অপরূপা টাঙ্গাইল শাড়ি

আরজু মুক্তা ৩১ জুলাই ২০১৯, বুধবার, ১১:৫৫:৩৫অপরাহ্ন অন্যান্য ২৩ মন্তব্য
  • বাংলাদেশ ছাড়া ভারতবর্ষ নারীদের কাছে শাড়ি শুধু একটি পোশাক নয়, একটি আবেগ। নারীর অনন্য প্রতিচ্ছবি হচ্ছে শাড়ি।  বাঙ্গালি নারীর প্রতীক!

কোনো এক রাজকন্যা

পরনে ঘাসের শাড়ি

কালো চুল ধান

বাংলার শালিধান

আঙ্গিনায় ইহাদের করছে বরণ।।(জীবনানন্দ )

আবার,

স্বাধীনতা তুমি

উঠানে ছড়ানো

মায়ের শুভ্র শাড়ির আঁচল।(শামসুুর রাহমান)

চেতনায়,মননে জড়িয়ে আছে শাড়ির নানারূপ।  আর সবকিছুর উর্দ্ধে স্থান ধরে আছে টাঙ্গাইল শাড়ি। সময়ের সাথে সাথে চলতে পারে এ শাড়ি। নারীরা বদলে নিতে পারে সময়োপযোগী করে।

একটু লক্ষ্য করলে দেখা যায় বংশ পরস্পরায় এই শাড়ির বুনন রীতি টিকে আছে ; সেই সাথে আছে রং , নকশা, উপকরণ। তাই এই শাড়ি আজও আধুনিক।

শুভ্রদেবের গান মনের অজান্তে বলতে ইচ্ছে করছে ---- "পরেছে লাল শাড়ি/খোঁপায় ফুল আর হাতে রেশমি চুড়ি। " তাঁতে বোনা সুতির শাড়ির সারিতে এগিয়ে আছে টাঙ্গাইল শাড়ি।

ইতিহাস ঘাটলেই দেখা যায়,টাঙ্গাইল জেলার সদর, দেলদুয়ার,  কালিহাতি,  বাসাইল, ও নাগরপুর উপজেলার কয়েকটি স্থানে এই শাড়ির বুনন দেখা গেলেও , বেশিরভাগ শাড়ি তৈরি হয় দেলদুয়ারের পাথরাইলে ।তাঁত শিল্পীর মতে, ১৫০/২০০ বছর ধরে এখানে এই শাড়ি তৈরি হচ্ছে।

টাঙ্গাইল শাড়ি বোনার যে মূল যন্র হাতচালিত তাঁত থাকে, তাকে বলে পিটলুম।শাড়িতে নকশা ফুটিয়ে তোলার জন্য নকশাটা প্রথমে করা  গ্রাফ কাগজে।তারপর সেই নকশা ধরে কাগজে চৌকো চৌকো ছিদ্র করা হয়। ছিদ্রে সুতো ঢুকিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয় শাড়ির নকশা। এখন নানা ধরণ ও দামের শাড়ি তৈরি হয়। দাম ৩৩০ থেকে ৮০০০০  টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

শাড়ি তৈরির জন্য সুতার যে প্রস্তুতি সেই সুতা কাটার কাজটা ৯৯ শতাংশ করেন নারীরা।

টাঙ্গাইল শাড়ি হচ্ছে বাংলাদেশি শাড়ি। আর আছে নিজস্ব স্টাইল। আর হাতের তাঁতে তৈরি সুতির যে আবেদন  তার তুলনা আর কোথাও পাওয়া যাবেনা !

আমি পূরব দেশের পূরনারী

গাগরি ভরিয়া এনেছি অমৃতবারি

এনেছি শত ব্রত পার্বণ  উৎসবে

এনেছি সারস হংস কলরব

এনেছি নব উষর সিন্ধুর

মেঘ ডমরুর সাথে মেঘ ডুমুর শাড়ি।

(কাজী নজরুল ইসলাম)

★★আসুন এই ঈদে সবাই একটা টাঙ্গাইল শাড়ি কিনি।

0 Shares

২৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ