আমাদের নগরী

রুহুল ২৩ জানুয়ারি ২০১৬, শনিবার, ০৫:৫৩:৫৮অপরাহ্ন বিবিধ ২১ মন্তব্য

আজ একটু দেরি করেই বিছানা ছাড়লো অমলেশ। সুর্যদেব উঠার আগেই বিছানা ছাড়ার অভ্যাস। খালি পেটে পানি পান ছাড়া এককাপ চা, মেপে মেপে বিশ ক্যালোরি। এর মাঝেই দেখা মেলে সুর্যদেবের। পূর্ব আকাশে তাকিয়ে ভক্তিভরে প্রণাম করে দিন শুরু হয় তার। আজ বড্ড লেট হয়ে গেলো তার।  আধবোঝা চোখেই বালিশের পাশে হাত দিলো সে। ম্যাচবক্স টা আছে কিন্তু সিগেরেট নেই।সুর্যদেব কে প্রণাম না করায় বোধহয় আজ প্রথম এমন ঘটনা ঘটল কাজের লোক শিবশংকর ছুটি নিয়েছে আজ দুই দিন, মানে দাড়ায় আজও চা খাওয়া হবেনা। বেটার নাম শিবশংকর হলেও সারাদিন রামনাম কেনো ঝপে ভেবে পায়না অমলেশ। রাম কে কোনো কাজের দেবতা মনে হয়না অমলেশের। যে তার স্ত্রী কে রক্ষা করতে পারেনা সে কি করে দেবতা হয়? তার থেকে মনসা কাজের দেবী। ছলে বলে কৌশলে পূজা আদায় করে নিয়েছিলো সে।  নীল বর্ণের কৃষ্ণের মৌশলকাল নিয়েও সন্দেহ হয় অমলেশের।একজন রাখালের দেবতা হয়ে যাওয়া।  তার থেকে মুসলমানদের গ্রহণযোগ্য মনে হয় অমলেশের।  দেবতার বালাই নাই। আল্লাহ এক। মুহাম্মদ (সা:) তার নবী ও রাসূল। এক বাক্যে বিশ্বাসী।  যদিও শিয়া, সুন্নি, কাদিয়ানি বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে। সারকথা একটাই আল্লাহ এক। সর্বক্ষমতার অধিকারী এজ আল্লাহ। এসব ভাবতে ভাবতে বিছানা ছাড়ে অমলেশ। এক বালতি গরম পানিতে হিসাব করে তুলসী পাতা দিয়ে স্নান সেরে নিতে হবে তার। আজ যেহেতু শনিবার হিসেব মত সাত টা পাতা। জল গরম করার আগে ডেগ নিয়মশুদ্ধ করে নিতে হবে মন্ত্র পড়ে। মন্ত্রটা এরকম

সুর্যং সাক্ষি
জ্বলেং অগ্নি
জলে চ তুলসি নাস্তি
জ্বলেং প্রশান্তি।

স্নান শেষ করে একটা কলা, অর্ধেক  আপেল আর এক টুকরা পাউরুটি দিয়ে নাস্তা করলো সে। হাতের গ্লাভস, রিভলভার আর ভাজ করা যায় এমন মুখোশ টা পকেটে নিলো সে।  ব্যাগে ভোজালিটা আছে কিনা পরিক্ষা করে নিলো একবার। ভোজালির করা খুন গুলো সাধারণত নিরাপদ হয়। বুলেটের খোসার উপর পরিক্ষা করে অস্ত্র চেনা আর কতটুকু দুরত্ব থেকে গুলি করা হয়েছে এসব তথ্য উপাত্তের উপর ভিত্তি করে গোয়েন্দাসংস্থা গুলাএগিয়ে যায় খুনি ধরতে। আর ভোজালির করা খুন একদম জঞ্জাটমুক্ত। খঞ্জর এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেও ক্ষেত্রবিশেষ ঝামেল করে। সূচ এখানে আরো একধাপ এগিয়ে।  সমস্যা হয় স্পাইনাল কর্ড নিয়ে।

ভোজালি দিয়ে সুপারির পিছন থেকে আঘাত হানলে বিনা বাধায় কার্য সমাধা হয়। তবুও বাইচান্সের লাইসেন্স নাই।এসব কাজে সূচালো আর নিজ হাতে বানিয়ে নেওয়া ভোজালি টাই ভালো লাগে তার। কামারের দোকানে তিনন মাস কাজ শিখেছ অমলেশ। এরপর সরঞ্জাম যোগার করে বাসায় বসে বানিয়েছে এই ভোজালি।  অর্ডার দিয়ে বানিয়ে নেয়া যেত,   কিন্তু অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করেসে।

আজকের সুপারি টা বেশ শক্ত মাল। রাজনৈতিক ক্ষমতাই শুধু নয়,  আন্ডারওয়ার্ল্ড এর একজন মাফিয়াও বটে। খুব বড় মাফিয়া না হলেও তার নির্দেশেই ঢাকার অর্ধেক অংশ চলে। যদিও তার উপরের মাথাটা কে তা খুজে পায়নি অমলেশ।

0 Shares

২১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ