মহামান্য শেখ মুজিব, হে প্রমিথিউস বাংলার, আরও একবার আপনি
উঠে আসুন টুঙ্গীপাড়া, সবুজে সবুজে মোড়া ছবির মতন সেই গ্রাম
থেকে, কিংবা উঠে আসুন ধানমণ্ডির ৩২ নাম্বার, ঢাকার প্রতিটি
রাজপথ থেকে। মহামান্য হে স্থপতি, পদ্মা মেঘনা যমুনার কোল বেয়ে
আরও একবার ফিরে আসুন আম জাম কাঁঠালের নিবিড় ছায়া, এই
সাধের বাংলায় আপনার। টুঙ্গীপাড়া থেকে উঠে আসা হে মহান
প্রমিথিউস, মৃত্যুঞ্জয়ী সাহসী সন্তান, আপনাকে আরও একবার আসতে
হবে হাজারটা গ্রাম থেকে বাংলার, বড্ড মমতায় জাগিয়ে তুলতে
হবে আর পনের কোটি ঘুম যাওয়া বিবেক। জাগিয়েছিলেন যেমনটা
সাড়ে সাত কোটি সন্তান, একাত্তরের বিভীষিকাময় দিনগুলোতে সেই।
বাংলার প্রতিটি বৃক্ষ, পাখি, নদী, মাঠ, মাটির সোঁদা গন্ধে আপনাকে
ফিরে আসতে হবে হে মহামান্য শেখ মুজিব। যেমনটা ছিলেন ৭ই
মার্চের সে মহাকাব্যিক ভাষণ, রেসকোর্সে প্রত্যক্ষ সংগ্রামের ডাকে-,
“রক্ত যখন দিয়েছি, আরও দেবো, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে
ছাড়বো ইনশাল্লাহ।“ নামগোত্রহীন অসংখ্য বেজন্মা আজ চারপাশে
আপনি ছাড়া কেউ নেই সবুজ শাড়িটার সম্ভ্রম বাঁচায় হে প্রমিথিউস।
ঘাতকের বুলেটের সাধ্য কি আজ? হে মহামান্য শেখ মুজিব, বাংলার
প্রমিথিউস, দেখুন না পঁচাত্তর উত্তর প্রজন্ম বড্ড দুঃসময়ে, ত্রাণকর্তা
নেই কোনো। ফুল, পাখি, মাটি ও মানুষের হে অকৃত্তিম বন্ধু দেখুন না,
মুজিবকোর্ট পরিহিত কিছু বিকারগ্রস্থ, বর্বরদের নারকীয়তা, হিংস্রতা
আপনার হিরকদ্যুতিময় উজ্জ্বলতাও ম্লান করে দেয়। গাঙ্গেয় বদ্বীপ,
স্বপ্নসৌধ যত আপনার বিনির্মাণ জেগে তাই, আপনাকে আসতে হবে
আসতেই হবে, শোক, জরা কতকাল বয়ে যাবো হে বাঙালির পিতা?
আপনাকে আসতেই হবে হে মহামান্য শেখ মুজিব, দেখুন ৩২ নাম্বার
ধানমণ্ডি থেকে আপনার প্রেরিত পবিত্র সনদ স্বাধীনতার, চরমপত্র
মুক্তির, যে মেজর পাঠ করেছিলো আপনার সপক্ষে, আপনার রচিত
অমর সঙ্গীত, হিরকদ্যুতিময় একাত্তর-, “এবারের সংগ্রাম, আমাদের
মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।“ জলে-স্থলে,
আকাশ-বাতাসে, অন্তরে অন্তরে ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হতে হতে যা
ছড়িয়েছিলো টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া। হাজারটা সূর্যের অম্লান
জ্যোতির্ময়তাকে সেই, যাকে একদা উপপ্রধান সেনাপ্রধান করেছিলেন
আপনি, আপনার অনুগত সে মেজরের ক্রেডিট বলে চালিয়ে দেয়
একদল মধ্যসত্ত্বভোগী! ‘রুপো আর হীরেয়’ যেনো পার্থক্য নেই আজ!
তাই আপনাকে উঠে আসতে হবে টুঙ্গীপাড়া, সবুজে সবুজে মোড়া ছবির
মতন সেই গ্রাম থেকে অথবা ধানমণ্ডির ৩২ নাম্বার, ঢাকার প্রতিটি
রাজপথ থেকে, কিংবা আপনাকে আসতে হবে পদ্মা মেঘনা যমুনার
কোল বেয়ে আম জাম কাঁঠালের এই নিবিড় ছায়ায়। ত্রিশ লক্ষ শহিদ,
আপনার একটা আঙ্গুলের নির্দেশে যারা অকাতরে বিলিয়েছে অমূল্য
প্রাণ, নইলে ভেঙে যাবে ঘুম তাঁদের, ভেঙে যাবে ঘুম। ধৈর্যের স্নিগ্ধতা
কার আর এত, আপনি উঠে আসুন, উঠে আসুন হে প্রমিথিউস বাংলার।
২৩টি মন্তব্য
মর্তুজা হাসান সৈকত
আমার কবিতাগুলো নিয়ে বদরুল আহসান খান’র কণ্ঠে একক আবৃত্তির এ্যালবাম ‘দুঃসময়ের বন্দরে দাঁড়িয়ে’র’ পঞ্চম কবিতা এটি। কবিতাটি আগামীকাল রাত ১১ টায় বৈশাখী টেলিভিশনের লাইভ অনুষ্ঠানে আবৃত্তি হবে। আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটায় এসএ টেলিভিশনের বেলাশেষের অনুষ্ঠানে আবৃত্তি হবে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লিখা আমার কবিতা, ‘হে স্বাপ্নিক তোমাকে নিবেদিত পংক্তিমালা। সে কবিতাটিও সোনেলায় প্রকাশিত।
জিসান শা ইকরাম
টিভির প্রগ্রাম অবশ্যই দেখবো ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
বৈশাখী টেলিভিশনের লাইভ অনুষ্ঠানে আজ আবৃত্তি হবে এ কবিতাটি। গতকাল এসএ টেলিভিশনে আবৃত্তি হয়েছে, হে স্বাপ্নিক, তোমাকে নিবেদিত পংক্তিমালা কবিতাটি। এসএ টেলিভিশনের অনুষ্ঠানটি আজ ভোর রাত সাড়ে চারটায় পুনরায় প্রচারিত হবে ভাইয়া। 🙂 🙂
মা মাটি দেশ
হুম বহুদিন পর এলেন।সোনেলায় না আসলেও আমরা আপনার খোজ খবর রাখি।কবিতাটি ঝাঝালো। -{@ (y)
মর্তুজা হাসান সৈকত
ইদানিং অনলাইনেই খুব বেশি অনিয়মিত হয়ে পড়েছি। ইচ্ছে আছে আবারো নিয়মিত হবো সোনেলায়। (3
জিসান শা ইকরাম
অসাধারন কবিতা ।
পিতাকে ভুলিয়ে দিতে পারবেনা কেউ কোনোদিন ।
জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলী ।
আবৃত্তি ভালোই লাগছে ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
এ্যালবামে বঙ্গবন্ধুকে মোট দুইটি কবিতা আছে ভাইয়া। যার মধ্যে ক্রমানুসারে এটি প্রথম।
ছাইরাছ হেলাল
ইচ্ছে হলেও কেউ তাঁকে ভুলে যেতে পারে না ,পারবেও না ।
হে মহান বীর আপনাকেই সহস্র শ্রদ্ধা ।
অবশ্যই টিভি দেখব ।
অনেক দিন পর আপনাকে দেখে ভালো লাগল >
মর্তুজা হাসান সৈকত
প্রায় মাস দুই অনলাইনের বাইরে ছিলাম ভাইয়া। অনিয়মিত হয়ে পড়েছি সব জায়গাতেই। ইচ্ছে আছে নিয়মিত হওয়ার। 🙂 🙂
দুটো টেলিভিশনে গেলো আগস্টের কবিতা। কাল রাত এগারটায় বৈশাখীতে এ কবিতাটি আবৃত্তি হবে। 🙂
নুসরাত মৌরিন
বঙ্গবন্ধু জন্মেছিলেন বলেই জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশ নামক ভূ-খন্ডের-এই সত্য কেউ অস্বীকার করতেই পারবে না।
আপনার কবিতাটি অসম্ভব ভাল লাগলো।
মর্তুজা হাসান সৈকত
খুশি হলাম মৌরিন। কবিতাটি ১৫ই আগস্ট রাত এগারটায় আবৃত্তি হবে বৈশাখী টেলিভিশনে। 🙂
প্রজন্ম ৭১
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা কবিতার মাঝে আমার পড়া সেরা কবিতাগুলোর অন্যতম এটি। খুবই ভালো লিখেছেন ভাই।
জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
বসুন্ধরার ফুড কোর্টে বসে এ কবিতাটির থিম মাথায় এসেছিলো। এরপর দুই দিনের হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রমে দাঁড় করিয়েছি কবিতাটি। আমারও ভালো লাগে এ কবিতাটি। ভালো থাকবেন। -{@
আদিব আদ্নান
ছালাম হে মহা মানব । আজন্ম শ্রদ্ধা ।
অনেকদিন পর লিখলেন ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা তাঁর জন্য।
আজিম
অনেক শ্রদ্ধা জাতির পিতাকে।
কবিতাটি-ও খুবই ভাল লিখেছেন। আপনার আবেগকে শ্রদ্ধা করি আমি।
শেষ লাইনের আগের লাইনে লিখেছেন ‘নইলে ভেঙ্গে যাবে ঘুম তাঁদের, ভেঙ্গে যাবে ঘুম’, কীজন্য লিখেছেন এটি, বুঝিয়ে বললে ভাল হোত। কবিতা একটু কম বুঝিতো।
মর্তুজা হাসান সৈকত
শেষ স্টানজা একটু সময় দিয়ে পড়ুন। আশা করি সমস্যা হবেনা বুঝতে। 🙂
বন্দনা কবীর
জাতির পিতার প্রতি শদ্ধাঞ্জলি । ভালো লিখেছেন ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
ধন্যবাদ আপনাকে। হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধা তাঁর জন্য। 🙂
স্বপ্ন
ক্ষমা করো আমাদের জাতির পিতা।
জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা।
মর্তুজা হাসান সৈকত
এই ভুলের ক্ষমা হয়না বোন। ক্ষমা হয়না এই ভুলের। 🙁
শুন্য শুন্যালয়
অসাধারণ হয়েছে কবিতাটি।
চেস্টা করবো দেখার।
নিয়মিত হলে ভালো লাগবে ভাইয়া।
জাতির পিতাকে আজন্ম শ্রদ্ধা জানাই।
প্রজন্ম ৭১
অনেক দিন পরে দেখলাম আপনাকে। লেখার মান আগের চেয়ে আরো শানিত হয়েছে।