আমরা সবাই সামাজিক কেন না আমরা সমাজে বাস করি । আবার আমরা কেমন সমাজে বাস করি যে সমাজে নারী ও পুরুষ উভয় বসবাস করেন । কিন্তু আমরা নারী-সমাজ বলছি না ! সব সময়ই বলে থাকি পুরুষতান্ত্রিক সমাজ?

পুরুষতান্ত্রিক বাস করি সত্য কিন্তু সব পুরুষরাই খারাপ নন আবার সব মেয়েরাই মহীয়সী নন।

আসলে ব্যাপারটা হল এটাই ভালো মানুষ রা সব সময়ই ভালো হয়ে থাকেন। পুরুষ মহিলা সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

আপনি ট্রামে গেলেন বাসে গেলেন কোন মহিলাকেই দেখবেন না যে নিজের সীট ছেড়ে বৃদ্ধ বা বৃদ্ধা মানুষকে দিচ্ছে ¡ একজন পুরুষ দেখবেন সীট আগে ছেড়ে দেবে?
তাই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ বলে থাকি বটে কিন্তু আদপে কিছু ক্রিমিনাল গোছের লোক ছাড়া বেশীরভাগ পুরুষকে মহিলাদেরই স্বীকার হতে দেখা গেছে?

আপনি দেখুন সব জায়গায় কিন্তু মহিলা-তান্ত্রিক নিয়মই চলছে? এমনকি একটা মেয়ে কখনই আর একটা মেয়েকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে না? কারণ দেখুন মেয়েরা মেয়েদের সব থেকে বেশী হিংসে করে ,প্রকৃতপক্ষে মেয়েরাই মেয়েদের বেশী শত্রু হয়ে থাকে?

বধূ নির্যাতনে দেখুন শ্বশুরের থেকে শাশুড়ি বেশী অত্যাচার করে?
পতিতালয়ে মেয়েদের সর্বনাশ কিন্তু সেই মায়ের জাত মাসি রাই করে থাকে?
যে মেয়ের মা নেই তঁার মতো হতভাগী মনে হয় পৃথিবীতে নেই?
এখানে বাবা অত্যাচার করছেন না করছেন সেই “মা ”--তঁারা নাকি আবার মমতাময়ী নারী¡ কাকিমা জ্যাঠিমা সবাই মেয়েটাকে খাটিয়ে নিতে পারলে ভালো মনে করে! নিজের সন্তান ছাড়া কিছু মায়ের জাতেরা পরের সন্তানকে খুন করতে , ছলনা করে সম্পত্তি হাতিয়ে সোনার সংসার নষ্ট করতে ও দ্বিধাবোধ করে না ¡ কিছু মহিলা আবার নিজের ছেলে বৌকে পুড়িয়ে মারতেও পিছপা হন না?

ছেলেদের ক্ষেত্রে মা না থাকলে একটু কষ্ট হয় কিন্তু একটা মাতৃহীনা অভাগী মেয়ের মতো নরকযন্ত্রণা প্রতিপদেপদে ভোগ করতে হয় না ।

শাস্ত্রে আছে নারী হল কামিনী। শ্রীরামকৃষ্ণদেব বলেছেন মানুষ কামিনীকাঞ্চন মুক্ত হয়ে যেদিন জীবনযাপন করবেন সেদিন তিনি প্রকৃত জ্ঞান লাভ করবেন। লোভ মোহ মায়া মমতা ত্যাগী মানুষ ই চিরসুখী এবং পবিত্র আত্মার অধিকারী।
তিনি আরও বলেছেন সংসারী মানুষ কখনই শান্তিতে থাকতে পারবেন না। কামনা বাসনা অর্থ দম্ভের বিষ পিঁপড়ে তঁাকে সর্বক্ষন তাড়িয়ে বেড়াবেই? আপনি নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা পর্যবেক্ষন করে দেখবেন ---আপনার অনেক টাকা বিপুল সম্মান কিন্তু আপনি জীবনে পরম সুখ পাননি। আপনাকে শুধু জীবন ট্রেনের পিছনে ছুটে ছুটেই দিন কাটাতে হয়েছে?

একটি ঘটনা/অরুণিমা মন্ডল দাস

প্রকৃতির নিয়ম বড় নিষ্ঠুর । কারও জীবনে সুখের পর সুখ আবার কারও দুখের সীমা নেই।
এক মধ্যবিত্ত পরিবারে সুকল্যানের জন্ম । জন্ম থেকে তঁাকে সবাই ভালোবাসে খুব । মাথায় ঝাকড়া চুল । বড় বড় চোখ। বেজায় বুদ্ধি। যাইহোক সুকল্যান বাবার সপ্তম সন্তান। তাই সুকল্যানের জ্যাঠামশাই সুকল্যানকে নিজের ছেলে হিসেবে মানুষ করেছে।

যাইহোক সে যেমন পড়াশোনায় ভালো তেমনি খেলাধুলায় । স্কুলে শিক্ষকদের খুব ছাত্র ছিল সে । সবাই খুব ভালোবাসত। বই পত্র আর যাবতীয় খরচপাতি জ্যাঠা ই চালাত।

যাইহোক মাধ্যমিকে স্টার মার্ক নিয়ে পাশ করল। উচ্চমাধ্যমিকেও তাই । পরিবারের ইচ্ছে ছেলেকে ডাক্তারী পড়াবে । তাই হল । গ্রামের ছেল শহরে আ্যডজাস্ট করতে কষ্ট হলেও পরের দিকে সব সয়ে গেল। সুকল্যাণ পরিবারের মুখ রাখল ডাক্তার হয়ে গ্রামে ফিরল। গ্রামের সবাই খুশি। সুকল্যান টাকা হাতে পেয়ে দুহাতে টাকা ওড়াতে শুরু করল । নিজের পরিবার থেকে গ্রামের লোকেদের বিলোতে লাগল।

এরপরে যা ঘটল তা সত্যিই বেদনাদায়ক ও খুব দুঃখের। সুকল্যান শহরে ডাক্তারী করা কালীন এক পেশেন্ট অল্প বয়শী সুন্দরী মেয়ের প্রেমে পড়লেন আর বিয়েও করে নিলেন এমনকি মায়ের মৃত্যুর সময় ও আসতে পারলেন না ।

বেশ কিছুদিন ভালোই কাটছিল । আসলে সুখী সংসার ভগবানেরও মনে হয় সহ্য হয় না ! সুকল্যাণ খুব সুদর্শন একজন দয়ালু সরল মানুষ ছিলেন । হাসপাতালের একজন নার্স এবং একজন মহিলা টিচারের নজর পড়ল ওদের সুন্দর সংসারের প্রতি । কথায় আছে মেয়েদের ছোবল আর নজর সর্বদা এক হয়ে থাকে---কালসাপের থেকেও বিষাক্ত?

একজন ডাক্তার যতই মহাপুরুষ চরিত্রবান হন না কেন মেয়ের প্রলোভন থেকে কেউই সচরাচর বাঁচাতে পারেন না । যাই হোক সেই থেকে উনার পতন শুরু । এদিকে উনার মনে দুঃখ একটা তো ছিলই । উনার মেয়ে দুটো। কোন ছেলে নেই । সেই নিয়ে বাড়িতে অশান্তি মারধোর প্রায়ই লেগেই থাকত । তাতে মদত দিত ওই দুই প্রেমিকা । টাকার অর্ধেক ওদের পিছনে উড়িয়ে দিত । মেয়েদের আর বৌর নামে একটা টাকা ও রাখার প্রয়োজন মনে করেন নি !

অবশেষে কি হল ? মেয়েরাই মেয়েদের শত্রু? সুকল্যান নেশাগ্রস্থ ,অর্ধ পাগলের মত থাকতেন । প্রেমিকাদের পিছনে সময় নষ্ট করে বেড়াতেন

কিছুদিন বাদে দেখা গেল মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে প্রেমিকা গন পালিয়ে গেল । আবার এদিকে বৌ ও টরচার সহ্য করতে না পেরে ডিভোর্স দিল ---

বাকী থাকল দুজন মেয়ে ---তাঁদের জীবন নরক-- কোনরকমে এ ওর লাথি ঝাঁটা খেয়ে মানুষ হতে লাগল। আর সুকল্যান দুঃখে শোকে পুরো পাগল হয়ে বাড়ীতে বসে । চাকরিহীন একজন নির্জীব শিক্ষিত !

============
অরুনিমা মন্ডল দাস
কোলকাতা, ভারত
২৯ নভেম্বর' ২০১৬

0 Shares

৮টি মন্তব্য

  • অলিভার

    অসম্মান করে বলছি না তবে আপনার কথা গুলো খুব সহজেই চোখে পড়ে যদি কেউ সত্যিকার অর্থেই ব্যাপারটা দেখতে চেষ্টা করে, তখন। নির্যাতন যে পুরুষেরা একদমই করে না সেটা মোটেই বলছি না। কিন্তু একজন নারী অন্য আরেক নারীর উপর যে মানসিক এবং শারিরিক নির্যাতন চালায় তা যেন আমরা দেখেও দেখি না। একজন নারী যখন কারো পরিবারে স্ত্রীর ভূমিকায় আসে তখন শ্বাশুড়ি কর্তৃক নির্যাতিত হতে শূরু করে, আর এই নিয়ে থাকে তার প্রবল আক্ষেপ। কিন্তু এই বৌ’টিই যখন আবার তার সন্তানের মত তার মতই আরেক নারীকে বৌ করে নিয়ে আসে, আর নিজের হয় তার ছেলের বৌয়ের শাশুড়ি ঠিক তখন তার ব্যবহার, আচার-আচরণও ছেলের বৌটির জন্যে হয় ঠিক তার শাশুড়ির মত। আর ব্যপারটা এতই চিরাচরিত যে এসবের কোনটাই আমাদের চোখে বাধে না।

    বাসে ভ্রমণের সময়কার আরো একটা ব্যাপার না বলে হচ্ছে না, তাই শেয়ার করছি। পাবলিক ট্রান্সপোর্টে ভ্রমণের সময় নারীরা সচরাচর কোন বৃদ্ধ কিংবা নারীর জন্যে সিটটি ছাড়তে নারাজ, এটা খুবই কমন ব্যাপার এখন। উপরন্তু নিন্ম সামাজিক মর্যাদার কোন মহিলা যদি তার পাশেই সিট না পেয়ে দাড়িয়ে ভ্রমন করে তখনও দু’একজন নারী ব্যাপারটাকে গ্রহণ করতে পারে না, বরং সে স্থান হতে সরে গিয়ে দাড়াতে বলে। একই ঘটনা ঘটে ট্রান্সপোর্টে থাকা অসুস্থ এবং মোশন সিকনেসে ভোগা যাত্রীদের বেলাতে।

    গল্পের উদাহরণটা দারুন ছিল। তবে সমস্যা হল এসব নিয়ে কথা বলতে গেলেই প্রথমে যে কথাটি শুনতে হয় তা হল, “তুমি নারীবিদ্বেশী, তুমি পুরুষতান্ত্রীক সমাজের পুরুষ”। তাই এই নিয়ে কেউ আগ বাড়িয়ে কিছু বলতেও সাহস করে না।

    হাজার হোক, বনে বীর বেশে ঘুরে বেড়ালেও শেষ পর্যন্ত মায়ায় ঘেরা নীড়ে বীরকে ফিরতেই হয়, আর সেখানেও অপেক্ষায় থাকে কোন না কোন নারী! :p

  • নীলাঞ্জনা নীলা

    আমি নারীতান্ত্রিক কিংবা পুরুষতান্ত্রিক নই। তবে নারীদের এসব করার কারণটাও কিন্তু পুরুষই। বাসে সিট দিয়ে যে নারী বসতে দেবে আরেক নারীকে, পুরুষরা সেই নারীকেই খোঁচা দেবে। আর বিবাহিত কতোজন নারী প্রলোভনে অন্য পুরুষের কাছে যায়? সংখ্যায় কম।

    যাক অনেক কথা লিখতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু সময় আমাকে সু-সময় করে দিচ্ছেনা।
    বহুদিন পর এলেন।
    ভালো থাকুন।

  • আবু খায়ের আনিছ

    আপু আপনার প্রশ্নবোধক চিহ্নে বেশ সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল বারবার।

    পুরুষতান্ত্রিক সমাজ যেমন আছে মাতৃতান্ত্রিক বা মেয়ে/নারীতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাও আছে।

    সুন্দর কিছু বিষয় তুলে ধরেছেন, সব পুরুষেরা খারাপ নয়, আবার সব নারী মহিয়সী নয়।

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ