অবশেষে মিমি(পর্ব-১)

পুষ্পবতী ৬ জুলাই ২০১৪, রবিবার, ১২:১৭:৫২অপরাহ্ন গল্প ১৩ মন্তব্য

চারদিক অন্ধকার হয়ে আছে বৃষ্টি আসবে,আকাশে এতো মেঘ করেছে কিছুই দেখা যাচ্ছে না,দুরের সব ঘড়বাড়ি গাছপালা গুলো দেখে মনে হচ্ছে অন্ধকারে ডুবে গেছে।ফসলের মাঠ থেকে কৃষক,রাখাল সবাই ছুটে চলেছে এই বুঝি বৃষ্টি নামলো।মিমি তার বাবার জন্য চিন্তা করছে,আর মাকে বলছে আকাশের এই অবস্থা তার বাবা ফিরে আসছেনা কেন?বলতে বলতেই হাজির হয়ে গেল মিমির বাবা রমিজ মিয়া।রমিজ মিয়া একজন কৃষক পরের জমিতে চাষ করে সংসার চালায়।অভাব,অনটনের মধ্যে থেকেও খুব সুখেই দিন চলে যাচ্ছে তাদের।

রমিজ মিয়া গ্রামের একজন সরল সোজা মানুষ।ঝগড়া ঝাটি মারামারি এইসব একদম পছন্দ করেন না।বলতে গেলে গ্রাম বাংলার একজন খাটি মানুষ।তিন ছেলেমেযে আর সহধর্মিনী আমেনা বেগম কে নিয়া তার সংসার।বড় মেয়ে মিমি ,অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী।লেখাপড়ায় খুবই ভালো।ক্লাসে সবসময়ই প্রথম ছাড়া দ্বিতীয় হয়না।মিমি তার বাবা কে খুব ভালবাসে,বাবার জন্য অপেক্ষা করে কখন বাড়ি ফিরে আসবে,এক সাথে খাবার খাবে,বাবা ও মেয়েকে খুব ভালবাসে। প্রথম সন্তানদের  সব বাবা মা ই একটু বেশি ভালবাসেন।মিমির ছুটো ভাই রাসেল ও ছুটো বোন রিমি।পরের জমিতে খেটে যা রুজগার করে তাতে সংসার চালাতে হিমছিম খেতে হয় রমিজ মিয়াকে

পাচ জনের সংসার,খরচ কম নয়,দিনের পর দিন জিনিস পত্রের দাম যে হারে বাড়ছে আয়ের পরিমান সেই হারে বাড়ছেনা,

ফলে রমিজ মিয়ার মত এমন অনেক পরিবারই ভোগান্তির শিকার হচ্ছে,এতে করে শুধু কষ্ট পাচ্ছে সমাজের নিম্নবিত্ত আর মধ্যবিত্তরা।

মিমি,রিমি আর একমাত্র ছেলে রাসেল কে নিয়ে রমিজ মিয়ার মনে হাজারো স্বপ্ন।ছেলেমেয়েদের পড়াশুনা করিয়ে মানুষের মত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে।মেয়ে দুইটাকে পড়াশুনা করিয়ে ভালো কোন ছেলের হাতে তুলে দিবে আর ছেলে পড়াশুনা শিখে বড় চাকরি করবে।এই আশা নিয়েই দিনের পর দিনের অক্লান্ত পরিশ্রম করে কাটিয়ে দিচ্ছে রমিজ মিয়া।

মিমি এইবার ক্লাস নাইন এ উঠেছে,সে কিছুটা বুঝতে পারে বাবা সংসারের জন্য কত কষ্ট করে,মিমি ভাবে পড়াশুনা শেষ করে একজন শিক্ষিকা হবে আর বাবার পাশে দাড়াবে তখন আর এত কষ্ট করতে হবেনা,সংসারের সব অভাব দূর হয়ে যাবে।

সকাল হয়ে গেছে আযানের ধবনি ভেসে আসছে মসজিদ থেকে,রমিজ মিয়ার ঘুম ভেঙ্গে গেল,ঘুম থেকে উঠে ওজু করে নামায পড়ল,তারপর পান্তা ভাত,লবন আর কাচা মরিচ দিয়ে খেয়ে বের হয়ে গেল মাঠে,এইভাবেই প্রতিদিনের জীবন চলতে থাকে

মাঠে যাওয়ার পথে দেখা হলো জলিল মিয়ার সাথে।জলিল মিয়া খুব মন খারাপ করে বসে আছে।

রমিজ মিয়া :কি ভাই কি খবর অনেক দিন ধইরা তোমার কোনো খুজ খবর নাই।

জলিল মিয়া :আছিলাম একটু দৌড়াদৌড়ির মইধ্যে।মনডা বেশি ভালা না।

রমিজ মিয়া :কি হইছে?

চলবে...

0 Shares

১৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ