বারান্দায় চৌকিতে বসে সুরেলা গলায় কোরান তিলাওয়াত করছেন মাওলানা আবুল মোকছেদ। সুরা হাশর শেষ করেছেন, এখন সুরা রাহমান ধরবেন। প্রতিদিন সকালে ফজরের নামাযের পর তিনি ঘন্টা খানেক কোরান তিলাওয়াত করেন। বছর বিশেকের পুরোনা অভ্যাস। বয়স হয়েছে, ইদানীং চোখে একটু ঝাপসা দেখেন বলে আগের মত দ্রুত গতিতে তিলাওয়াত করতে পারেন না। আল্লাহ পাক হয়তো তার চোখের দৃষ্টিকে ঝাপসা করে দিয়ে ঈমানের পরীক্ষা নিতে চাইছে ভেবে ইদানীং তিনি তিলাওয়াতের মাত্রা খানিকটা বাড়িয়েই দিয়েছেন। আগে দিনে এক ঘন্টা পড়তেন, এখন পড়েন দেড় থেকে দুই ঘন্টা। একটানা তিলাওয়াত করতে করতে গলা খানিকটা শুকিয়ে যায় তার। তিলাওয়াত থেকে একটু বিরতি নিয়ে তিনি খানিক ক্ষণ আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকেন, তারপর বলে উঠেন- কই মা হাজেরা, এক গ্লাস পানি দে তো।
- খাঁড়াও, আনতাছি। মাওলানার ডাক শুনে রান্নাঘর থেকে উত্তর দেয় ১৬ বছর বয়সী কিশোরী মেয়ে উম্মে হাজেরা।

উঠানে ঝুলতে থাকা দড়ির উপর দুটো দাঁড়কাককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন মাওলানা আবুল মোকছেদ। সেই দাঁড়কাকগুলোর দিকে তাকিয়ে আল্লাহপাকের বিস্ময়কর কীর্তিকে অনুধাবন করে আরো একবার মুগ্ধ হন তিনি। আল্লাহপাকের কি অশেষ কারবার! মানুষ, পশু পক্ষী সবকিছুর জোড়া থাকে! জোড়াবিহীন একটা প্রাণীও নাই এই দুনিয়ায়! কি আচানক ব্যাপার স্যাপার!

মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই মেয়ে হাজেরা এক গ্লাস পানি আর একটা কাঁচের পিরিচে দুটো টোষ্ট বিস্কিট মাওলানা আবুল মোকছেদের সামনে রেখে যায়। মাওলানা মেয়ের প্রত্যুতপন্নতা দেখে মুগ্ধ হন। তিনি বিস্কিট চান নি তবুও মেয়েটা বুদ্ধি করে পানির সাথে বিস্কিট নিয়ে এসেছে। তবূও মুখে একটু কপট বিরক্তির চিহ্ন এঁকে তিনি বলেন- খালি তো পানি চাইছি।
-খালি পেটে পানি খাইবা ক্যান? মুহূর্তেই উত্তর দেয় হাজেরা।

মাওলানা জানেন তার এই মেয়েটা বুদ্ধিমতী, দারুল উলম মাদ্রাসার নবম শ্রেণীর ছাত্রী সে, রোল নম্বর এক। শুধু পড়াশোনায় নয় সাংসারিক জ্ঞানেও যে মেয়েটা গাঁয়ের সেরা তা নিয়ে মাওলানা আবুল মোকছেদের মনে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। পর্দার ব্যাপারেও একেবারে খাঁটি ষোল আনা, এলাকার কেউ একটা খারাপ কথা বলতে পারবে না। মাওলানা খাশ দিলে আল্লাহপাকের কাছে দোয়া করতে থাকেন তার এই মেয়েটার যেন একটা ভাল বিবাহ হয়, এর ভবিষ্যৎ যেন সুখের হয়। ভাল একটা বিবাহের চেয়ে অধিক কাম্য আর কি আছে মেয়েদের জীবনে? অবশ্য হাজেরাই তার একমাত্র মেয়ে নয়। হাজেরার বড় আরো একটি মেয়ে আছে তার, উম্মে আয়েশা। সেও প্রায় বছর তিনেক ধরে এই বাড়িতে পাকাপাকিভাবে বসবাস করছে। বড় মেয়েটার কথা ভাবলে মুহূর্তে চোখে জল চলে আসে মাওলানা আবুল মোকছেদের। কত স্বপ্ন ছিল তার এই মেয়েটাকে নিয়ে। আলিম পাশ করার পর অনেক ধুম ধাম করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। ছেলে উপজেলার জমিয়াতুল উলম মাদ্রাসার আরবী বিভাগের শিক্ষক। আচার ব্যবহার মাশাল্লাহ অতি ভাল। এমন উচ্চ শিক্ষিত, ভদ্র জামাই পেয়ে মাওলানা খুশিই ছিলেন। কিন্ত কি আর কপাল, মেয়ের কপালে সুখ বেশি দিন সইলো না। ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে মাওলানা সাইদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর তাদের এলাকায় যে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়েছিল সেই মিছিলের নেতৃত্বে ছিল জামাতা সাইদুল। মিছিলের এক পর্যায়ে পুলিশের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ বাঁধে। সেই সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিল সাইদুল। সাইদুলের লাশ যখন বাড়িতে আসে তখন আয়েশার বুক ফাটা আর্তনাদ দেখে চোখের জল ফেলেনি এমন কেউ ছিল না এই তল্লাটে। মেয়ের চিৎকার আর কান্না দেখে বুকটা ফেটে গিয়েছিল মাওলানা মোকছেদের। তবুও তিনি মেয়েকে জড়িয়ে ধরে স্বান্তনা দিয়েছিলেন এই বলে যে -তোমার স্বামী আল্লাহর রাস্তায়, আল্লামা সাইদী সাহেবের রাস্তায় শহীদ হয়েছে। এই মৃত্যু সম্মানের, এই মৃত্যু গৌরবের, সবার ভাগ্যে এই মৃত্যু জোটে না। তুমি এক জন শহীদের স্ত্রী। আল্লাহপাক তোমার স্বামীর শাহাদতকে কবুল করুক, বল আমিন।

স্বামীর মৃত্যুর পর আয়েশা কিছুদিন শ্বশুড়বাড়িতে ছিল কিন্ত শ্বাশুড়ীর আচার ব্যবহারে বেশিদিন টিকতে পারেনি। অতঃপর এক বছরের পুত্র হাবিলকে নিয়ে একদিন পাকাপাকিভাবে তার বাড়িতে চলে আসে। মাওলানা গোপনে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। তার মৃত্যুর পর মেয়েটির কি হাল হবে ভাবতেই গা শিউরে উঠে তার। আয়েশার পুত্র হাবিলের বয়স এখন সাড়ে চার, আগামী বছর থেকে স্কুলে যাবে এমনই পরিকল্পনা। বয়স যত বাড়ছে, এর দুষ্টামির পরিমাণও যেন দিনকে দিন বাড়ছে। মাওলানা আবুল মোকছেদ বলতে গেলে প্রায় সারাক্ষণই হাবিলের দুষ্টামিতে অতিষ্ঠ থাকেন। নামাজরত অবস্থায় জায়নামাজের সামনে যেয়ে ঝিম মেরে বসে থাকে হাবিল। অনেকবার মানা করেছেন, জাহান্নামের ভয় দেখিয়েছেন তবুও কোন কাজ হয় না। মাঝে মধ্যে তার লম্বা দাড়ি ধরে টানতে টানতে বলে- নানা নানা তোমার দাঁড়ি এত লম্বা ক্যান?
মাওলানার ইচ্ছা করে হাবিলের গালে কষে একটা চড় বসিয়ে দিতে কিন্ত অনেক কষ্টে তিনি নিজেকে সংযত করেন। মন যা চায় সবসময় তা করা যায় না। শিশুদের স্নেহ করা নবীর সুন্নত, স্বয়ং রাসুল্লাহ(স) শিশুদের স্নেহ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

২)
দুপুরে জোহরের আজানের আগে মাওলানা আবুল মোকছেদ ঘন্টা খানেক ধনঞ্জয়ের চায়ের দোকানে সামনে বসে পত্রিকা পড়েন। কালাম মাষ্টার, হাবিব ব্যাপারী, ঝন্টু শেখ সহ আরো কিছু লোক চা খেতে আসে সেখানে, দেশের রাজনীতি ও সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে জমজমাট আড্ডা হয়। মাওলানা আবুল মোকছেদ সেই সব আলোচনা মন দিয়ে শুনেন তবে রাজনৈতিক কোন বিষয় নিয়ে তিনি সচরাচর তার নিজের কোন মতামত প্রকাশ করেন না। এই বিষয়টা তিনি সতর্কতার সঙ্গেই অনুসরন করেন। তিনি মসজিদের ইমাম, কোন একটি বিশেষ দলের প্রতি তার আনুগত্যের কথা প্রকাশ্যে বললে সেটা লোকজনের মধ্যে বিরুপ প্রভাব ফেলতে পারে। এমনিতে পুলিশের গুলিতে জামাই মরার পর অনেকে তার রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে নানান কথা বলে। তিন বিঘা জমি দিয়ে সংসারটা ঠিকমত না চলায় মসজিদের ইমামের চাকরীটা তার জন্য এখন অতি দরকারী। এই চাকরীর প্রতি কোন রকমের হুমকিকে গ্রহণ করার মত অবস্থা তার এই মুহূর্তে নেই।

মাওলানা আবুল মোকছেদকে দোকানের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে চেয়ার এগিয়ে দেয় দোকানী ধনঞ্জয়। বলে- বসেন মাওলানা সাব। কি চা খাইবেন রং না দুধ?
-দেও একখান দুধ চাই দাও। কি ব্যাপার আজকা এইহানে লোকজন নাই ?
-লোকজনতো সব খালেক উদ্দীনের বাড়িত গ্যাছে।
-কেন কি হইছে খালেক উদ্দীনের?
-আপনি জানেন না?
-নাতো। কি হইছে?
-খালেক উদ্দীনের ছোট মাইয়া সুইটি তো ভাইগা গেছে। তিন দিন পরে বিয়া!
- বল কি? কবে ঘটলো এই ঘটনা?
- আজ সকালে। খালেক উদ্দীন মাইয়ার বিয়ার জন্য জমি বেইচা খরচাপাতি করছে, কাইলকা হাট থেকে গরু কিনছে, এখন যার বিয়া হেই নাই। উঠানে বইসা হাউমাউ কইরা কানতাছে।
-বল কি!!

মাওলানা আবুল মোকছেদ মসজিদে আসা যাওয়ার পথে প্রায়ই খালেকউদ্দীনের ছোটমেয়েটাকে দেখতেন রাস্তার পাশে এক গাছে হেলান দিয়ে মোবাইলে কথা বলতে। মেয়েটার আদব কায়দাও তো ভাল ছিল। তাকে দেখলে সালাম দিত। সেই মেয়ে যে এই কাজ করতে পারে কে ভেবেছিল? তবে এই জাতীয় ঘটনা যে ঘটতে পারে সেটা মাওলানা আবুল মোকছেদ আগেই কিছুটা অনুমান করেছিলেন। তাই তিনি প্রায়ই জুমার খুতবায় মোবাইল, ফেসবুক, বোলগের (কি সব যে আইছে দুনিয়ায়) ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে দীর্ঘ বয়ান করতেন। এই তথাকথিত প্রগতি যে সমাজের জন্য দুর্গতি ছাড়া আর কিছু বয়ে আনবে না সেটাও ব্যাখা করে বুঝিয়েছিলেন কিন্ত কেউ কানে লাগায়নি। কথাগুলো আজ অক্ষরে অক্ষরে ফলে যাওয়ায় তিনি খানিকটা প্রীত অনুভব করেন। আজ লোকজন তার কথার মর্ম বুঝবে। তিনি খালেক উদ্দীনের উদ্দেশ্যে মনে মনে বলেন-মাইয়ারে মোবাইল কিইনা দিছস ক্যান হারামজাদা, এবার বুঝ ঠ্যালা। কথাটা বলার পরপরেই তিনি উপলব্ধি করেন যে অন্যের দুঃখে খুশি হওয়া মোটেও কোন ভাল মানুষের কাজ হতে পারেনা। তাই তিনি কয়েকবার আন্তাগফিরুল্লাহ বলে তওবা করে নেন। তিনি এই ভেবে খুশি বোধ করেন যে ভাগ্যিস মনের কথা মনেই থাকে, কেউ শুনতে পায় না। শুনতে পেলে সেটা একটা মহা কেলেঙ্কারির ব্যাপার হয়ে যেত।

চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে মাওলানা মোকছেদ আজকের পত্রিকার দিকে চোখ বুলান। প্রথমে শুধু শিরোনামগুলো পড়েন, এরপর বিস্তারিত পড়েন। দেশের খবর, বিদেশের খবর, সম্পাদকীয় কিছুই বাদ দেন না। পত্রিকা উল্টাতে উল্টাতে এক সময় বিনোদন পাতা্র দিকে নজর চলে যায় তার। সেখানে বিশাল বক্ষা এক নারীর হাস্যজ্জল ছবি, নিচে শিরোনাম- আসছে সানি লিওনের নুতুন ছবি ওয়ান নাইট ষ্ট্যান্ড। ছবি দেখেই নাউযুবিল্লাহ মেন যালেক বলে পত্রিকা গুটিয়ে ফেলেন মাওলানা আবুল মোকছেদ। বিড় বিড় করে বলেন- কি এক দিন যে আইলো, রোজ কেয়ামত আইতে মনে হয় আর বেশি দিন বাকি নাই। আজ সকালে যে কার মুখ দেইখ্যা ঘুম থেইকা উঠছি। একটার পর একটা পাপ কাম করতাছি।

কিছুক্ষণ পর কালাম মাষ্টারকে ধনঞ্জয়ের দোকানের দিকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়। কালাম মাষ্টার এক কালে মাস্টারি করতো, এখন করে রাজনীতি। আবুল কালাম মাষ্টারি ছাড়লেও নামের শেষে মাষ্টার লেখা ছাড়ে নাই। টানা বিশ বছর ধরে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার। লোকে বলে কালাম মাষ্টাররে হারানোর ক্ষমতা নাকি কারো নাই। শোনা যাচ্ছে এবার নাকি মেম্বারি ছাইড়া চেয়ারম্যানের ইলেকশনে খাড়াইবো। গ্রামের একমাত্র এই একটি লোককেই সমীহ করে চলেন মাওলানা আবুল মোকছেদ। অবশ্য সমীহ না করে উপায় নেই। কালাম মাষ্টার গ্রামের মসজিদ কমিটির সভাপতি। মাওলানাকে দেখে দূর থেকেই দরাজ কন্ঠে লম্বা সালাম দেন কালাম মাষ্টার- আস সালামু আলাইকুম ইয়া রহমতুল্লাহ মাওলানা সাব।
-ওয়ালাইকুম আস সালাম।
-তারপর আছেন কেমন?
-এই তো আল্লাহ রাখছে আর কি?আপনি কেমন আছেন?
-মাশাল্লাহ ভাল। তারপর আজকে দেশের খবর কি?
-আর দেশের খবর? নদনদীতে পানি নাই, জিনিসপত্রের দাম বাড়তাছে। লোকজন ভাল নাই।
-তয় আপনে যাই কন মাওলানা সাব আমাগো পার্টি পাওয়ারে আসার পর থাইকা জিনিসপত্রের দাম কিন্ত কমই আছে।
-তা অবশ্য আপনি ঠিকই বলেছেন মেম্বার সাব।
-এদিকে দেশে তো আবার জঙ্গী উপদ্রব দেখা দিছে। হাসিনার তো জঙ্গী ঠেকাইতে অবস্থা খারাপ।
-জঙ্গী বইলা কিছু নাই মেম্বার সাব, এগুলান সব ইহুদি নাসারাদের ষড়যন্ত্র। ইসলাম এই সব সমর্থন করে না।
-সেটাই, কি এক দিন আইলো কন দেখি? আমরা সারাজীবন চোর ডাকাত খুনী দেখছি। এখন দেখতাছি জঙ্গী, হেরা নাকি বেহেশতের আশায় এই কাম করতাছে। আমারতো মাথায় তো কিছুই ঢোকে না।
-এগুলান সব কাফেরদের চক্রান্ত। মুসলমানদের ঐক্য বিনষ্ট করতে কাফের ইহুদী নাসারাই এইসব তৈরী করছে। তয় আল্লাহর রহমতে ওগো সব চক্রান্ত একদিন ব্যর্থ হইয়া যাবে ইনশাল্লাহ। একদিন ইসলামের বিজয় কাফেলা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে ইনশাল্লাহ।
-আমিন,সুম্মা আমিন।

কালাম মাষ্টারের নজর এবার চলে যায় দোকানী ধনঞ্জয়ের দিকে। তাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন- কিরে ধনঞ্জয় তোর খবর কি?
-এই তো ভগবানের কৃপায় আছি কোন রকম।
-সামনে ভোট আইতাছে। এলাকার খোঁজ খবর কিছু রাখিস?
-জ্বি মেম্বার সাব রাখি।
-শোন এইবার আর মেম্বারের ইলেকশন করুম না , ডাইরেক্ট চেয়ারম্যানের ইলেকশন করুম। পার্টির খাতিরে সাদেক আলীর পিছনে মেলা ইলেকশন করছি, এবার ওরেই টেক্কা দিমু।
- ভাল একটা সিদ্ধান্ত লইছেন। সাদেক আলী চেয়ারম্যান কোন কাম করে নাই, আমাগো মন্দিরের সামনে রাস্তায় একটু মাটি ফেলতে নারায়ণ কাকা যে কতবার গেছে হের ওর কাছে তবুও কামটা কইরা দিল না।
- তোগো মালাউনগো উপকার কইরা আসলে ইহকাল পরকাল কোনকালেই ফায়দা নাই। তারপরও আমি চেয়ারম্যান হইলে তোগো মন্দিরের সামনের রাস্তা পাকা কইরা দিমু যা, তয় ভোট কিন্ত আমারে দিবি? একটা ভোটও যদি অন্য দিকে পড়ে তয় আল্লার কসম তোগো গোষ্ঠী শুদ্ধা ইন্ডিয়ায় পাঠামু।
-না না মেম্বার সাব একটা ভোটও অন্য দিকে পড়বো না।
-না পড়লে তো ভাল। মেম্বার সাব কইতাছস ক্যান? এখন থেইকা কবি চেয়ারম্যান সাব।
-ভুল হইয়া গেছে চেয়ারম্যান সাব। মাফ দেন।
-গত দুর্গা পুজায় তোগো দশহাজার টাকা দিলাম। কেমন করলি পুজা?
-জ্বি হইছে ভালই।
-পুজার প্রসাদ তো কিছু খাওয়াইলি না।
-খাড়ান এখনি আনতাছি।

পাঁচ মিনিটের মধ্যেই একটা বাটিতে করে কিছু নারিকেলের নাড়ু নিয়ে এসে কালাম মাষ্টারের সামনে রাখে ধনঞ্জয়। কালাম মাষ্টারে একটা নাড়ু নিয়ে নাড়ুর বাটিটা মাওলানা মোকছেদের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলেন- নেন মাওলানা সাব একখান নাড়ু নেন। এতক্ষণ পত্রিকা পড়ায় মগ্ন থাকলেও তাদের আলাপ আলোচনা সবই শুনছিলেন মাওলানা মোকছেদ। যে ব্যক্তি হিন্দুদের মন্দিরে দান খয়রাত করে তাকে আর যেই হোক তিনি যে ভোট দিবেন না সেটাও মনস্থির করেছেন। তিনি শুনেছেন যে এই নাড়ুগুলো দুর্গা পুজার প্রসাদ। এগুলো খাওয়া যে মোটেও শরীয়ত সম্মত নয় সেটাও তিনি বিলক্ষণ জানেন। তবুও বিনীত কন্ঠে তিনি বলে উঠেন- না না মেম্বার সাব, আপনেই খান। আমার পেটে সমস্যা।
-আরে খান খান, একটা খাইলে কিছু হয় না। নাড়ুটার টেষ্ট আছে। এই হিন্দুগুলান নাড়ু ভাল বানায়।
-না না আপনেই খান।
-আরে খান একটা সমস্যা নেই।

মাওলানা আবুল মোকছেদ মারাত্নক দোটানায় পড়েন। এক দিকে কালাম মাষ্টারের মত প্রভাব শালীর অনুরোধ আবার আরেক দিকে শরীয়তের বিধান। শেষমেষ দোটানায় ভুগতে ভুগতে একটা নাড়ুর সামান্য অংশ মুখে ঢুকান কিন্ত পুরোপুরি গলাধঃকরন করেন না। নাড়ু্র টুকরাটি মুখে ঢুকিয়েই তিনি বলেন- মেম্বার সাব জোহরের আযানের সময় হয়ে গেছে, আমি আজ উঠি।
-আচ্ছা ঠিক আছে।

অগ্যতা সোজা বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন মাওলানা আবুল মকছেদ। একটু সামনে ফাঁকা জায়গায় আসতেই থু থু করে মুখ থেকে নাড়ুর অংশগুলো ফেলে দেন তিনি। পাশের একটি বাড়িতে ঢুকে গৃহকর্তীকে জিজ্ঞেস করেন- তোমাদের বাসার কলপাড়টা কোন দিকে?
গৃহকর্তী কলপাড়টা দেখিয়ে দেয়। মাওলানা আবুল মোকছেদ কলপাড়ে বসে মুখে আঙ্গুল ঢুকিয়ে বমি করার চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্ত কি এক কপাল তার, অনেক চেষ্টার পরও আজ আর কোন বমি বের হয় না। মাওলানা আবুল মোকছেদ তবু চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন। তার উকাউকির শব্দ নজর কাড়ে পাশেই খেলারত দুই কিশোরের। একজন বলে- দেখ দেখ ইমাম সাব বমি করতাছে।
-মনে হয় পোয়াতি হইছে। অপর জন উত্তর দেয়।
দুই কিশোরই একসঙ্গে হাসতে থাকে। তাদের হাসির শব্দ মাওলানার কানে আসে না। তার সকল মনযোগ আবদ্ধ হয় বমি করার প্রতি। এক পর্যায়ে অনেক চেষ্টার পর সামান্য কিছু বমি বের হয়। বমিগুলো বের হওয়ার পর পরম শান্তি অনুভব করেন মাওলানা আবুল মোকছেদ। বমি করে আর কখনো এমন শান্তি পেয়েছেন বলে মনে পড়ে না তার। আজ সারাদিনের সবপাপ যেন বমি হয়ে বের হয়ে গেছে, এমনটাই মনে হতে থাকে। পাপ মোচনের আনন্দ যে পুণ্য অর্জনের আনন্দের চেয়ে কোন অংশেই কম নয় আজ তা যেন আবার নুতুন করে অনুভব করেন মাওলানা আবুল মোকছেদ। পাপ মোচনের এই বিমলান্দ তার হৃদয়ে একটা নির্মল প্রসন্নবোধের জন্ম দেয়, প্রখর মাদকতাময় একটা প্রগাঢ প্রসন্নবোধ...

0 Shares

৩৫টি মন্তব্য

  • আবু খায়ের আনিছ

    পড়ে গেলাম একটানে। খুব ভালো লিখেছেন ভাইয়া।

    মাওলানার চরিত্র দিয়ে এমন একটা দোটানায় ফেলেছেন যে কিছু বলা যাচ্ছে না। একদিকে উনি যুদ্ধপরাধীকে সমর্থন করছেন অন্যদিকে মুসলামনদের কথাও বলছেন। আবার দেশের কথাও বলছেন।

    প্রসন্নবোধ কি আর এমনি করে আসে? বমি করে নিজেকে মুক্ত করা যায় কিন্তু সবাইকে কি মুক্ত করা যায়।

    • অপার্থিব

      বমি করে মানুষ যদি ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়ীকতা, উগ্রজাতীয়তাবাদ থেকে মুক্ত হত তাহলে হয়তো ভবিষ্যতের পৃথিবীটা সত্যিই অন্য রকম হত। মাওলানা ও কালাম মাষ্টারের মত সাম্প্রদায়িক কিংবা সুবিধাবাদী সাম্প্রদায়ীক লোকেরা আমাদের সমাজেরই বাসিন্দা। আমাদের সমাজেই এরা ভদ্রলোক হিসেবে বসবাস করছে। সমাজের জন্য সাম্প্রদায়ীকতাকে জিইয়ে রাখছে।

      ধন্যবাদ পড়ার জন্য আনিস।

  • নীলাঞ্জনা নীলা

    “জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত-জালিয়াৎ খেলছ জুয়া!
    ছুঁলেই তোর জাত যাবে? জাত ছেলের হাতের নয়তো মোয়া।।
    হুঁকোর জল আর ভাতের হাঁড়ি – ভাব্‌লি এতেই জাতির জান,
    তাইত বেকুব, করলি তোরা এক জাতিকে একশ’-খান।” ———-আজ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম যদি বেঁচে থাকতেন!

    গল্পটা তো গল্প নয়।

    ভালো লাগা রেখে গেলাম।

    • অপার্থিব

      গল্পে আমাদের প্রান্তিক সমাজে লুকিয়ে থাকা সাম্প্রদায়ীকতার কথা কিছুটা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি, অবশ্য কতটা পেরেছি জানি না । এখানে মাওলানার মত সাম্প্রদায়ীক লোকেরা আমাদের ভদ্র ধার্মিক সমাজের একটা অংশ যাদের অন্তরে লুকিয়ে আছে তীব্র সাম্প্রদায়ীকতা আবার এই সমাজে আছে কালাম মাষ্টারের মত সুবিধাবাদী সাম্প্রদায়ীক যারা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করছে । এরা বমির মাধ্যমে পাপ মোচন করে নিজের জাত, ধর্ম রক্ষা করে কিন্ত এরা যদি সত্যিই বমির মাধ্যমে নিজেদের ধর্মান্ধতা , সাম্প্রদায়ীকতা থেকে মুক্ত হত , এই আফসোসটা ছড়িয়ে দিতে চেয়েছি। তাহলে হয়তো আমরা্ আজকের পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের কোন পৃথিবী পেতাম নিশ্চিত …

      ধন্যবাদ।

  • জিসান শা ইকরাম

    মুলত এই সমস্ত মাওলানারাই সমাজকে অন্ধকারে রেখেছে।
    অল্প জ্ঞানী এই সমস্ত মাওলানারা সমাজে বেশ প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়। যেহেতু আমাদের দেশের সাধারন মুসলমানরা অত্যন্ত ধর্মভীরু, এই ধরনের কোরআন তেলওয়াত করা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া এবং ইমাম এর কথা সবাই গ্রহন করে, কোন আপত্তি ছাড়াই।
    মসজিদে নামাজের আগে ধর্ম নিয়ে যা বয়ান করেন, তা দেশের বিরুদ্ধে হলেও কেহ প্রতিবাদ করেননা। সাম্প্রদায়িক সম্পৃতি এরা বোঝেই না। প্রচন্ড হিন্দু বিদ্দেশী হয় এরা, সাধারন মুসলীমদের অন্য ধর্মের মানুষ বিশেষ করে হিন্দুদের প্রতি শত্রু ভাবাপন্ন এরাই করে।
    আর এদের অধিকাংশই পাকিদের সমর্থনকারী হয়, এরাই রাজাকার সমর্থক।

    অত্যন্ত ভাল একটি লেখার জন্য ধন্যবাদ।

    • অপার্থিব

      শহরভিত্তিক মাওলানাদের একাংশ সাম্প্রদায়ীক মনোভাবের হলেও এরা সেটা খুব একটা প্রকাশ করে না, জঙ্গীবাদী কার্যকলাপের প্রতি এদের এক ধরনের মৌন সমর্থন থাকলেও এরা নিজে কখনো জঙ্গীবাদী কার্যকলাপে জড়াবে না। তবে গ্রাম ভিত্তিক মাওলানাদের অনেকেই সাম্প্রদায়ীকতা প্রকাশের ক্ষেত্রে অনেকটাই খোলামেলা। এরা প্রগতি বা প্রযুক্তি থেকে নিজেদের দূরে রাখে। গ্রামের মানুষদের একটা বড় অংশের কাছে এরা শ্রদ্ধার পাত্র হওয়ায় অনেকে এদের বক্তব্য দ্বারা প্রভাবিত হয়। এদের কার্যকলাপ ও জুমার খুতবায় কি বলা হচ্ছে সেটা সরকারের খেয়াল রাখা জরুরী।

      ধন্যবাদ।

  • মৌনতা রিতু

    অনেক গুরুত্বপূর্ণ লেখা।
    আসলে এইসব জাতের বজ্জাত সব ধর্মেই আছে। আমি তিন বছর ঘোষপাড়ায় থেকে দেখে এসেছি অনেকেই আমরা আসার পরে গোবর দিয়ে তাদের বারন্দা ও তুলসির যায়গার উঠোনটা ভালো করে ধুয়ে ফেলে। ছোটবেলায় একবার মন্দিরে গেছিলাম দেখে পন্ডিত মশাই বিরাট জোরে ধমক লাগাইছিল।
    সব ধর্মেই কিছু না কিছু বদ আছে। এটা আসলে মানসিক সমস্যা। আমার উনি শবেবরাতের দিনে একবার ধনান্জয়ের মতো বাড়িতে খেয়েছিল, কৈ জাত তো যেতে দেখিনি। ওখানেই ঐ দিন তার রিজিক ছিল তাই সে খেয়েছে। ইবাদত এক জিনিস আর এসব অন্য জিনিস।

    লালনের গানটা মনে পড়ছে, লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে”
    আমাদের মওলানারা ভুয়া কিছু হাদিস নিজেদের ইচ্ছেমতো সাজিয়ে রেখেছে।

    • অপার্থিব

      হ্যা, সব ধর্মেই এই জাতীয় সাম্প্রদায়ীক দৃষ্টি ভঙ্গী ধারন করা লোক জন থাকে। এরা খাবার থেকে শুরু করে পোশাক সব কিছুতেই ধর্মের লেবাস লাগায় কিংবা ধর্মীয় মানদণ্ডে বিচার করতে চায় । বাংলাদেশে যেহেতু মুসলিমরাই সংখ্যাগরিষ্ট কাজেই মুসলিমদের মধ্যে থাকা সাম্প্রদায়ীকতার বিরুদ্ধেই বেশি করে প্রতিরোধ গড়ে উঠা উচিত।

      ধন্যবাদ।

  • ইলিয়াস মাসুদ

    প্রান্তিক সমাজের খুটিনাটি খুব সুন্দর করে তুলে এনে বর্ননা করেছেন, সব সময় আপনার লেখা আমার ভাল লাগে, এটাও অনেক ভাল লাগল।

  • ছাইরাছ হেলাল

    সাম্প্রদায়িকতার বিষ বাষ্প ক্রমান্বয়ে আমাদের গ্রাস করে ফেলছে,
    যতই নিজেদের আধুনিক ভাবে এক সময় আর তা দেখি না।
    কখনও কখনও রাজনৈতিক কুটিলতা গোদের উপর বিষ ফোড়া হয়ে জেঁকে বসছে।
    একটি ভাল লেখা পড়লাম।

  • গাজী বুরহান

    লেখাটি পড়লাম, ভালো লাগল।

    কিছু কথা…
    এখানে হুজুর চরিত্রের যে লোকটি তার মাধ্যমে আপনি বুজাতে চাচ্ছিলেন লোকটি

    * তিনি সাঈদী ভক্ত তাই তিনি রাজাকারদের সাপোর্ট করেন তাঁর অর্থ তিনি পাকিস্তানিদেরও সাপোর্ট করেন।

    * তিনি সাম্প্রদায়িক।

    আমার কথা…
    ভাই আমিও প্রচন্ড সাঈদী ভক্ত, তবে ভুল বুঝবেন না। আমার বাবাকে বলা হয় আওয়ামীলীগের দাদা। আমাদের পুরো পরিবার এবং এ এলাকাটি আওয়ামীলীগার। সেই সুত্রে আমিও আওয়ামীলীগ সাপোর্ট করি। তবে কেন সাঈদী ভক্ত?
    কারণ
    আমরা বিশ্বাস করি সাঈদী এবং যুদ্ধাপরাধী সম্পুর্ণ ভিন্ন বিষয়।
    হয়ত হুজুর চরিত্রের লোকটিও তেমনই। আবার হতে পারে তিনিও হুজুর তাই তিনি একজন আলেমের প্রতি দুর্বল।
    এও হতে পারে তিনি তাঁর মেয়েকে সান্ত্বনা দেবার জন্যই এ কথা বলেছিলেন।

    # এবার আসি সাম্প্রদায়িকতা প্রসঙ্গ…

    ভাইয়া এটাকে যদি সাম্প্রদায়িকতা বলে তবে ভারতে প্রতিদিন সাপ্রদায়িক দাঙ্গায় সংখ্যালঘূরা নিহত/নির্যাতিত হচ্ছে তাকে কি বলবেন?
    আমাদের দেশ এখন পর্যন্ত এ এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে সাম্প্রদায়িকতা শব্দটাও কেঁউ বুঝতনা। এখন পর্যন্ত এ জাতিয় যত ঘটনা হয়েছে তাঁর সবটি রাজনৈতিক রিলেটেড। তাঁর প্রমাণ আমাদের এলাকাটি। আমাদের গ্রামে প্রায় ৫০ টি পরিবারে ৩০০ এর মত হিন্দু লোক থাকে। আমাদের মাঝে কতটুকু সম্প্রীতি বিদ্যমান তা বলে বুঝানো সম্ভব না। একসাথে খেলা-ধুলা , ধর্মীয় আচার অনুষ্টানে তাঁরা যেমন আমাদের আমন্ত্রণ করে আমরা তেমনই তাঁদের দাওয়াত দেই। এমনকি কোরবানির ঈদে গরু যবাইয়ের সময়ও তাঁরা থাকে।

    ভাইয়া হুজুর চরিত্রের লোকটি হয়ত একটু বেশি ধার্মিক। এটা কখনো সাম্প্রদায়িকতার সংজ্ঞায় যায় না।

    এবং
    গ্রামের মেম্বার চরিত্র সম্পর্কে আমার কিছুই বলার নেই। কারণ গ্রামে তা অহরহ ঘটে।

    • শুন্য শুন্যালয়

      গাজী বুরহান, আপনার কাছ থেকে সাম্প্রদায়িকতার সংজ্ঞাটা একটু জানতে চাচ্ছি।
      সাঈদী এবং যুদ্ধাপরাধী দুইটা ভিন্ন বিষয়? হা হা হাসি পাইলো শুনে, আর কিছু বলার নাই।
      বাই দ্যা ওয়ে এই লেখার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত আসলো কোথা থেকে?
      ধনঞ্জয়ের হাতের বানানো দুধ-চা খাইতে পারে, নাড়ু পারেনা, এইটাই হচ্ছে আমাদের তথাকথিত, মোল্লা, আলেম আর সাঈদীর পা চাটা শহীদ খেতাবী দেয়া মানুষের আসল চেহারা।

      • গাজী বুরহান

        আদালত (টিভি প্রোগ্রাম) দেখতাম। সেখানে একটি কথা প্রায়ই কেডি পাঠক বলত “সাধারণত আমরা যাহা দেখি তা হয় না। যাহা হয় তাহা দেখি না। তো হতে পারে এই কেইছে আমরা যা দেখতে পাচ্ছি তাহা হচ্ছেনা যাহা হচ্ছে তাহা দেখতে পারছিনা।”

        আসলে আপু সাঈদী সাহেবের বিষয়টা আমার কাছে যতটা রাজনৈতিক তারচেয়ে বেশি ধর্মিয়। বিষয়টা নিয়ে ভাবতে ভাবতে তেক্ত হয়ে গেছি। আমরা রাজাকারদের ফাঁসির দাবিতে মিছিল দিছিলাম। সাঈদীর বিষয়টা নিয়ে যখন দেশ ব্যাপী তোলপাড় চলতেছে। তখন বড় ভাই বললেন, কালকে মিছিল হবে, সাঈদী সাহেবের ফাঁসির দাবিতে মিছিল। সেদিন আমি যাইনি। বড় ভাই ফোন দিলে আমি অপরাগতা প্রকাশ করলাম। তখন তিনি বললেন, আরে তুই কি? কেঁউ তো আসেনি। মিছিল বোধ হয় হবেনা। এবং লোকজনের অভাবে হইলনা।

        আপনি সাম্প্রদায়িকতার সংজ্ঞা জানতে চাচ্ছেন? এ জন্যই তো ভারতের প্রসঙ্গ আনলাম।

        ধনঞ্জয়ের হাতের বানানো দুধ-চা খাইতে পারে, নাড়ু পারেনা……
        ধনঞ্জয়ের হাতের বানানো দুধ-চা খাওয়া এক জিনিস আর পূজোর নামে মানত করা কিছু খাওয়া অন্য জিনিস।

      • শুন্য শুন্যালয়

        আমার রুমে দুই রুমমেট ছিলো, এরা হিন্দু বুয়ার হাতের করে দেয়া সব কাজ নেবে, থালাবাটি ধুয়ে দেবে, ঘর গুছিয়ে, বাজার করে দেবে, কুটেবেছেও দেবে। শুধু হিন্দু বুয়ার হাতের রান্না করা খাবার তারা খাবেনা, তাই রান্নার জন্য তারা আরেক বুয়া ঠিক করেছিল। এইটা এক উদাহরন, এইরাম ছাই ভাঙ্গা ধার্মিক এ বোঝাই আমাদের দেশ। আফসোস সাম্প্রদায়িকের সংজ্ঞার জন্য আপনার ভারতে যাওয়া লাগলো, আসলে ভারত আমাদের দেশের কতিপয় মানুষের গায়ে চুলকানির মতো।
        সাঈদির ফাঁসির বিচারে আপনি যান নাই, খুব ভালো কথা। একটা প্রশ্নের উত্তর দেন, আপনার কাছে দেশ বড় নাকি ধর্ম? হুদাই জিগাইতেছি ভাই, যা বোঝার তা বুঝছিই আগে।

      • অপার্থিব

        অন্যদের কথা বাদ দেই , ছোটবেলায় হিন্দু মালিকানাধীন হোটেলে খাবার ব্যাপারে আমার নিজেরও এক ধরনের অস্বস্তি ছিল । এখন মনে হলে লজ্জা লাগে। শুধু আমিই নই, আমার মত মানুষের সংখ্যা কম নেই যারা খাবারের মধ্যেও সাম্প্রদায়ীকতা মেশায় ।

        আমাদের দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ ভারতের মুসলিম নির্যাতন দিয়ে বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনকে জাষ্টিফাই করার চেষ্টা করে যেন ভারতের মুসলিমরা নির্যাতনের স্বীকার হলে বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতন হালাল হয়ে যায়!! আপনি ঠিকই বলেছেন ভারত আমাদের দেশের অনেক মানুষের কাছে চুলকানীর মত।

    • মেহেরী তাজ

      গাজী বুরহান ভাই! আপনাকে বলছি। উদাহরণ স্বরূপ মনে করেন এটা কোন গল্প নয় বাস্তব ঘটনা। সেখানের মেইন ক্যারেক্টার মৌলবি সাহেব। হঠাৎ তার একটা মেজর এক্সিডেন্ট হলো। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলো! ডাক্তার বললো রক্ত লাগবে। রক্তের গ্রুপ AB নেগেটিভ। পুরা গ্রাম মিলে এই গ্রুপের রক্ত পাওয়া গেলো এক জনের। গ্রামের অন্যান্যরা মিলে তাকে রক্ত দিলো! পরে মৌলবি সাহেব জানতে পারলো সেই এক জনটা হলো ” ধনঞ্জয় “। আপনার মৌলবি সাহেব কি করবে??? নাড়ু খাওয়ার পর যেভাবে বমি করেছিলো যেভাবে গা থেকে সব রক্ত বের করে দিবে???
      দিবে না! তাহলে তখন কোথায় থাকলো পাপ পূন্যে বিচার?
      স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা যখন চাইছে ধনঞ্জয় এর রক্ত তার শরীরের ধমনী শিরায় উপশিরায় বইবে তখন আপনি আমি গোঁড়ামি করে নিজের ধর্মকে ছোট কেনো করবো।???
      ভাইয়া ইসলাম একটা আদর্শ ধর্ম আমি মনে করি! গোঁড়ামোর কথা ইসলাম বলে না!

      • গাজী বুরহান

        আপু ! সাম্প্রদায়িকতার সংজ্ঞা এমন হবে তা আমি আমার লেখায় ম্যাগনিফায়িং গ্লাস দিয়েও খোঁজে পাইনি। উল্টো আমি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা ইতিবাচক ভাবেই বলেছি। কারণ এ বিষয়ে গর্বের সঙ্গে বলতে পারি আমি প্রেক্টিক্যালি সাম্প্রদায়িক বন্ধনের ভেতর আছিই। যাহা অনেকে আবেগে লেখালেখি করে ব্লগে কিংবা পত্রিকায়।

        একটা বাস্তব উদাহরণ দেই, এই তো ক’দিন আগে আমার ছোট ভাই আমাকে বলল, ভাইয়া দ্বিপন (আমাদের পাঁশের বাড়ির হিন্দু ছেলেটি, ছোট ভাইয়ের ফ্রেন্ড ) তাঁর গার্লফ্রেন্ড বিষয়ে আমার কাছে হেল্প চাচ্ছে। আমি কি তাঁদের হেল্প করতে পারে? উত্তর দিলাম, অবশ্যই পারবি। দুদিন আগে তাঁরা বিয়ে করেছে।

        ধর্মীয় গোঁড়ামি বিষয়েও আমি বেশ প্রেক্টিক্যাল। আমার ফ্রেন্ডদের মিলে গ্রামের মুরুব্বীদের অনেক বিষয়ে বুঝায়েছি । কিন্তু কেঁউ এ বিষয়ে (ধর্মীয় গোঁড়ামি ) আমায় কিছু বলবে! চিন্তাও করিনি।

        আপু আপনার কথায় আমিও সম্পুর্ণ একমত। ইসলাম হল একটি আদর্শ ধর্ম। গোঁড়ামোর কথা ইসলাম কখনো বলেনা।

    • অপার্থিব

      //কারণ আমরা বিশ্বাস করি সাঈদী এবং যুদ্ধাপরাধী সম্পুর্ণ ভিন্ন বিষয়।//

      আপনার বিশ্বাসে কিছু যায় আসে না, আপনি ব্যক্তিগত ভাবে বিশ্বাস করতেই পারেন সাইদী নিষ্কলুষ, শিশুর মত পবিত্র । সাঈদী যে যুদ্ধাপরাধী তার বাংলাদেশের যাবতীয় আদালতে যুক্তি, তর্ক, প্রমাণ সাপেক্ষে প্রমাণিত, এটা আর এখন আমার ব্যক্তিগত মত না। আপনার কাছে এই বিচারও মিথ্যা বলে মনে হতে পারে , এটাও হাইপোথিটিক্যাল ব্যাপার স্যাপার। প্রত্যেকেরই নিজ নিজ ভাবনা চিন্তার অধিকার রয়েছে।

      সাইদীর বিরুদ্ধে মিছিলে লোক হয় না তাই সাইদী ভাল মানুষ এগুলো খুবই হাস্যকর ধারণা। সাইদী কেন যুদ্ধাপরাধী তার হাজারও প্রমান আছে যদিও সেসব আপনাকে বলে লাভ নাই ।

      //ভাইয়া এটাকে যদি সাম্প্রদায়িকতা বলে তবে ভারতে প্রতিদিন সাপ্রদায়িক দাঙ্গায় সংখ্যালঘূরা নিহত/নির্যাতিত হচ্ছে তাকে কি বলবেন?//

      প্রথমেই বলা দরকার ভারতে প্রতিদিন সাম্প্রদায়ীক দাঙ্গা হয় না, যেটা হয় তা হচ্ছে নীরব সাম্প্রদায়ীকতা থেকে উদ্ভুত সাম্প্রদায়ীক বৈষম্য। দাঙ্গা করতে হলে দুই পক্ষের শক্তির ব্যবধান অন্তত ৮০-২০ বা ৭০-৩০ হতে হয় । বাংলাদেশে হিন্দুদের এখন আর সেই সামর্থ্য নেই। বাংলাদেশে এখন যেটা হয় তা হচ্ছে একতরফা নির্যাতন। আর ভারতে দাঙ্গায় মুসলিমরা নির্যাতিত হলে তাতে কি বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতন হালাল হয়ে যায় নাকি? বাংলাদেশেরও দাঙ্গার যথেষ্ট ইতিহাস আছে। যেমনঃ ৪৭ সালের নোয়াখালী দাঙ্গা, ৫০ এর বরিশাল দাঙ্গা , ৬৪ এর খুলনা দাঙ্গা, ৯১ এ বাবরি মসজিদ ভাঙ্গা পরবর্তী দাঙ্গা, ২০০১ নির্বাচন পরবর্তী দাঙ্গা । শেষ দুটোকে অবশ্য দাঙ্গা না বলে এক তরফা নির্যাতন বলা যায় । ৪৭ এ নোয়াখালীর ভয়াবহ দাঙ্গা ছাড়া দেশ ভাগের আলোচনা অসম্পূর্ণই থেকে যায়। যেখানে প্রায় ১০ হাজার হিন্দু মেয়ে ধর্ষিত, কয়েক হাজার নিহত ও প্রায় ৫০ হাজার হিন্দু ঘরছাড়া হয়েছিল। দাঙ্গা থামাতে স্বয়ং গান্ধী পর্যন্ত নোয়াখালী এসেছিল তবুও কোন কাজ হয়নি।

      পৃথিবীর সব দাঙ্গায় কিছু লোকের রাজনৈতিক স্বার্থ থাকে , তাই বলে রাজনীতির ধুয়া তুলে দাঙ্গার গুরুত্বকে লঘু করার চেষ্টাও কম অপরাধ নয়। আর যদি তর্কের খাতিরে ধরে নেই যে আপনার গ্রামে হিন্দু-মুসলমানের মারাত্নক সম্প্রীতি বিদ্যমান তবে আপনার গ্রামই যে গোটা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছে সেটাই বা নিশ্চিত হলেন কিভাবে?

    • মৌনতা রিতু

      যদিও মন্তব্যে ঢুকে কথা বলা ঠিক হয়ত নয়, তবে যেহেতু এটা ব্লগ আলোচনা সমালোচনা হওয়া উচিৎ।
      সাঈদির কথায় আসি, আমি ওনার ওয়াজ শুনেছি। এবং খুব মনোযোগ দিয়েই শুনেছি। আমি যেমন একজন লেখকের লেখা তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য জানার পর পড়তে পছন্দ করি না, কারন মানুষের আদর্শ বলে একটা কথা আছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে যেটা মানব না,করতে পারব না, তাই মুখে সেটা বলব ও না, কাউকে তা করতে বলবও না।
      আমরা যারা মোটামুটি যেটুকু জানি, তাতে করে এসব মওলানাদের আমি পছন্দ করি না।
      উনি ওয়াজে মেয়েদের ঘরে থাকতে বলবেন, পর্দা করতে বলবেন, এবং মেয়েদের খুবই বিশ্রি ভাবে তার ওয়াজে উপস্থাপন করবেন। অথচ ব্যক্তিগত ভাবে উনি বি এন পি একজন মহিলার পাশে বসে রাজনীতি করবেন, এবং যিনি অত্যধিক আধুনিক। তো এই ব্যাখ্যাটা আমার কাছে অন্যরকম। আমার মা খালারা এক সময় খুব শুনতে চাইত তার ওয়াজ। একদিন তারা প্রোগ্রামও করল তার ওয়াজ সরাসরি শুনতে যাবে। তো সেদিন বাজারে গিয়ে তার পুরো ওয়াজের ভিডিও সংগ্রহ করে তাদের দেখালাম, নিজে ভাঙলাম সব ব্যাখ্যা। একটা ওয়াজের নিয়ম হচ্ছে ভালোমন্দ, ঠিক বেঠিক আলোচনা করা। মেয়েদের ব্যাঙ্গ করা নয়। এখানে অল্প কথায় অবশ্য এতো বিস্তর আলোচনা করা যায় না।
      হ্যাঁ, এটা ঠিক শুধু এসব মৌলবিরা না যে কোনো ধর্মেই এসব বদ আছে।

      • অপার্থিব

        মেয়েদের বোরখা পরা প্রসঙ্গে এই রাজাকারের একটা বিখ্যাত থিওরি আছে, “ছিলা কলা থিওরি”। এই ওয়াজ মাহফিল গুলোর
        ব্যয়িত সময়ের একটা বড় অংশই বরাদ্দ হয় নারীদের প্রতি নানা অবমাননাকর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। মানুষের অশিক্ষা কুশিক্ষাকে পুঁজি করে এই ওয়াজ ব্যবসায়ীরা নিজেদের আখের গোছায়।

  • ব্লগার সজীব

    গতকালকেই আপনার এই লেখাটি পড়েছি। আপনি ভাল লেখেন। সমাজে এমন হাজার হাজার মাওলানা আবুল মোকছেদ আছে। যারা কৌশলে সাম্প্রদায়িকতার শিকড় হিসেবে বিচরন করছেন। এমন পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ।

  • মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন

    লেখাটাকি দেশ নিয়া লিখলেন নাকি ধর্ম নিয়া লিখলেন নাকি সাইদী নিয়া লিখলেন ঠিক বুঝলাম না।

    আপনি বললেন সাম্প্রদায়িকতার কথা কিন্তু আপনার ভিতরেও আমি ঢের ঘৃনার বীজ দেখতে পাচ্ছি। সে মাওলানা ; সে চা খায়, নাড়ু খায় না। সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যপার। আমার অনেক হিন্দু বন্ধু আছে। আমি তাদের ঘরে ভাত খাইতে পারি, পূজার নাড়ু খাইতে পারি। তবে নিরামিশ খাইতে পারি না। দ্যাট মিনস আমি সাম্প্রদায়ীক!!!

    সবকিছু দেখে যেটা মনে হইলো আপনি মাওলানার সমালোচনা করছেন। দুইটা ঘৃনার পয়েন্ট যোগ করছেন সাইদীর সার্পোরটার। হিন্দুদের নাড়ু খায় নাই।

    সাইদী যুদ্ধাপরাধী হইলে অবশ্যই তার ফাঁসি হওয়া উচিৎ। কিন্তু তাই বলে তার ভালো কর্মকান্ডকেও ঘৃনা করতে হবে এমন কিছু নাই।

    মাওলানার ভিতর সাঈদী প্রীতি আছে। আমার ভিতরও আছে। তবে আমি জামাতী না, যুদ্ধাপরাধীর সাপোর্টার না। মাওলানা অবশ্যই ভালো। তবে তার ভিতর আছে কিছু পূর্বপুরুষ ধরে চলে আসা কিছু বাজে অভ্যাস। কিংবা বাজে প্রভাব!

    • অপার্থিব

      অবশ্যই কে কি খাবে কিংবা না খাবে সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার কিন্তু কে কোন বোধ থেকে এই খাওয়া কিংবা না খাওয়ার মানদণ্ড নির্ধারণ করছে সেটাই মূলত আলোচ্য বিষয়। এই বোধটা যদি হয় সাম্প্রদায়ীক দৃষ্টিকোন থেকে উদ্ভুত তবে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সামাজিক , সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই বোধটার সমালোচনা জরুরী। এই পোষ্টে সেটারই চেষ্টা করা হয়েছে অর্থাৎ পোষ্টে সমালোচনা করা হয়েছে না খাওয়ার পিছনে থাকা বোধটির , না খাওয়ার নয়। এই বোধটার উপর ভিত্তি করে সাম্প্রদায়ীকতা নির্ধারণের প্রশ্নটা আসবে, না খাওয়ার উপর নয়। এখন আমার মধ্যে “ঢের ঘৃনার বীজ” কিভাবে খুঁজে পাইলেন তা বুঝলাম না, বুঝে দিলে ভাল হয়।

      //সাইদী যুদ্ধাপরাধী হইলে অবশ্যই তার ফাঁসি হওয়া উচিৎ। কিন্তু তাই বলে তার ভালো কর্মকান্ডকেও ঘৃনা করতে হবে এমন কিছু নাই।//

      সাইদীর ভাল কর্মকাণ্ডকে ঘৃণা করতে হবে এমন কথা এই পোষ্টের কোথায় বলা হয়েছে? তার আগে জানতে চাই সাইদীর ভাল কর্মকাণ্ডগুলো কি কি?

      মাওলানা ভাল না খারাপ এটা নির্ধারণ পুরোপুরি আপেক্ষিক বিবেচনাবোধের ব্যাপার। মাওলানার একটা জীবন দর্শন আছে , সেই দর্শন অনুসারেই তার চিন্তাধারা, খাওয়া থেকে শুরু করে জীবন যাপনের পদ্ধতি অনুসৃত হচ্ছে । এখন যারা মাওলানার দর্শনের সমর্থক তাদের কাছে এটা ভাল বলে মনে হতে পারে। কিন্ত এই দর্শন আমাদের সমাজ , সংস্কৃতি ও রাষ্ট্রের জন্য কতটা উপকারী , অসাম্প্রদায়ীক রাষ্ট্র গঠনের উদ্দেশ্যে নিধারিত করণীয়গুলোর সাথে এই দর্শন কনফ্লিক্ট তৈরী করছে কিনা , জঙ্গীবাদে আক্রান্ত বাংলাদেশে এই দর্শন চর্চার ফল কি হতে পারে এই প্রশ্ন গুলো পাঠকদের মনে তোলার উদ্দেশ্যেই এই পোস্ট । সিদ্ধান্তটা দিন শেষে নিজেরই…

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ