লাবীনের বন্ধু কাটতিন . . . (গল্প)
**
লাবীন রীতিমত ঘামছে। এত টেনশন তার সহ্য হচ্ছে না। মনে হচ্ছে ঘটনা আর কিছুদুর গড়ালেই মারামারি লেগে যাবে। লাবীনের পাশে আমেরিকা থেকে বেড়াতে আসা বন্ধু কাটতিন। কাটতিনের বাবা বাংলাদেশী হলেও মা আমেরিকান। সে এবারই প্রথম বাংলাদেশে এসেছে। সম্পর্কে বাবার দিক দিয়ে লাবীনের আত্মীয় হলেও তাদের সামনা সামনি এর আগে কখনও দেখা হয় নি। ফেসবুক, ইমু, হোয়াটসআপ, ম্যাসেঞ্জারে তারা খুবই কাছের বন্ধু।

একদিন লাবীন তাদের বাসার দ্বিতীয় তলার ব্যালকনিতে হেলান দিয়ে ম্যাসেঞ্জারে ভিডিও কল করে আড্ডা দিচ্ছে কাটতিনের সাথে। কাটতিন তার বাবার কাছ থেকে বাংলা শিখে নিয়েছে। বাংলা ভাষার প্রতি তার বিশেষ সম্মান। এর অবশ্য তিনটি কারণ আছে। প্রথম কারণ হচ্ছে বাংলা লাবীনের বাবার ভাষা। লাবীন বাবাকে ভীষণ ভালবাসে। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে বাংলা ভাষার দাবীতে বাংলাদেশের মানুষ রক্ত দিয়েছে, লাবীন জেনেছে এটা ভাষার জন্য পৃথিবীতে একমাত্র ঘটনা। তৃতীয়ত বাংলা ভাষা পৃথিবীর দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ভাষা।
কাটতিন ভিডিওতে লাবীনের সাথে কথা বলতে গিয়ে একটি জিনিস দেখে বেশ অবাক হয়েছে। সে লাবীনকে জিঙ্গের করে তুমি কী কক্সবাজার গেছো?
লাবীন : নাতো, আমি তো বাসায়। কেনো বলছো?
কাটতিন : সত্যি তুমি বাসায়? কক্সবাজার যাওনি?
লাবীন : আরে বোকা! আমি কী মিথ্যা কথা বলতে জানি? নাকি কখনও বলেছি? কিন্তু তুমি কেনো এমন বলছো বুঝতে পারছি না? এনিথিং রং?
কাটতিন: সামথিং রং!
লাবীন : যেমন! প্লিজ ক্লিয়ার।
কাটতিন : তোমাদের বাসার বারান্দা থেকে তুমি এর আগে আমার সাথে যখনই কথা বলছো তখনই দেখেছি তোমার পিছনের রাস্তায় কার, পাজারো, মার্সিডিস গাড়ি চলাচল করতে। কিন্তু আজকে দেখছি চলন্ত পানির নদীতে বিভিন্ন রং বেরঙের নৌকা চলতে। এটা তো একমাত্র সমুদ্র তীরেই সম্ভব। তাই নয় কি?
এবার লাবীন হু হু করে হেসে দিল। যেন হেসেই গড়াগড়ি যাচ্ছে। তারপর বলল,
লাবীন : নো ব্রাদার নো, নাউ আই'ম ইন আওয়ার রেসিডেন্স এন্ড মাই বেলকনি। আমি এখন আছি বাংলাদেশের একমাত্র স্বপ্ন-নগরী বেটারসিটি যাকে কেবল সিঙ্গাপুরের সাথে তুলনা করা চলে। এবং তুমি জানো আমাদের বাসা একটি অভিজাত আবাসিক এলাকায়।
কাটতিন : বুঝলাম এবং মানলাম। কিন্তু তুমি তো আমাকে কখনও বলোনি যে ফুলঝরা নদীর পানি কৃত্রিম উপায়ে তুলে তোমাদের বাসার সামনের রাস্তা দিয়ে কৃত্রিম নদী তৈরী করা হয়েছে। এবং তাতে স্রোতশ্বিনী প্রবাহ সৃস্টি করে নৌকা চালাবার ব্যবস্থা করেছে তোমাদের সরকার।
লাবীন : আরে না দোস্ত! এমন কিছু হলে তো তোমাকে বাংলাদেশে বেড়াতে আসতে বলতাম। যেগুলো দেখছো সেগুলো কৃত্রিম না, নেচারাল, একেবারে খাঁটি প্রাকৃতিক। ওগুলো বৃষ্টি আর সমুদ্রের জোয়ারের পানি। আমরা এগুলোতে এখন অভ্যস্ত। আমরা এখন শুকনা থাকলে গাড়িতে চলি, পানি আসলে নৌকাতে চলি। আমাদের প্রত্যেকের বাসায় বিশেষ করে যাদের গাড়ি আছে পাশাপাশি তাদের নৌকাও আছে। কারো কারো একাধিক নৌকা আছে। আমাদের নৌকাটি আব্বু খুলনা ডকইয়ার্ড থেকে আনিয়েছেন সাত লক্ষ টাকা দিয়ে। পাশের বাসায় সিঙ্গাপুর থেকে অত্যাধুনিক নৌকা এনেছে বিশ লক্ষ টাকা দিয়ে। ওদের নৌকাটি পানিতেও চলে, ডাঙাতেও চলে। প্রতি বাসায় নৌকা রাখাটা আমাদের আভিজাত্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই শহরের ২৫টি পয়েন্টে এখন লোকেল সিটি সার্ভিস ‘ওয়াটার টমটম’ চলে। নৌকাজট থেকে বাঁচার জন্য কর্তৃপক্ষ জলজ ট্রাফিক সিস্টেম চালু করেছে। তাদেরকে এমন একট ওয়াটার প্রুপ জেকেট দেয়া হয়েছে যেটা একটি স্বয়ংক্রীয় স্পীডবোট। পানিময় সিটি আমার খুব ভাল লাগে, আমরা এখন সবাই সাঁতার জানি। আব্বু আমাকে চল্লিশ হাজার টাকা দিয়ে সাঁতার শিখিয়েছেন।
কাটতিন : ইয়াওয়া! আমার মনে হচ্ছে চলতি বছরের জন্য এটা তোমার শ্রেষ্ট ডায়ালগ। আমি আপ্লুত, আমি অভিভূত, আমি শিহরিত! আমি আসছি সাত দিনের মধ্যেই তোমাদের বেটারসিটির রেসিডেন্সিয়াল সোসাইটির বাসায়। কাটবো সাঁতার, বাইবো নৌকা, লিখবো কবিতা।
লাবীন : সত্যি আসবে? রিয়েলী? ওহ! কী আনন্দ আকাশে বাতাসে।
ঠিক সাতদিন পর আমেরিকা থেকে কাটতিন চলে আসে বাংলাদেশে। একা একাই আসে। প্রথমে ঢাকা বিমানবন্দর তারপর সেখান থেকে ডমেস্টিক ফ্লাইটে বেটারসিটি বিমান বন্দর। লাবীনের আব্বু গাড়ী নিয়ে কাটতিনকে বাসায় নিয়ে আসে।
দুই বন্ধু পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে অনক্ষণ পর্যন্ত আনন্দ প্রকাশ করে। লাবীনের মনে হয় তাদের ঘরটি যেন আর ঘর নেই। যেন একটুকরো স্বর্গ।
দিনের বেলা লাবীন কাটতিনকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। স্কুলে নিয়ে যায়, মার্কেটে নিয়ে যায়। পার্ক, লেক, পাহাড়, নদী সবখানে দুই বন্ধু মনের সুখে ঘুরে বেড়ায়।
এভাবে দেখতে দেখতে কখন যে দুই সপ্তাহ কেটে যায় ওরা বুঝতে পারে না। এ সময়ের মধ্যে কাটতিন লাবীনের কাছ থেকে সাঁতার ও নৌকা চালানো শিখে নিয়েছে। নৌকা চালাবার সময় তাদের গাড়ির ড্রাইভার ত্রুংবোও সাথে থাকে। ত্রুংবো হচ্ছে উপজাতী চাকমা, অত্যন্ত দক্ষ, বিস্বস্ত এবং সাহসী যুবক।
কাটতিনের পাপা, মাম্মি তাদের একমাত্র ছেলেকে দশ হাজার কিলোমিটার দূরে পাঠিয়ে দিলেও ছেলের প্রতি তাদের কোন অনুভূতি নেই। তারা নিজেদের জব নিয়ে ব্যস্ত থাকে সারাদিন। হয়তো কোন সময় মেসেঞ্জারে ঢু মেরে ছেলেকে একনজর দেখে নেয়। ছেলেতো বাংলাদেশ ও তার বেস্ট ফ্রেন্ডকে পেয়ে ম্যাম্মি-পাপাকে ভুলেই গেছে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষ, অলি, গলি, খাল, নদী, নালা, পাহাড় সবকিছু কাটতিনের ভাল লাগে। সবকিছুতে যে সে তার পাপাকে খুঁজে পায়। কাটতিনের পাপার বাংলাদেশে কোন আত্মীয় নেই কিংবা থাকলেও সে জানে না। সে এতিমখানায় বড় হওয়ার পর ডিবি লটারী পেয়ে আমেরিকা চলে যায়। পরে কেমনে কেমনে আবিস্কার হয় লাবীনের আব্বু কাটতিনের আব্বুর দূর সম্পর্কের আত্মীয় হন। ওরা ছাড়া বাংলাদেশে আর কারো সাথে কাটতিনের আব্বু ইলিয়াছ সাহেবের যোগাযোগ নেই।
ধীরে ধীরে ঘনিয়ে আসে কাটতিনের চলে যাবার সময়। তার স্কুল এক মাসের বন্ধের সুযোগ নিয়ে সে বাংলাদেশে এসেছে। লাবীনকে সে জানিয়ে দেয় বড়জোর আর আটনয় দিন থাকতে পারবে। এটা শুনে লাবীনের মনটা খারাপ হয়ে যায়। কাটতিনের মন আরো খারাপ। বৃষ্টি আসলে ওরা দুই জনে বৃষ্টিতে ভিজে, কখনও ছাদে, কখনও রাস্তায়। অনেক সময় নৌকা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। দুই জনে নৌকা চালাতে পারে বলে ড্রাইভার ত্রুংবোকে আর সাথে নেয় না।
কাটতিন চলে যাবার আর একদিন বাকী। পরদিন কাটতিনের রিটার্ণ টিকেট ওকে করা হয়েছে। পাপার সাথে কথা হয়েছে, পাপা ইয়ারপোর্টে এসে নিয়ে যাবে। ওই দিন বেটারসিটিতে প্রচুর বৃষ্টি হয়। এতদিন যে বৃষ্টির জন্য ওরা অপেক্ষা করে ছিলো সব বৃষ্টিরা যেন তাদের আহবানে সাড়া দেয়। বিদায় বেলায় বৃষ্টিরা যেন কাটতিনকে বিদায় জানাতে এসেছে। বৃষ্টির শুরুর একঘন্টার মধ্যেই রাস্তায় পানি বাড়তে থাকে। বেটারসিটির মাঝে মাঝেই বিশাল বিশাল পাহাড়। পাহাড়ের পানি একসাথে নেমে নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ওদিকে ফুলঝরানদীতে সাগরের জোয়ার এলে নদীতো শহরের পানি টানেই না বরঞ্চ শহরের ভিতর সাগরের পানি ঠেলে দেয়। ফলে পানি দুই মুখি সংঘর্ষে উপরের দিকে বাড়তে থাকে, শহরে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। যেমন বৃষ্টি তেমনি সমান তালে গুডুম গুডুম বজ্রপাতও হচ্ছে। সাথে বাতাসও বইছে। এমন পরিস্থিতিতে বের হওয়ার মত পরিবেশ নেই। কাটতিন ও লাবীন দুই তলার সেই চিরচেনা বারান্দায় দাঁড়িয়ে মনের মত দৃশ্যকে সর্বোচ্চ আনন্দের সাথে উপভোগ করছে। দুপুরের দিকে বৃষ্টি থেমে যায়। আকাশে সূর্য মেঘের ঘোমটা সরিয়ে নোলক ঝুলানো বধুর মত লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে উকি দেয়। ক্রমান্বয়ে আরো ফর্সা হলে লোকেরা বাসা বাড়ি থেকে রাস্তায় কোমর সমান পানিতে নৌকা বের করতে দেখা যায়। কেউ যাচ্ছে বাজার সওদা করতে, কেউ অফিস আদালতে, কেউ বা এমনি ঘুরতে বের হচ্ছে নিজস্ব প্রাইভেট নৌকা নিয়ে। আবার কেউ কর্মস্থল থেকে ফিরছে। অনেকের আছে ছাউনিসহ নৌকা যাতে বৃষ্টিতেও ভিজবে না। অনেকের ইঞ্জিন চালিত নৌকা। এ শহরে নৌকা কারো কাছে বিলাসী দ্রব্য নয়, এটি প্রয়োজনীয় সামগ্রী। রাস্তা তথা নদীতে ট্রাফিক পুলিশকে স্পীড জেকেট দিয়ে টহল দিতে দেখা যায়।

এমন পরিস্থিতিতে কাটতিনের ইচ্ছে হয় একবার নৌকা নিয়ে ঘুরে আসতে। খুব ইচ্ছে হল। সে বন্ধু লাবীনকে বলল চল বন্ধু শেষ বারের মত নৌকা নিয়ে তোমাদের আবাসিক সোসাইটির কয়েকটি রোড ঘুরে আসি। লাবীন বন্ধুর শেস ইচ্ছাটি পূরণ করতে চাইল। কারণ এখন সব দিক শান্ত, বৃষ্টি নেই, মেঘও পরিস্কার হয়ে গেছে। রাস্তায় প্রচুর পানি আছে বটে তবে স্রোত তেমন নেই। জোয়ার টানতে শুরু করেছে, অর্থাৎ আস্তে আস্তে পানি কমে যাবে। সুতরাং তারা দুই জনে নৌকা নিয়ে বের হল। রাস্তায় তখনও কোমরের উপরে পানি। তারা সোজা গিয়ে বাম দিকে ৭ নং রোডে উঠল। ৭নং রোডে সামান্য গিয়েই একটি ছোট ব্রীজ বা কালবার্ট। ঐ ছোট খাল পাহাড় থেকে নেমে এসেছে। জোয়ার থাকলে খালের পানির তেমন গতি থাকে না। কিন্তু ভাটার সময় যখন সাগরে পানি টান দেয় তখন খালের পানির গতি বেড়ে যায়। এই খালকে অনেকে বেটারসিটির দুঃখ বলে থাকে।
সারা পৃথিবীতে নৌকা চলে ব্রিজের নীচ দিয়ে তবে বেটারসিটি এর ব্যতিক্রম। এখানে ব্রিজের উপর দিয়েও নৌকা চলে। যারা দক্ষ তারা অনায়াসে ব্রীজের উপর দিয়ে নৌকা নিয়ে চলে যাচ্ছে। অপরদিক থেকেও নৌকা আসছে এদিকে। ফলে পানি ভর্তি রাস্তায় নৌকার জ্যাম সৃস্টি হয়। অন্য সময় এখানে জলপুলিশ থাকলেও আজকে নেই। একটি কাঠের নৌকা লাবীনের প্লাস্টিক বডির নৌকার সাথে এমনভাবে ধাক্কা লাগে একটু হলে কাটতিন নৌকা থেকে পড়েই যাচ্ছিল। এটা নিয়ে লাবীনের মেজাজ গরম হয়ে যায়। সে রীতিমত ঐ নৌকার ড্রাইভারের সাথে ঝগড়া বেধে দেয়। তাদের ড্রাইভার ত্রুংবো সাথে থাকলে এতক্ষণে কয়েক ঘা বসিয়ে দিত ঐ ড্রাইভারকে। ত্রুংবো অন্যায় একদম সহ্য করতে পারে না। দুই কথা, কান কথা এসব সহ্য করতে পারে না। ঝগড়া কাটিয়ে লাবীনরা ব্রিজের দিকে এগিয়ে যায়। তখনও রাগের রেশ লাবীনের মাথায় কাজ করছিল বলে সে ব্যাপারটি খেয়াল করেনি।

ব্রীজের দুই পাশ দিয়ে পানি হু হু করে খালের দিকে টানছে। ভাটার সময় এভাবে টেনে টেনে আবাসিকের পানি খালে চুষে নেয়। তখন খুব সাবধানে নৌকা নিয়ে পার হতে হয়। লাবীন রাগের মাথায় সেটা খেয়ালে না এনেই স্বাভাবিক ভঙ্গিমায় ব্রীজের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সে যখন বিপদ বুঝতে পারে তখন দেরী হয়ে গেছে। তাদের নৌকাকে পানি ব্রীজের বাম পাশ দিয়ে খালের দিকে চুম্বকের মত টেনে নিচ্ছিল। তখন হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে লাবীন... কা_ট__তি___ ন..... করে এক চিৎকার মারে। ততক্ষণে তাদের নৌকা খালে ছু’মেরে টেনে নেয় এবং সাথে সাথে নৌকা উল্টে যায়। লাবীন এবং কাটতিন নৌকা থেকে ছিটকে পড়ে স্রোতের মাঝে হারিয়ে যায়।
চারিদিক মানুষজন, নৌকা নিয়ে হৈ হল্লা করে ছুটে আসে। একটু আগে যে ছেলেটি লাবীনদের নৌকায় ধাক্কা দিয়ে ঝগড়া বাধিয়ে দিয়েছিল সে পড়িমরি করে এসে খালে ঝাপ দেয় ওদেরকে বাঁচাবার জন্য। থানায়, ফায়ার বিগ্রেডে ফোন করা হল। স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িকে জানানো হয়।
কয়েকজন মোবাইলে লাইভ ভিডিও দিয়ে অনলাইনে ছেড়ে দিল। শিরোনাম দিল 'আমেরিকান স্কুল ছাত্রসহ দু'জন বেটারসিটির খু খালের স্রোতে ভেসে গেছে'।
লাবীন ও কাটতিনকে নিয়ে নৌকা ব্রীজের যে দিকে ডুবে গেছে পানির ভাটির স্রোত হচ্ছে তার বিপরীত দিকে। অর্থাৎ ব্রীজের নীচ দিয়েই পানি তাদেরকে টেনে নিয়ে গেছে। তাদের নৌকাটি প্লাস্টিক বডির হওয়ায় ব্রীজের কিছুদূর গিয়ে ভেসে উঠে। যে ছেলেটি প্রথম ঝাপ মেরেছিল সে নৌকাটি অনেকটা ভাটির দিকে টেনে টেনে তুলে আনে। ইতিমধ্যে আরো কয়েজন পানিতে ঝাপিয়ে পড়ে মরিয়া হয়ে লাবীন ও কাটতিনকে খুঁজতে থাকে।

কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশের উদ্ধারকারী দল ও দমকল বাহিনীর ডুবুরী দল খুনিলাল খালে চষে ফিরছে লাবীন ও কাটতিনকে। ৪০ মিনিট পর প্রায় এক কিরোমিটারটার ভাটিতে লাবীনের অজ্ঞানদেহ উদ্ধার করতে পারলেও কাটতিনকে কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না। লাবীনকে সাথে সাথে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হল, ডাক্তার জানালেন জ্ঞান ফিরতে সাত দিন লাগতে পারে।
পরদিন ভোরে এলাকার কয়েকজন মুসল্লি ফজরের নামায পড়ে ঐ ব্রিজের পাশে হাওয়া খাওয়ার উদ্দেশ্যে দাঁড়ালেন, হঠাৎ ব্রিজের নীচে তাদের চোখ আটকে যায়। ব্রীজের নিচে পিলার ও পাইপের ফাকে পা আটকে মরে আছে কাটতিন।

 

0 Shares

১১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ