বাতাসে হাসছে আজ ঘুরে ঘুরে,
প্রলয় প্লাবন এল দ্বারে দ্বারে!
মধ্যরাতের কোলে নাচছে ময়ূর,
নীল বুকে তার জমা ছোট্ট সমুদ্দুর!
পালকে বিষন্নতা নিয়ে রাজহাঁসে,
বসে আছে ঠায় পুরাতন কার্নিশে,
বীণাপাণি হাসে মৃদুলা বাতাসে,
পুজাতো কবেই শেষ!
ভেজা গাছে মৃন্ময়ী মায়ার আবেশ,
এখানে ফার্ণের চোখে থাকে জল,
মেঘ গলে খসে পড়ে তীব্র আঁচল,
ময়ূরীরা যায় ভেসে বিরহ নদীতে,
মানবী ছোঁয়ালো তার পায়ের নুপূর,
সেই নীল স্রোতে! গহীন গাংগেতে!
কে ফিরতে চায় স্বর্গে হায়,
এমন অপার্থিব দৃশ্য ভুলে!
মেয়েটি তো বলেছিল ভালোবাসে,
এমনি প্রলয় ছিল সেদিন আকাশে!
আজ মাতাল হয়েছে স্রোত,
অলিতে গলিতে,
বাশমতী গন্ধে ঢাকা কদম্বের ডাকে,
এসছে কানাই বুঝি পশ্চিম দুয়ারে,
প্রণয় দেবতার চোখ কালিন্দী বাঁকে!
গগনে মেঘের বাঁশি,
উড়ালো খোপার ফুল পাগল জোয়ারে!
এসো হেরাক্লিয়নের মেয়ে,
ভেজা পায়ে সর্পিল সিঁড়িটা বেয়ে,
নেমে এসো ফার্ণে ঢাকা সিক্ত,
উঠানে!
ভাসব খানিক ক্ষণ নায়রী ডিঙিতে!
ভিজে যাবে কালো চুলে,
বিণুনির লাল ফিতে,
হাত দিয়ে ছোঁব সেই তীব্র গোলাপ,
মুখ ঢেকো তুমি ঈষৎ লজ্জাতে!
দাবদাহ ডেকে নিল তীব্র বর্ষণে,
মেঘের চাদর ঢাকে সংগীত আসর!
মজিয়ে জলসা অদৃশ্য তানসেনে,
বাজের আঘাতে নাকি,
হয়েছে পাথর! এখন অঝর ধারা,
ঝরে ঝরঝর!
মধ্যরাতের ঘুমজাগা শহরে,
নীরব এখন ঝড়ে,
সারেগামাপাধানির করুণ আওয়াজ!
তবু কান পেতে শোন-
দেয়ালে দেয়ালে,
কারা যেন করে যায় ঠান্ডা রেওয়াজ!
অশরীরীরা দখল নিলো কি আজ,
প্রাণবন্ত ছাদ! মরে যাওয়া চাঁদ!
গভীর স্রোতস্বিনী এলো এ শহরে,
সকরূণ ভোরে!
নেমে এসো মেয়ে,
পুরাতন দুর্গটার ভীত সিঁড়ি বেয়ে,
হাত মেলে গান গাব! রাত্রির পাখি হব,
বাজবে রুণুঝুণু তোমার নুপূর,
ঘুম ভেঙ্গে জাগবে রাত্রি দুপুর!
১০টি মন্তব্য
স্বপ্নীল মেঘ
আমি জ্ঞানী নই। কবিতার সারমর্ম টুকু আমাকে বিশ্লেষণ করে জানাবেন।
এতে আমার শিখা হয়ে যাবে। কিছু মনে করবেন নাহ।
আমি শিখার আঁকুতি নিয়ে নিবেদন জানাচ্ছি।
সৌবর্ণ বাঁধন
কবিতার সাথে জ্ঞানী হওয়ার কোন সম্পর্ক নেই প্রিয় ব্লগার। পৃথিবীর অসংখ্য কবিতার লাইন অনেকেই বোঝেনা। আমিও বুঝিনা। কবিতা কঠিন হতেই পারে। আবার সহজ হতেই পারে। এটা নির্ভর করে অবচেতনের অবস্থার উপর। কবিতা বুঝতে হলে মনোস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণে যাওয়া বিশেষ প্রয়োজন। আপাত দৃষ্টিতে অর্থহীন শব্দের অর্থ পাওয়া যায় খুজে। ধন্যবাদ জানবেন।
আরজু মুক্তা
বা হ্ বা। একটু বৃষ্টি হতেই এতো মাতম। বর্ষা আসলে নিশ্চয় কবিতা কবিতায় সয়লাব হবে।
শুভ কামনা
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ জানবেন।
সাবিনা ইয়াসমিন
এমন সুধাময়ী ভুবন ছেড়ে কেই-বা স্বর্গে যেতে চায়!
ছন্দ কাব্যের ঝরোঝরো বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছি, একটা অপার্থিব বর্ষাতির বড্ড প্রয়োজন।
“ভেজা গাছে মৃন্ময়ী মায়ার আবেশ,
এখানে ফার্ণের চোখে থাকে জল,
মেঘ গলে খসে পড়ে তীব্র আঁচল,
ময়ূরীরা যায় ভেসে বিরহ নদীতে,
মানবী ছোঁয়ালো তার পায়ের নুপূর,
সেই নীল স্রোতে! গহীন গাংগেতে!
কে ফিরতে চায় স্বর্গে হায়,
এমন অপার্থিব দৃশ্য ভুলে!
মেয়েটি তো বলেছিল ভালোবাসে,
এমনি প্রলয় ছিল সেদিন আকাশে!”
এমন লাইন গুলোর ভালোলাগায় বুঁদ হয়ে গেলে নিশ্চয় দোষের কিছু নেই!
ভালো থাকুন সৌবর্ণ। শুভ কামনা 🌹🌹
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক অনেক ধন্যবাদ মনোযোগ দিয়ে সব খেয়াল করার জন্য। শুভকামনা রইল।
হালিমা আক্তার
বর্ষার মায়াবী রূপে হারিয়েছি ঠিকানা। এলোকেশে যদি ভর করে মেঘ। ভাসিয়ে নিয়ে যেও স্রোতস্বিনীর কোন অচেনা বন্দরে। শুভকামনা। ভালো থাকবেন।
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
সত্যিই তো এমন অপার্থিব সৌন্দর্য, মায়ার বাঁধন ছেড়ে কে স্বর্গে যেতে চায় ? তবুও যে যেতে হয় নিয়তির অমোঘ লিখিত নিয়মে। মায়াবিনী ভালোবাসার অঝোর বৃষ্টিতে ভাসিয়ে নিয়ে যাক । চমৎকার ভাবনার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ভালো থেকো সতত। অফুরন্ত শুভকামনা রইলো
সৌবর্ণ বাঁধন
শুভকামনা দিদি।