অবধারিত মুক্তিযুদ্ধ –১

খসড়া ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, রবিবার, ০৪:৩৩:৪৭অপরাহ্ন বিবিধ ১৯ মন্তব্য

আগের পোস্ট  শোণিত ধারায় শানিত চেরনা

মোদের গরব মোদের আশা আ'মরি বংলা ভাষা

'বং আল' একটি অসাম্প্রদায়িক জনপদ

এই জাতির আর একটি প্রাচীন বৈশিষ্ঠ্য এই যে, অতীতে বাংলার শাসক ও শাসিতের মধ্যে  সম্পর্ক ছিল শিথিল। সাধারণ মানুষ এদেশীয় কৃষ্টি ওঠো ভাষা বহন করলেও শাসক গোষ্ঠী ভিন্ন সংস্কৃতি ও ভাষা বর্জন করত। ফলে কোন বহিরাগত রাজার আক্রমনের সময় ব্যাপক জনগোষ্ঠীর মধ্যে তেমন কোন প্রতিরোধ গড়ে  উঠত না। একারনে যুগে যুগে নতুন নতুন শাসকগোষ্ঠীর আবির্ভাব হয়েছে, কিন্তু সাধারন মানুষের প্রতিক্রিয়া হয়েছে সামান্যই। তবে সময়ের সাথে সাথে এই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। রাজা পরিবর্তনের ফলে সামাজিক জীবনে প্রত্যক্ষ ওপরোক্ষ ঘাত্ন প্রতিঘাতে  সাধারণ মানুষ রাজনীতি সমাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট হয়েছে ধীরে ধীরে। সংশ্লিষ্টতার ব্যাপক বিকাশ ঘটে ইংরেজ আমলে যাখন আধুনিক শিক্ষা ও সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশির্ননীয় অত্যাচারে মানুষের জীবন দূর্বিসহ হয়ে উঠে । লক্ষনীয় বিষয় যে উপমহাদেশের ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রথম আন্দোলন শুরু হয় এই বঙ্গ প্রদেশ থেকে যা পরবর্তিতে সর্বত্র ছড়িয়ে পরে। বগুড়া রংপুর, দিনাজপুরের ফকির মজনু শাহ্‌, নূরুলদীন, পীতাম্বরের লড়াই (১৭৬৯-১৮০০) ওহাবী ও ফারাইজী বিদ্রোহ(১৮২০-১৮২৪),সিপাহী বিপ্লব(১৮৫৭), নীল চাষীদের বিদ্রোহ(১৮৫৯-১৮৬১)এবং চট্টগ্রামের সশস্ত্র সংগ্রাম(১৯৩০)ইত্যাদি ঘটনা ধীরে ধীরে বাঙ্গালীকে একটি ইস্পাত কঠিন ও সক্রিয় জাতি হিসাবে প্রতিষ্ঠীত করেছে।এর মধ্যে বাঙ্গালী তার হাজার বছরের লালিত সুপ্ত জাতি চেতনাকে শানিত ও বিকশিত করতে পেরেছে। একারনেই ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশের বিভক্তির মধ্য দিয়ে হঠৎ করে এদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পর্কহীন পূর্বপাকিস্তান নামক একটি ভূঁইফোড় উপরাষ্ট্রের সৃষ্টি এদেশের মাটি ও মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্য হয়নি। কারন পূর্বপাকিস্তানের অস্তিত্বের অর্থই হল বাংলাদেশ বাঙ্গালী ও প্রাচীনকাল থেকে অসংখ্য প্রতিকূলতার মুখে ক্রমবিকাশমান নৃতাত্তিক,ভাষাতাত্বিক ও ভৌগোলিক স্বাতন্ত্র্য তথা নিজের মৌলিক পরিচয়কে সরাসরি অস্বীকার করে একটি বিদেশী পরিচয়কে ধারন করা।

 

পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রানুযায়ী যেমন সকল বস্তুই নিম্নশক্তি স্তরে স্থিতিশীল থাকতে পছন্দ করে তেমনি একটি জাতির মূল বিকাশধারাকে সাময়িকভাবে ভিন্নখাতে নেয়া যেতে পারে। কিন্তু কালক্রমে তা মূলধারায় ফিরে আসবেই এবং সে পথেই প্রবৃদ্ধিলাভ করবে। সুতরাং এ সত্য আমাদের পরিষ্কার ভাবে বুঝে রাখা দরকার যে, ১৯৪৭ সালের হটকারিতা সংশোধনের নিমিত্তে ১৯৭১সালের আগমন ছিল ঐতিহাসিক ভাবেই অবধারিত।

চলবে ----

0 Shares

১৯টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ