শিক্ষা জাতীর মেরুদন্ড। একথাটি আমরা সবাই জানি। কিন্তু কোন শিক্ষা সেটা কি জানি? সব শিক্ষাই কি জাতীর মেরুদন্ড? যদি বলা হয় সুশিক্ষাই জাতীর মেরুদন্ড। প্রশ্নহলো কোন শিক্ষাটি সুশিক্ষা? বলা যায় সুশিক্ষা হলো সেই শিক্ষা যা মানুষকে সত্যিকারের মানুষ হতে শিক্ষা দেয়। এবার প্রশ্ন সত্যিকারের মানুষ কারা? আমরা যারা মানুষের ঘরে জম্ম নিয়েছি আমরা কি সবাই মানুষ নই? আসলে আমরা সবাই মানুষ কিন্তু সত্যিকারের মানুষ্ অর্থাৎ মানুষের জন্য নিবেদিত মানুষ নই। যার কথা পবিত্র কুরআনে আছে- সুরা আসরে - সময়ের কসম। নিশ্চই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত তারা ব্যতিত যারা ইমান এনেছে ও যারা সৎ কর্ম করছে , যারা সৎ পথে আহবান করছে এবং ধর্য্য ধারন করছে। সূরা আসরে উল্লেখিত এই তিন শ্রেনীর মানুষই হলো সত্যিকারের সুশিক্ষিত মানুষ। মোট কথা সৎ থাকা ও সৎ কর্ম করার মঝেই সুশিক্ষার প্রকাশ।

দেশের শিক্ষা সংস্কৃততি আজ ভিনদেশী কৃষ্টি কালচারে হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা চেয়েছি স্বাধীন হতে সব ধরনের গ্রাস থেকে। কিন্তু ভুখন্ড গত স্বাধীনতা পেলেও আজ আমরা মনের দিক থেকে শিক্ষা সংস্কৃতি কৃষ্টি কালচার থেকে পরাধীন হয়ে আছি। এ থেকে আমাদের বেড়িয়ে আসতে হবে। আর এই লক্ষ্যে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে দেশের কৃষ্টি কালচার নির্ভর করতে হবে। আমাদের ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে দেশপ্রেম জাগাতে হবে। পাঠ্যপুস্তকে বেশী বেশী আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরতে হবে। আজ আফসোস আমাদের ছেলেমেয়েরা হিন্দি সিরিয়াল হিন্দি গান এগুলো ভাল রপ্ত করেছে কিন্তু তারা আমাদের দেশের বীর শ্রেষ্ঠদের নাম জিজ্ঞাসা করলে বা জাতীয় দিবস গুলো কোনটা স্বাধীনতা দিবস বা বিজয় দিবস বা শহীদ দিবস ঠিক মত বলতে পারে না। আসলে আমারা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঠিক শিক্ষা দিতে পারছি না।

সংস্কৃতিতে একটি শোলক আছে- ছাত্র নং অধ্যায় নং তপ-অধ্যায়ন ছাত্রদের তপস্যা। কিন্তু ছাত্ররা আজ তপস্যার মনে করে জ্ঞান অর্জন করে না। জ্ঞান অজর্নকে সার্টিফিকেট অর্জনের হাতিয়ার ভাবে। আউট বই পড়ার কোন আগ্রহ এ প্রজম্মের নেই। আগে ছেলেমেয়েরা রবিন্দ্রনাথ নজরুল শরৎচন্দ্র হুমায়ুন আহমেদ পড়ত আজ বই পড়ার আগ্রহ কারো নেই । যাও ইন্টারনেট বা ফেসবুকের বদৌলতে পাচ্ছে তার বেশীর ভাগই শুধুমাত্র বিনোদন নির্ভর হয়ে পড়ছে। শুধু খেলাধুলা গানবাজনা আর সিনেমা নাটকের খবর তারা রাখছে। সকল শিক্ষনিয় বিষয়ে তাদের আগ্রহ কমে যাচ্ছে। তাদের মাঝে সৃজনশীলতা সৃষ্টি হচ্ছে না। যেনো কতগুলো রবোট। যেটুকু প্রোগ্রাম করা তাই বলছে। এটা কিন্তু কোন জাতীর জন্য মঙ্গল জনক হতে পারে না।

একুশে বই মেলা চলছে । আপনার সন্তানকে বই পড়ার প্রতি আগ্রহী করার এইতো সুযোগ। শিল্প সংস্কৃতি ধর্ম বিজ্ঞান ইতিহাস ঐতিহ্য বিশ্ব পরিক্রমার নানা জ্ঞান আহরনের এইতো সুবর্ণ সুযোগ। তাই সময় সুযোগ করে আদরের সন্তাটিকে সাথে করে ঘুরে আসুন জ্ঞান আর গুনীদের মেলা হতে।

0 Shares

১৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ