ত্যাগেই শান্তি। তাই আপনি সচেতনভাবে ধূমপান না করে তা নিশ্চিন্তে ত্যাগ করছেন। আর আমরা যারা আপনার সম্মুখে আছি তাঁরা সচেতন, অসচেতন এবং পরোক্ষভাবে ধূমপান করে চলেছি। আপনার অসতর্কতার কারণে শিশু কিশোর বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের পাশাপাশি গর্ভবতী মাহিলা এবং অসুস্থ মানুষও তা নিজেদের অজান্তে এই বিষপান করতে বাধ্য হচ্ছে।অসুস্থ মানুষগুলো আরও অসুস্থ হচ্ছে এবং তাঁদের বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, জীবনকে সঙ্কটাপন্ন করে তুলছে। আপনি ধূমপান আইন অমান্য করার পাশাপাশি অবিবেচক হয়ে অন্য কারো জীবনে বিষ প্রয়োগ করতে পারেন না। পারেন না কাউকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে।তথাপি আপনি  অবলীলায় আপনার আশেপাশের মানুষের স্বাস্থ্যহানীর কারণ হচ্ছেন।তাঁদেরকে মৃত্যুঝুঁকির দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।

আসলে আমাদের জাতীয় চরিত্র হয়ে গেছে উল্টো।আমাদেরকে যা নিষেধ করা হয় আমরা তা মানতে নারাজ। যেখানে মানা বা নিষেধ সেখানে আমরা না মানা বা আইন অমান্য করতে মরিয়া হয়ে উঠি। যেমন ধরুন সড়কে চলাচল করতে যানবাহন এবং পথচারীদের সুনির্দিষ্ট কিছু আইন কানুন মেনে চলতে হয়। অথচ আমরা দেখি সড়কের যত্রতত্র অবৈধ গাড়ি পার্কিং গড়ে উঠেছে, যেখানে সেখানে যাত্রী উঠানামা করছে, অহেতুক অযথা উচ্চস্বরের হর্ণ বাজিয়ে নাগরিক জীবনে শব্দদূষণ সৃষ্টির পাশাপাশি শিক্ষাঙ্গন, হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে মানুষকে অসহ্য আর অতিষ্ট করে তুলছে। মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে মানুষকে গাড়ি চাপা দিচ্ছে। পাশাপাশি পথচারী মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে গাড়িচাপা পড়ে বা ট্রেনে কাটা পড়ে বেঘোরে প্রাণ দিচ্ছে। ভাসমান হকাররা বা সড়কের পাশের দোকানদাররা ফুটপাত দখল করে মানুষের নির্বিঘ্নে নিরাপদে চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছে। চালকরা অযথা অহেতুক একে অপরকে ওভারটেকিং করতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে মানুষের প্রাণ নেয়ার পাশাপাশি অনেককেই সারা জীবনের জন্য পঙ্গু করে ফেলছে। শধু কি তাই ! বৈশ্বিক প্রাণঘাতী মহামারী করোনাভাইরাস মার্চ মাসে যখন এদেশে সংক্রমণ এবং মানুষের প্রাণ কেড়ে নিতে শুরু করলো তখন সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশ আর লকডাউন উপেক্ষা করেছে যেন সানন্দে। যেহেতু আইন, সেহেতু তা ভঙ্গ করতেই হবে। মসজিদ যখন বন্ধ করে দেয়া হল তখন হঠাৎ করে মুসল্লির সংখ্যা বেড়ে গেল।পরে যখন মসজিদে বিধি-নিষেধ এবং লকডাউন শীতিল করে দেয়া হল তখন  দেখা গেল মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা হ্রাস পেতে লাগলো আর অনেকেই ফেসবুকসহ বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষণা দিতে লাগলে আমরা ঘরে আছি আপনিও ঘরে থাকুন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। বর্তমানে সবকিছু ধীরে ধীরে উন্মুক্ত করে দেয়া হচ্ছে আর বলা হচ্ছে অবশ্যই মুখে মাস্ক ব্যবহার করুণ আর তাতেই যেন আমাদের যতো অনীহা। মাস্ক না পড়লে জরিমানা করা হচ্ছে তথাপি আমরা আইন কানুন নিয়ম নীতি মানতে নারাজ তাই কে শুনে কার কথা !

যে জাতি আইন কানুন দেশের প্রচলিত নিয়ম নীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয় সে জাতি কখনোই একটা ভদ্র সুশীল শান্তিপ্রিয় নৈতিক মানবিক জাতি হিসেবে গড়ে উঠতে পারে না। যেকারণে আমাদের ব্যক্তি পরিবার সমাজ জাতি আর রাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় অনিয়ম দুর্নীতি সন্ত্রাস ঝেঁকে বসেছে।আইনের গতিকে তার নিজস্ব পথে চলতে দিতে হবে পাশাপাশি জনসাধারণকেও আইন মানতে হবে এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।আসুন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই। আইন কানুন মেনে নিজেদের জীবনকে সুরক্ষিত করি।  
0 Shares

৯টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ