মানুষের কাজ হলো অন্যের গীবত পরনিন্দা পরচর্চা বা সমালোচনা করা। সমালোচনা মানে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মানুষের দোষ ত্রুটি বের করা। আমরা সর্বদা অন্যের গলদ খুঁজে বেড়াই কখনোই নিজের চেহারার দিকে তাকাই না। তাকাইনা নিজের কৃতকর্মের দিকে এবং আচার আচরণের দিকেও। আর অন্যের সততা, ভাল কাজের বা কথার চর্চা করতে আমরা বড়ই কৃপণ। এতে যে অন্যকে উত্তম করার আর নিজেকে অধম করার বা ছোট করার একটা হীনমন্যতা বা সঙ্কীর্ণ মন-মানসিকতা কাজ করে নিজেদের মধ্যেই । আমরা নিজেকে মহান বড় কিছু ভাবতে খুব ভালোবাসি আর অন্যকে ছোট করেতে, হেয় করতে, পায়ের তলায় পিষ্ট করতে বেশ মজা পাই ! আদিম উন্মত্তায় আর অসভ্যতায় মেতে উঠতে বড়ই ভালোবাসি। ভালোবাসি নিজেকে রাজ-ধিরাজ আর অন্যদেরকে প্রজা ভাবতে। । মনে মনে আত্ম- সন্তুষ্টিতে ভুগি। আমিওবা কম কিসে? মিথ্যে দম্ভ, অহংকার, অহমিকা, আর্থ-সামাজিক অবস্থান, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব প্রতিপত্তি, বিত্ত বৈভবের অসম আর অশুভ প্রতিযোগিতা, মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য না করা, অন্যকে ছোট বা হেয় করে নিজেকে বড় বা মহান করে দেখা সবকিছু মিলিয়ে অনেক সময় জীবনে আমরা খেই হারিয়ে ফেলি। নিজেদেরকে হিংসুক, পরশ্রীকাতর, অমানুষ হিসেবে প্রমাণ করি  ফলে দেখা দেয় পারিবারিক, সামাজিক দুর্যোগ, মানবিক বিপর্যয় এবং অশান্তি। সৃষ্টি হয় অসহনীয় ও বিবৃতকর অবস্থা আর পরিস্থিতির ফলে পরিবারগুলো হয়ে পড়ে ভঙ্গুর। অন্যের দোষ গলদ খুঁজে বেড়ানোর পরিবর্তে নিজেদের দোষত্রুটি অনুসন্ধান করে নিজেদেরক সংশোধন করার সুযোগ দিন। আর আমাদের পরিবর্তিত আচার আচরণ মানুষকে তাঁদের আচার আচরণ পরিবর্তনে সহায়তা করি। কারো বিরুদ্ধে আঙুল তোলা সহজ কিন্তু নিজেদেরকে পরিবর্তন করে একটা সুন্দর দৃষ্টান্ত স্থাপন করা অনেক কঠিন। সামাজিক এবং মানবিক অবক্ষয়ের এই যুগে সত্য সুন্দর আর গীবত মুক্ত সমাজ উপহার দেয়া খুব জরুরী। আসুন আমরা মানবিক, সামাজিক, নৈতিক গুণাবলীর প্রত্যহিক চর্চা এবং ধর্মীয় রীতি নীতি অনুসরণ করে সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে অংশগ্রহণ করি। আসুন অন্যের আগে নিজের দোষ তালাস করে নিজেদেরকে সংশোধন করে মানবিক হই। আশা আর প্রত্যাশা মানবতার সূর্য উদিত হবে।

৪৮৩জন ৩৭৮জন
0 Shares

১২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ