ্ট হয়ে গেল,পরদিন ভাইয়া নতুন ফ্রিজ নিয়ে আসলেন।
তখন আম্মু পুরনো স্মৃতিচারন করলেন অনেক ভালো লাগলো, অনেক কিছু পরিবর্তন হয়ে গেছে।
ভাইজান আপনার সুন্দর মন্তব্যে আপ্লুত হলাম, আমার লেখাটা প্রিয়তে নেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা রইল।
ভালো থাকবেন, সাবধানে থাকবেন।
শুভ কামনা রইল সবার জন্য।
ইঞ্জা
সময়ে অনেক কিছুই চেইঞ্জ হয় আপু, তেমনি দিনকাল চেইঞ্জ হয়ে গেছে, যে ফ্রিজ আব্বু এক সময় কিনতেই হিমশিম খেয়েছেন, সেই ফ্রিজ ভাই একদিন পরেই কিনে আনলেন।
ভালো থাকবেন আপু, ধন্যবাদ।
আতা স্বপন
আল্লাহ যারা ইমানদার তাদের কষ্ট নষ্ট করেন না। আপনাদের রোজা আদায় হয়ে গেছে। এটা অনিচ্ছাকৃত ভুল। কবুল করার মালিক আল্লাহ। তবে আগে আমদের বাবা মারা রোজা রাখার জন্য আমাদের উৎসাহ দিতেন। না করতেন না। এখনকার মা বাবারা পড়াশুনার অজুহাত স্বাস্থের অজুহাতে রোজা রাখতে না করেন। এটা কিন্তু ঠিক না। আপনার স্মৃতিতে জানতে পারলাম আপনার নাম আলিফ। বাহ সুন্দর নাম! আরবি প্রথম বর্ণ। আলিফ দিয়ে যার শুরু সেসব কিছু সৌভাগ্যের প্রতিক হবে এটাই স্বাভাবিক। সারাজীবন আলিফের মর্যদা অক্ষুন্ন রাখুন। আপনার সৌভাগ্যে আমরাও যাতে সৌভাগ্যের অধিকারী হতে পারি। আপনার সৎ ও আপোষহীন মা বাবাকে আমার তরফ থেকে সালাম দিবেন। ধন্যবাদ।
সুরাইয়া নার্গিস
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
তখনকার সময় আমাদের পাশের বাসার ভাই-বোন গুলোর বয়স ১৫-২৫ হবে তারা কেউ রোজা রাখত না।
বলতো পড়াশোনার ক্ষতি হবে, স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যাবে, কিন্তু আমাদের বাসায় ১২ বছরের পর রোজা বাধ্যতামূলক ছিলো।
বর্তমানে ছোটরা না বড়রাও রোজা রাখে না বলে গ্যাসের সমস্যা ইত্যাদি, আল্লাহ জানেন এদের কি হবে!
জ্বী আব্বু বলেন তখন রোজা আমার জন্য ফরজ ছিলো না তবু আমি রোজা রেখতে চেষ্টা করেছি।
তাই আল্লাহ খুশি হয়ে কবুল করে দিবেন, ধন্যবাদ সহমত পোষন করার জন্য।
আলহামদুলিল্লাহ্ আমি নিজেকে সৌভাগ্যবতী মনে করি কারন শুধু আমার পরিবার না। আমাদের বংশের যেকোন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে আমার মত নেওয়া হয়।
আমি নাহ! বললে সেখানে আর কেউ হ্যাঁ বলে না। এদিক থেকে আল্লাহ আমাকে যতেষ্ট সম্মানীত করেছেন, যতেষ্ট বুদ্ধিমতী বলে তবে বয়সে সবার ছোট।
আপনাকে আবারো ধন্যবাদ, আব্বু চাকরি জীবনে এতটাই সৎ ছিলেন যে ঘুষ নেয়নি বলে আব্বুকে ৩ বার তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।
আল্লাহ নিজ হাতে বাঁচিয়ে রেখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ্ তিনি সাফল্যের সাথে কর্মজীবন শেষ করেছেন, এখন সুস্থ আছেন।
আল্লাহ্ আপনাকে ভালো রাখুন, আপনার জন্য
দোয়া রইল। আমাদের জন্য দোয়া করেবেন।
ফয়জুল মহী
সাবলীল সুন্দর উপস্থাপন । ভালো থাকুন।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইল ভাইয়া।
আপনার জন্য দোয়া রইল,
আমার আব্বু,আম্মুর জন্য দোয়া করবেন।
ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকুন।
জিসান শা ইকরাম
আপনার প্রথম রোজার ঘটনা- স্যালাইনের ভয়ে সুস্থ হয়ে উঠে বসা, ইফতারির অল্প আগে দাদুর আর আপনার ইফতারি করা, পড়ে খুব মজা পেলাম।
আপনার আব্বু এবং আম্মুর প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। এমন বাবা মা এর সন্তান হওয়া অত্যন্ত ভাগ্যের। আপনার আব্বু যে কত বড় সৎ তা আপনার লেখায় ফুটে উঠেছে।
চমৎকার স্মৃতিমুলক লেখাটির জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
শুভ কামনা।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইল ভাইজান।
ছোটবেলা ৭-১০ বছর বয়সে আমি কিন্তু ৯০ টা রোজা রাখছিলাম সারাদিন তিনবার খেয়ে ☺
আব্বু অনেক সৎ একজন মানুষ কর্মজীবনে, বাস্তবজীবনেও অনেক ভালো মানুষ।
আমাদের কয়েক গ্রামে আব্বুর সুনাম আছে একজন ভালো মানুষ হিসাবে।
আব্বু এতটাই সৎ ছিলেন যে, কোন একজন লো১০ লক্ষ টাকা নিয়ে
সুরাইয়া নার্গিস
১০ লক্ষ টাকা আমাদের বাসায় দিয়ে যান বিনিময়ে অসৎ একজনকে লোকের স্কুল প্রতিষ্টায় একটা সাইন দিতে হবে।
আমি রাজি হননি ঘুষদানকারীকে পুলিশের ভয় দেখান।
কয়েকদিন পর ঘুষকারী লোকটা আব্বুকে হত্যার জন্য গুন্ডা নিয়োগ করে।
গুন্ডাগুলো যথা সময়ে আব্বুকে হত্যা করার জন্যর পথ আগলে দাড়ায়। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে জানতে পারেন আব্বুর সততার জন্য হত্যা করতে চায়।
সাথে সাথে ৫ জন গুন্ডা আব্বুর পায়ে ধরে ক্ষমা চায়, তাঁরা হত্যা করতে পারেনি।
আব্বুর সততায় মুগ্ধ হয়, পরদিন আব্বুর অফিসের ১০ জন অফিসারের সামনে ওই ঘুষ দেওয়া ব্যক্তিটা ক্ষমা চেয়ে সব ঘটনা বলে।
উপরের মহলে আব্বুর সততা প্রকাশ পায়, আব্বু পুরষ্কৃত হয়।
ছোটবেলা থেকেই আব্বুর সততা আমাদের গর্বের জায়গটা দখল করে রেখেছে।
আব্বু আমাদের আদর্শ, সততার জলন্ত উদাহরণ।
অন্যেক ধন্যবাদ ভাইয়া আব্বুর জন্য দোয়া করবেন, আপনার জন্যও দোয়া রইল।
জিসান শা ইকরাম
আপনার আব্বুর মত এমন সৎ অফিসার আজকাল বিরল। আমি এমন সৎ অফিসার দেখিনি। দোয়া আপনারা সমস্ত ভাইবোন যেন আপনার আব্বুর মত সৎ হতে পারেন।
আপনার আব্বুর জন্য আন্তরিক শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা।
সুরাইয়া নার্গিস
জ্বী আমরাও আব্বুর মতো হওয়ার চেষ্টা করছি, বাকিটা আল্লাহ্ ভরসা।
ভালো থাকবেন ভাইয়া, শুভ কামনা রইল।
তৌহিদ
গল্পে নিজের জীবন তুলে ধরা বড্ড কঠিন কিন্তু আপনি সহজেই তা করতে পারলেন। আপনার লিখনশৈলী মুগ্ধ করে পাঠককে।অনেক কিছু জানলাম এই লেখায়।
আপনার বাবা মা কে শ্রদ্ধা ও তাদের জন্য দোয়া রইলো। ভালো থাকবেন আপু।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ও ভালোবাসা রইল ভাইয়া।
আম্মু বলেন আমার নাকি ছোটবেলা ৫ বছরের পর থেকে সব ঘটনা বলতে পারি, এটা আমিও বিশ্বাস করি।
স্মৃতিশক্তি খুব প্রখর, মেধাবী কিনা জানি না,তবে যাই লিখি গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করি।
জীবন গল্পের মতো কারন প্রতিটা গল্পই কারো না কারো জীবন থেকে নেওয়া।
আব্বু একজন মানুষ এটা আমাদের গর্বের জায়গা, আম্মুও অনেক ভালো মানুষ।
আপনার জন্যও দোয়া রইল।
ভালো থাকবেন সব সময়ের জন্য।
সুপায়ন বড়ুয়া
ছেলেবেলার গল্পগুলো আসলে মজার।
প্রথম রোজা রাখার অভিজ্ঞতাটা ভুলার নয়।
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইল দাদা।
ছোটবেলার গল্প গুলো সত্যিই অনেক সুন্দর আর আনন্দের হয়। ছোটবেলার রোজা রাখাটা সারাজীবন স্মৃতি হয়ে থাকবে।
তবে আমার কাছে সব সময় আনন্দের হয় কারন আমি নিজেকে বয়সের ফ্রেমে বেঁধে রাখতে চাই না ৫০ বছরেও নিজেকে ১৫ বছরে দেখতে চাই।
ভালো থাকবেন দাদা দোয়া রইল, আমার বাবার জন্যও দোয়া করবেন।
কামাল উদ্দিন
সরকারি দফতরগুলোতে এখন সৎ মানুষের বড় আকাল। সৎ পথে ছোট ছোট আনন্দগুলো কতোটা বড় হয়ে ধরা দেয় তা আপনার লেখনিতে চমৎকার ভাবে ফুটে উঠেছে…….ভালোলাগা জানিয়ে গেলাম আপু।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইল ভাইয়া।
আমাদের আব্বু একজন সৎ অফিসার ছিলেন এটা আমাদের জন্য খুব গর্বের বিষয়,জীবনের অনেক সম্মান পেয়েছি আব্বুর পরিচয়ে।
আমরা রাজকীয় জীবনযাপন করি নাই তবে সুখে ছিলাম, এখনো সুখে আছি।
বর্তমানে সৎ লোক নেই বললেই চলে, সবাই টাকার গোলাম।
ভালো থাকবেন সব সময় ভাইয়া
Toriqul
মাঝে মাঝে রাগ হয় নিজের উপর,কেন যে বড় হলাম!সেই ছোট্টটি ছিলাম ভাল ছিলাম।বড় হয়ে দায়ীত্বের বোঝা বয়ে বয়ে খুব ক্লান্ত।তবুও করার কিচ্ছুটি নেই।এটাই তো নিয়ম।চলছিল-চলছে-আর চলবেও পৃথিবীর শেষ অব্দি।–সুন্দর উপস্হাপন আপু।বড্ড ভাল লেগেছে।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইল ভাইয়া।
ছোটবেলাটা সত্যিই সুন্দর ছিলো, তখন কষ্ট,চিন্তা,ভালো লাগা,খারাপ লাগা বলে কিছুই ছিলো না।
বড় না হলেই বেশি ভালো হত এটা আমারও মনে হয়, তারপরও জীবন চলছে, চলবে এটাই নিয়ম।
ভালো থাকবেন।
শুভ কামনা রইল ভাইয়া
Toriqul
কৈশর মনে পড়ে গেল।
জিসান শা ইকরাম
প্রফাইল এডিটে গিয়ে আপনার নামটা বাংলায় করে নিন।
তরিকুল ইসলাম
ধন্যবাদ
সুরাইয়া নার্গিস
ছোটবেলার সময়টা আমি সব সময় মিস করি।
ভালো থাকবেন।
হালিম নজরুল
চমৎকার স্মৃতিচারণ
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভালো থাকুন,
শুভ কামনা রইল।
সাবিনা ইয়াসমিন
একটা জীবনে কত কত স্মৃতি থাকে! তৎকালীন সময়ে যেমনই ঘটুক পরবর্তীতে সেই স্মৃতি গুলো স্মরণ করেও সুখ পাওয়া যায়। আপনার প্রথম রোজার অভিজ্ঞতা আসলেই স্মরণীয়। রোজায় আজান বিভ্রান্তির শিকার হননি এমন মানুষ খুবই কম। বিশেষ করে বাচ্চা আর বয়স্কদের ক্ষেত্রে আজান দেয়ার আগের দশ/বিশ মিনিট।
আপনার আব্বু আম্মুর প্রতি শ্রদ্ধা রাখি। সমাজে এমন সৎ এবং নিষ্ঠাবান ব্যাক্তিরা আছেন বলেই সমাজটা এখনো সম্পূর্ণ কলুষিত হয়নি।
শুভ কামনা রইলো 🌹🌹
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ও ভালোবাসা রইল আপু।
ছোটবেলাটা সব সময় সবার কাছে স্বরনীয় হয়ে থাকে, তবে বিশেষ কিছু স্মৃতির কারনে বেশি মনে পড়ে ছোটবেলাটা।
ছোটবেলার রোজাটা খুব মনে পড়ে নিশ্চয় আল্লাহ্ আমার রোজাটা কবুল করে নিয়েছেন।
দোয়া করবেন আমার আব্বুর জন্য।
ভালো থাকুন।
সুস্থ থাকবেন, শুভ কামনা রইল আপু।