আত্মহত্যা

পুষ্পিতা আনন্দিতা ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, মঙ্গলবার, ০১:১১:৪৪অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ৫ মন্তব্য

কয়েকদিন ধরে শুধু সুইসাইডের পোস্ট আসছে নিউজফিডে। আমার লিস্টের কেউ না, তবে অন্যরা শেয়ার করছে। বেশ কয়েকটা সুইসাইড ঘটনা খুব দ্রুততম সময়ে শুনলাম। এবং প্রায় সবগুলোই ছেলে, সবগুলোর পেছনেই কারণ সেই প্রেম।

 

সুইসাইড করে কাপুরুষ অমুক তমুক এইসব উদ্ভট কথা আমি ভাবিও না, বলব ও না। মানসিক শক্তি একেকজনের একেক রকম হয়। কেউ পাহাড় চড়ে ফেলে, কেউ উচ্চতা ভয় পায়। একেকজনের মানসিক গঠনও একেকরকম। কেউ সারাক্ষণ ডিপ্রেসনের পোস্ট দিলে আমার তারে নিয়ে রীতিমত আতংক হয়। প্লিজ যারা ডিপ্রেসনে থাকেন স্পেশালিস্টের কাছে যান, তার হেল্প নেন। এখন যে সময় খুব খারাপ মনে হচ্ছে, সেইটা একসময় চলে যাবে। বছর দেড়েক আগে আমার এক ছোটভাই এমনি একটা বাজে সময়ে পরলো, সত্যি কথা ওকে নিয়ে তখন আমার ভয় লাগতো। কিন্তু সে খুব সুন্দরভাবে সব সামলে নিয়েছে। কিন্তু সবার মানসিক শক্তি তো আর সমান হয় না। কাজেই আপনারা যারা ডিপ্রেসনে আছেন প্লিজ প্রপার ট্রিটমেন্ট নেন, কাউন্সিলিং করান। একটা সময় পরে দেখবেন জীবনটাকে সুন্দর মনে হবে।

 

আর সুইসাইড করতে চাওয়া মানুষকে কেউ দয়া করে জাজ করতে যাবেন না। এইটা পুরা ছোটলোকি। কেউ কেউ গিয়ে তো রীতিমত উৎসাহ দেয়। পরশু দিন আমার সাথে আমার বরের এইটা নিয়ে কথা হচ্ছিলো। অসুস্থ মানুষের সুইসাইড করার অধিকার নিয়ে। ঋত্বিকের গুজারিশ মুভির উদাহরণ দিয়ে সে বলেছিলো যে এমন হলে তার আত্মহত্যার অধিকার থাকা উচিত। আর আমি বাঁচার পক্ষে যুক্তি দিচ্ছিলাম। আমি বরাবরই জীবনের পক্ষে। তো আমার বর এরপর একটা পোস্ট দিছে সে সুইসাইড সমর্থন করে। ওমা সেখানে এক বিশিষ্ট জ্ঞানী উকিল বাবু কমেন্ট করেছে ‘করে ফেলেন। শুভস্য শীঘ্রম!’ আমি এই লোকের কমেন্ট পড়ে অবাক হয়ে গেলাম। এনারা সব বিশাল জ্ঞানী মানুষ। যদি ওইটা বিকাশ না হয়ে সত্যি কোনো ডিপ্রেসনের রোগীর পোস্ট হতো তাইলে এমন কমেন্ট কি তারে ট্রিগারড করতো না? মানুষ এমন কমেন্ট কি করে করে?

 

রাগ হইছিলো। পরে মনে হলো এটাই স্বাভাবিক। কেউ ডিপ্রেসনে থাকলে কিছু মানুষ তারে সাপোর্ট দেওয়া দূরের কথা উল্টা খোঁচায়, জাজ করে। লাইফলেস মানুষজন যতো। মরার পরেও শান্তি নাই, গবেষণা শুরু করে। আমি কোনো মনোরোগ বিশেষজ্ঞ না। তবে আমি নিজের জীবনে খুবই বাজে সময় পার করেছি, যদি কারও কখনও মন খারাপের সময় কারও সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে নক দিতে পারেন।

 

কিন্তু সবচে জরুরী বিশেষজ্ঞ কারও সাথে কথা বলা। সময় নেন, একদিন সব আঁধার কেটে যাবে। আর যারা নেগেটিভ কথা বলবে এদের মনে মনে ইতর গালি দিয়ে পজিটিভ মানুষগুলোর কথা ভাবুন। চারপাশে প্রচুর পজিটিভ মানুষ আছে। সবচে বড় কথা কে আপনারে কিসে কিভাবে জাজ করছে না ভেবে, নিজেরেই নিজে ১০০ তে ১০০ দিয়ে বসে থাকুন।

** পুস্পিতা আনন্দিতা, নিউইয়র্ক

ছবি: গুগল থেকে নেয়া।

0 Shares

৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ