আলোকছটা”(অন্ধ হিমেল অভ্র আবির)
আদিম দেবতার অভিশাপে হিমেল কবি বেঁধেছি ঘর নীহারিকা প’রে।
তপ্ত বায়ু আসে নর ও নারীর;পৃথিবীর নীড়ে,
ছিলেম বিক্ষিপ্ত জীব এক-অভিশপ্ত নগরীর।
অন্য মানবীরা এসেছিল দুর মঙ্গল গ্রহ থেকে।
লয়ে যায় মোরে-জনমের তরে,বিষাদ তুরবর হতে মরু তরু দ’লে।সবে নিরাক পড়ে’ছে ঢেড় কবি হিমেলের গায়ে।সহস্র বছর ছিনু ঘোর নিরাকে,সহস্র আঁধারে ছিনু একেলা-পথিক;
কে এনে দিলে প্রভাতি,আজি গোধূলি লগনে।
কে মোর কুঠিরে মানবী?বিকেল সাজে;কে দিলে সন্ধ্যার যুগবানি জ্বালি?মৃত্তিকা প্রদীপ হাতে।মুখ চেনা আপনার চির চেনা বুঝি;মুখোমুখি দেখিয়াছি যুগ যুগ ধরে’নীহারিকা পথে।প্রভাতে উদিলে রবি,হবে দেখা হবে কবি ফের;নারী নীরন্জনা আমি,নিশীথিনি;সেই অভিশপ্ত নগরীর।ছেড়ে দাও ক্ষণে কবি,শুল্কপক্ষের টিকিট কেটে যাবো বিদিশার বাড়ি।
নিরাক খ’শে ধীর,পুস্প ফুটিতে অধীর
আতোশী বসন্ত ডালা হাতে।যেতে দাও যেতে দাও কবি ফের আসিবো শুক সারথী;নিখিলের শ্লোক ছেড়ে ছায়া পথ ধরে।নীহারিকা প’থে কবি হিমেলের বাড়ি!
October 7, 2017
“লয়ে যাও দুটো ফুল”(অন্ধ হিমেল অভ্র আবির)
সেদিন নক্ষত্রকুলে আর করিবে না ভ্রমন কেউ,শিশির সিক্ত চালতা ফুলের প’রে।
দেবনাথ কভু নাহি ছড়াবে আভা,মিছে
মিছি,রদ্দুর তপ্ত সহস্র নীহারিকা ছ’লে।
গগনে গগনে গগনো গোস্বামি,খুঁজেছি,
ভ্রমেছি,নিখিলো-ভুস্বামী।কোথা নাহি পাই
তোমা পদধূলি।মিছিলো করেছি তারি
সাথে ভ্রমর বিংবা,কেদেছি নিরালায়।
ফিরেছি ভুবন প্রায়।হেরি নিহারিকা সনে
মম মাতঃআচলো।তাত,বরদানে যদি ফিরি
পাই;বড়জোর মোর আখুজোড়া।
ফিরিয়া ফিরিয়া চাহি,নাহি যেন কভু আসে
ক্ষণ রথ বদলের।
অন্ধত্বের গ্লানি বহিতে সদা,কোন সে দেবি
হে বিধাতা,পায়ে পায়ে আসে হাঁটি।
কিশালয়ে তারি সযতনো ভরি সিঁথায় বুলায় হাত,দেবি!আমি নহে কবি,নহে প্রাতঃপুজ্য সমরেশ সমাজপতি।
পা দুখানি ছারো তব মহীতে।অপমান করিবোধ,অন্ধলোকে নাহি থাকে সংসার,নাহি থাকে জীবনের পরাজয়।
পারো যদি করুনার ছ’লে শত ব্যাথা দিয়া
যাও মোরে;অন্ধলোকে অতিস্নেহাশিশে
পত্র পৃষ্টে তারি পুষ্প প্রস্ফুটিতো হয়।
লয়ে যাও দুটি ফুল করুনা করে।লহ বরণী
মোরে বসন্তে নীড়ে;
এমনো কহিতে কবি জাগে বর সাধ।অপবাদে
কবিমন শ্বাপদসংকুল,ক্ষমা মাগি,কবিজায়া
করেছি প্রমাদ।
October 6, 2017
“বেঁচে আছি”(অন্ধ হিমেল অভ্র আবির)
কো’টি কল্প বছর ধরে বেঁচে আছি,এই তো আমি এক অতৃপ্ত প্রাণ।
নক্ষত্রপিন্ডের সমস্ত দেবতারা আমায় চেনে
কেন আছি প’রে ছায়া পথে;
স্পর্শহীন এক আদিম বাজ পাখি।বুকের
ভেতর কুড়ে কুড়ে খাই হিংস্র;
শুকুন।তবু বেঁচে আছি, এই তো আমি।
চোখের কিনারায়,তাকিয়ে দেখো;এক
অবাধ্য নদী।আমি তার স্বপ্ন,
দেখি ঘুমহীন রাতে । মূমুর্ষূ
শরীরের হাড্ডিসার যুবক;পান্ডুর গালে
প্রত্যুষ চুমো প্রাথি।ভুল করিনি-
বেঁচে থাকার জন্য,বেঁচে আছি।
বেঁচে আছি,আদৌ ক’টিকল্প বছর ধরে।
বেঁচে আছি-অগ্নি ভস্ম ছাই হতে
বেঁচে আছি এক রত্তি অভ্র আবির হাতে।
সহস্র নীহারিকার,নগ্ন প্রতিপ্রভায়;নোলকের
নেশা করি পান।চেয়ে দেখো নারি:-
পচন ধরেছে বুকের বা পাশে,
অজস্র ঘুনপোকায়,প্লীহা কুড়ে কুড়ে খাই।
তবু বেঁচে আছি-
আজো সাড়ে তিন হাজারেরো বেশি নগ্ন
রাতের স্বপ্ন দেখি।
স্বপ্ন দেখি,অর্ধ সহস্র অগ্নিবর্ষের
স্বপ্নে দেখি নরকের কাচা আগুন,আর
তার সংকীর্ণ অলীক লহমা।
তবু বেঁচে আছি;
রক্তআবির হাতে নীহারিকা প’থে।
October 6, 2017
“শকুন”(অন্ধ হিমেল অভ্র আবির)
সহস্র শুকুনেরা এসেছে নীড়ের তটে।স্তব্দ গাঙচিল;সুদর্শন উড়ে যায় ঘরে ঘরে।অনাহুত কেউ এসেছে শান্তির নীড়ে।
মায়েদের হাহাকারে ওঠে বিমর্ষ আর্তনাদ-
খন্ডে খন্ডে ভেঙ্গে যায় প্রনয়ের বাধ,
প্রলয়ের শাখে কিছু ক্লান্ত আত্মা,ভস্ম ছায়ের মতো তারে ওড়ায়ে দাও।খাকি পোশাকের ভিতরটায় ওরা একেক্কটা প্রেত্মতা।
অন্ধ হিমেলের থলি ভরে যায় বনফুলে,মুষ্টিমেয় নিশাচল পথিক;দু হাতে তুলে দেয় অভ্র আবির।তাই নিয়ে ফিরে যায় ঘরে; প্রসন্ন মুখে দেখতে ইচ্ছে
হয় বাংলার আকাশে এত বড় চাদ।
দেখা হয়ে উঠেনি কভু;চাদের কলঙ্ক।কেউ
করেছে জরো।
নরম পায়ের আচর ভুল করে প’রে যায়-শুকুন পালকে
অনাহুত কেউ দাড় করিয়ে রেখেছে আমায় শস্মান প্রান্তরে।শুকুন মেঘে আসছে ছেয়ে…
অগ্নিবর্ষন এক বাংলার আকাশে।
“জাগো তবে”(অন্ধ হিমেল অভ্র আবির)
প্রবাল দ্বীপের নীড়ে,হলুদ জোনাকির ভিড়ে
সহস্র গ্রহাণুর তপনিঃস্বাস বায়ে;
জল আসে পাখির নীড়ে,জল আসে মায়ের
বুক ছিঁড়ে ।কাঁদো নদী আরো কাঁদো,ফাগুন এসেছে ধরায়; উলঙ্গ কৃষকেরা বৈঠার হাত তুলো । এবার উত্তাল কিশোরেরা- সবুজ পতাকায় দেহ ঢেকে,দুড়ন্ত ষাড়ের চোখে লাল কাপড় বাঁধা;
এসেছে মৃত্যু কাফন পরে,এসেছে
মায়েদের হাত ছেড়ে,বোনেদের অশ্রু নিয়ে।
কে যেন এসেছে ধরায়;শান্তির নীড়ে,গঙ্গার তীরে।সিনিগ্ধ অতল জননী বঙ্গভূমি মোর উতলা;মরি মরি হা ,নয়নের জলে ডুবে যায় কাচা,মোর কোলে অবুঝ শিশু;
মায়েদের খুন,আদৌ লেগে আছে দেখো।
জাগো,জাগো তবে জাগো হে তরুণ,জাগো
তব যুব দল।
শত্তুর করাঘাতে বাবাদের শির যায় কেটে;
প্রতিঘাতে শত শির যাও কেটে কেটে,যেন
প্রলয়ের নাদে নিহারিকা দ’লে উঠল কেঁপে কেঁপে।
October 6, 2017
১০টি মন্তব্য
আলমগীর সরকার লিটন
একসাথে বেশকয়টা কবিতা পাঠ করলাম কবি দা
বেশ লাগল অনেক শুভেচ্ছা রইল————-
আরজু মুক্তা
ভালো লাগলো কবিতাগুচ্ছ।
শুভকামনা
ইঞ্জা
বেশ ভালো লাগলো কাব্য গুচ্ছ।
শামীম চৌধুরী
এ কেন কবিতাগুচ্ছ বা সমগ্র কবিতার ভান্ডার। খুব ভাল লাগলো একসঙ্গে এতগুলি কবিতা পড়ে।
ফয়জুল মহী
অতুলনীয় রচনাশৈলী
সুপর্ণা ফাল্গুনী
বাপরে গুচ্ছ কবিতা পড়লাম। নিয়মিত লেখা পাইনা কেন? খুব ভালো লিখেন আপনি। শুভ কামনা রইলো
রোকসানা খন্দকার রুকু।
অসাধারণ কবিতাগুচ্ছ।
শুভ কামনা।
মনির হোসেন মমি
অনেকগুলো কবিতা এক সাথে দিলেন।এমনিতেই কবিতার পাঠকের চেয়ে কবি বেশী তাই পাঠক সঠিক ভাবে কোন প্রসঙ্গ ধরে মন্তব্য করবেন দ্বিধায় পড়ে যাবে।যেমন আমি,,,তবে পাঠে মুগ্ধ! একটি করে কবিতা দিন গঠনমুলক মন্তব্য নিন।
সৌবর্ণ বাঁধন
সুন্দর।
মোঃ মজিবর রহমান
একটি একটি কবিতা দিন। কবিতা পড়ে ক্লান্ত আসবেনা ভাই।
কবিতা পড়ে ভাল লাগল।