ভোর পাঁচটা,রাতের ট্রেন ষ্টেশনে থামল। ট্রেন থেকে নেমে এলো অনু, বাহিরে তখনও হালকা অন্ধকার, টিপটিপ বৃষ্টি হচ্ছে। ষ্টেশন হতে বাড়ির দুরত্ব এক কিলোমিটার, গ্রামের পথ ধরে হেঁটে যেতে হবে। রেইনকোট ও সাথে নেয়। মোবাইল,Laptop না থাকলে বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি যাওয়া যেত। একটু অপেক্ষা করি হয়তো বৃষ্টি থামবে।
ওয়েটিং রুমের চেয়ারে গিয়ে বসে মোবাইলে রেডিও অন করে পুরনো দিনের বাংলা গান শুনতে লাগল অনু। এককাপ চা হলে খুব ভালো হতো,দেখি বাহিরে কোন চা এর দোকান খোলা পায় কিনা। বাহিরে একটা টং এর দোকান খোলা আছে। দোকানে সামনে যেতেই থমকে দাঁড়ায় অনু সিল্কের কালো শাড়ি পড়া একটামহিলা দোকান থেকে চিপস নিচ্ছে,চেহারাটা খুব চেনা মনে হচ্ছে। চিপস নিয়ে পেছনে থাকাতেই মেয়েটির চোখাচোখি হয় অনুর! শান্তা নাকি!!!
শান্তা এগিয়ে আসে অনুর দিকে।
কেমন আছ অনু?
ভালো, তুমি এইখানে?
ছেলের স্কুল বন্ধতো ,তাই ওকে ওর মামার বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে আসলাম,ওর বাবা ব্যস্ত তাই আমাকে নিয়ে আসতে হলো।
কি নাম রাখলে ওর?
পূন্য।
সুন্দর নাম তো।
তো তুমি কি বাড়িতে যাচ্ছ অনু?তোমার বৌ কোথায়?
আমি এখনও বিয়ে করিনি, কে বিয়ে করবে আমার মত এই অভাগা কে!
কিছুক্ষণ চুপ থেকে শান্তা বলল আমাকে এখনও ভুলতে পারলে না অনু! অনেক কষ্ট দিয়েছি তোমাকে।আমার অহংবোধ আর দাম্ভিকতার কারণে আমাদের দাম্পত্য জীবন ও খুব একটা সুখী না।
অনু পূন্যর চেহারার দিকে নীরবে চেয়ে আছে।
বৃষ্টি একটু থেমে এল,অনু বলল আমি এখন যায়।
শান্তা বলে আমার কাছে ছাতা আছে, একছাতেই তো যেতে পারি দুজন। আর পূন্যর রেইনকোট আছে।
অনু বলে আমি ছাতা ব্যবহার করি না।
শান্তা বলল,কেন?
তোমার মনে আছে শান্তা, গ্রীম্মের এক দুপুরে তোমার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম, রৌদ্র হতে বাঁচতে আমার হাতে ছাতা ছিলো, তুমি বলে ছিলে নেক্সট টাইম আমার সাথে দেখা করতে আসলে এসব আবর্জনা নিয়ে আসবে না।
আনলে আমি কিন্তু দেখা করব না।
এরপর থেকেই আমি ছাতাকে ভয় পেতাম, তোমার বিয়ের পর আর কখনও ছাতা হাতে নেওয়া হয়নি।
শান্তা বলল বাদ দাও তো ওসব কথা অনু।
আসো ছাতার নিচে, আজ আর ভয় নেয়,আমি আছি সাথে।হেডফোন এর একতার অনু শান্তার কানে গুজে দিল। এফ এম এ গান বাজতে লাগল ,
"আজ আবার সেই পথে দেখা হয়ে গেল " ................
(যার কথা না বললেই নয়,খুব ভালোবাসি থাকে ,যিনি আমাকে সোনেলা ব্লগে লিখার অনুপ্রেরণা দেন প্রিন্স মাহমুদ)
Thumbnails managed by ThumbPress
১০টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
হ্যা , কখনও কখনও সেই ই পথে দেখা হয়ে যায় ।
ধন্যবাদ আপনার অনুপ্রেরণা দানকারী কে ও ।
অনুশঙ্কর গঙ্গোম্যাক্সিম
ধন্যবাদ, হ্যাঁ সবার আগে আমার ধন্যবাদ দিতে হয় প্রিন্স মাহমুদ ভাই কে।
নীলাঞ্জনা নীলা
ছোট গল্প একেই বলে । ভালো লিখেছেন । গানটি যথা সময়ে বেজে উঠলো 🙂
শুন্য শুন্যালয়
কতো সরল ভাষায় মন ছুয়ে গেলো …ভালো লেগেছে খুব…
অনুশঙ্কর গঙ্গোম্যাক্সিম
ধন্যবাদ -{@
নীলকন্ঠ জয়
অসাধারণ অনুদা। ছোট গল্প এমনই হয়। শেষ হইয়াও হইলোনা শেষ।
অনুশঙ্কর গঙ্গোম্যাক্সিম
ধন্যবাদ জয় দা -{@
খসড়া
সব পথ এসে মিশে গেছে শেষে তোমারই ও দুটি নয়নে।
স্বপ্ন নীলা
ঝরঝরে লেখনী,,,,,,,,,,ভাল লেগেছে
অনুশঙ্কর গঙ্গোম্যাক্সিম
-{@ ধন্যবাদ