বিবাহিত জীবনে ভালোবাসা

অরুণিমা মন্ডল দাস ২৭ জানুয়ারি ২০১৭, শুক্রবার, ১১:৫৬:২২অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ৭ মন্তব্য

1290x726_1d-640x480
মানুষ হিসেবে আমরা জন্ম নিয়েছি যখন সংসার বংশবৃদ্ধি করাটা জীবনের চরম পর্যায় হিসেবে মেনে নেওয়া হয়ে থাকে --কিছু যুগপুরুষ বাদে প্রায় সব মানুষকেই সংসারধর্ম পালন করতে হয় । সংসার ---- অসার --পদে পদে বিপদ ---সুখের ধানভাঙা মেশিন ----- কখনও ভাঙা চাল আবার গোটা চাল --- তবুও অদৃশ্য শক্তির তালে তালে নাচতে হয় ।

সবুজ ঘাসের নরম স্পর্শ গোলাপ রজণীগন্ধা গন্ধরাজ র গন্ধ কার না ভালো লাগে ? সবাই জীবনে সুখী হতে চায় বিবাহিত জীবনে পরম সুখ কামনা করে ---- সুন্দর সংসারের স্বপ্ন দেখে -- কিন্তু বিবাহিতদের মধ্যে কজন দাম্পত্য জীবনে প্রকৃত ভালোবাসা পায়!

খুব কম ভাগ্যবান বা ভাগ্যবতী জীবনে প্রকৃত সুখী হতে পারেন । আমার মতে এক শতাংশ মানুষ বিয়ে করে সুখী বা সুখ পান বলে মনে হয় । বর্তমানে ডিভোর্সের সংখ্যাও খুব বেড়েছে --- যার ফলে সন্তানদের ভোগান্তির অন্ত থাকে না । মা ভালো হলে জীবনে কিছু হল নাহলে বাচ্চাদের জীবন অতলে তলিয়ে যায়--- কোনরকমে বেঁচে থাকে ,ভবিষ্যত বলে কিছু থাকে না----স্নেহ ভালোবাসাহীন এক নির্জীব হৃদয়ে পরিণত হয় -- এইভাবে কিছু বাবা মায়ের হঠকারিতা ভুল বোঝাবুঝির জণ্য সন্তানদের জীবন নরকের থেকেও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে । অনেকে তো মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে সারাজীবন রুগী বনে যায় । বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে বাবা মা পরিবারের ভালোবাসা না পাওয়া বাচ্চারা অনেক বেশী বেপরোয়া ও হিংস্র হয়ে ওঠে অথবা গুমরে গুমরে মানসিক যন্ত্রণায় ভোগে ।

বিবাহিত জীবনে অসুখীর কারণ-----

সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ছেলে মেয়ের বয়সের সীমা ২১ ও ১৮ করা হয়েছে। শহরের দিকে মেয়ে যতই প্রেম আর আ্যবোরশান করুক তেত্রিশের আগে মানে একটা মেয়ে যতক্ষন না স্ট্যান্ড করছে ততক্ষন বিয়ের কোন প্রশ্নই নেই । একদিক দিয়ে এটা খুবই ভালো পদক্ষেপ । কারন একটা মেয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়া খুব জরুরি। বিয়ের আগে মানসিক শারীরিক আর্থিক সব দিক থেকে পরিপক্ব হওয়াটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় । তাহলে বধূ নির্যাতনের মত আরো অনেক প্রকারের ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের স্বীকার হতে হয় না ।

আর একদিকে ছেলে মেয়ে একে অপরকে বুঝতে মেনে নিতে অনেকটাই সুবিধে । আবার মেয়ে প্রতিষ্ঠিত ছেলে প্রতিষ্ঠিত হলে অনেক ক্ষেত্রেই প্রবলেমটা হচ্ছে একে অপরকে সময়টা কম দিতে পারছেন আর খুব ভালো আন্ডারস্টেন্ডিং না থাকলে ভালোবাসাটা আস্তে আস্তে হারিয়ে যেতে দেখা গেছে । মানে টাকা থাকলে সেক্স পার্টনার তো অনেক পাওয়া যায় কিন্তু প্রকৃত ভালোবাসাটা তো পাওয়া যায় না তাই না ----

তাছাড়া অনেক কর্মরতা তেত্রিশী মহিলা পুরুষদের মধ্যে একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে ---যার ফলে অনেকেই বন্ধু বান্ধবী মদ নেশাগ্রস্থ লক্ষ্যহীন ভোগী জীবন যাপন করছেন । ঠিক বুঝতে পারছেন না কোনদিকে গড়াবেন ।

কিছু বিবাহিত ভালো ছেলেদের কাছে চাকরীতে বশের সংগে সম্পর্কে মানসিক দুশ্চিন্তায় ভুগবেন । একদিকে বৌ আর একদিকে চাকরী তাছাড়া আজকাল বিজনেস মার্কেটে শারীরিক সম্পর্কটা পেশাগত শর্তে পরিণত হয়ে গেছে বিশেষ করে রঙিন জগতে মিডিয়ার দুনিয়া---- সবাই স্ট্র্যাগল করছে সেখান থেকে ছেড়ে যেতেও পারছে না --- অনেকেই ডিপ্রেশনের স্বীকার হয়ে পড়ছেন সংসারে অহেতুক সন্দেহ মারধোর এমনকি বাচ্চাদের সামনে উল্টোপাল্টা আচরণ শুরু করে দিচ্ছেন¡

দাম্পত্য কলহ---- বিয়ের পর বর বৌর মধ্যে ঝগড়া স্বাভাবিক ব্যাপার । কিন্তু সেই ঝগড়া ঝাটি যখন অস্বাভাবিক হয় তখন তা ঠেকানো খুবই মুশকিল --যা থেকে অনেকেই আত্মহননের পথ বেছে নেন আবার অনেকে মিথ্যা সন্দেহের কারণে মেন্টাল জীবন যাপন করতে শুরু করেন পায়ে কঁাটা বিঁধলেই মনে করেন এই বুঝি বৌ মারার ষড়যন্ত্র করছে--

বিবাহ একটি মধুর বন্ধন যার মাধ্যমে দুটি মনের শরীরের সার্বিক মিলন ঘটে । যার চারিদিকটাই খুব সুন্দর রোমান্টিক হওয়া উচিত ।“ বাসরঘর ” একটা মেয়ের জীবনে স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখার সবচেয়ে বড় সম্পদ? কিন্তু বিয়ে ” নামক শিকলের বন্ধন দ্বারা মেয়েদের কয়েদ করে রাখা হচ্ছে ,অবশ্য তা শুধুমাত্র কিছু সহজ সরল নির্যাতিতা মেয়েদের ক্ষেত্রে --তঁাদের কাছে শ্বশুড়বাড়ি শুধুমাত্র অভিশপ্ত জেলখানা ছাড়া কিছুই না -- তিনবেল খাওয়া বিছানায় গতর দেওয়া আর কাজকর্ম করে দেওয়া সুখ সখ আহ্লাদ বলতে কিছুই থাকে যেটা থাকে সেটা স্বামীর চড় থাপ্পড় গালিগালাজ ¡

গ্রাম বা আধা শহর এলাকার মেয়েদের আঠারো না পেরোতেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে -- তঁারা যা খুব শান্তিতে থাকছে সংসার করছে তা কিন্তু নয় তঁাদের মূর্খ করে রাখা হচ্ছে পড়াশোনা ছাড়িয়ে দিয়ে সংসারের গোলাম --- জাস্ট বাচ্চা জন্ম দেওয়ার মেশিন -- শারীরিক চাহিদা মিটল কি না মিটল মনের মিল হল কি না হল জানার দরকার নেই -- শুধু বাচ্চা পেটে ধরতে থাকো আর হেঁশেলের ঘরে ঢুকে পচে মর¡

অনেকে প্রতিবাদ করছে না তা নয় --- অধিকাংশ অল্পবয়শী মেয়েরা বিয়ের পর বিশেষ করে বাচ্চা হওয়ার পর বাপের বাড়িতেই আশ্রয় নেন --দেখা গেছে মেয়েটা যদি কোনক্রমে নিজের চেষ্টায় কিছু করতে পারে ছেলেটি পঁাচ দশ বছর পর হলেও দরকার পরের বৌ কে ছেড়ে দিয়ে প্রথম পক্ষের বাচ্চা বৌ র পিছনে নেড়ি কুত্তার মত ঘুরঘুর করেন -- মেয়েদের মন এতোটাই দুর্বল যে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই স্বামী” নামক মাতাল মাদুলী ঝুলিয়ে নিজের সতীত্বকে বড়াই করতে ভালোবাসেন -- এই হচ্ছে আমাদের সার্কাশ” সমাজ । খেলা ই দেখায় খেলেও কিন্তু হারাটাকে কখনই মেনে নিতে চায় না ।

মধ্যবিত্ত বাড়ির মেয়েদের অতিরিক্ত খারাপ পথে যাওয়ার কোন চান্স ই থাকে না । তঁাদের দৌড় ওই পিকনিক না হয় কলেজ ক্যান্টিন বা কলেজ বাথরুম অবধি -- লিভ টুগেদার বা লেসবো র দুঃসাহস তঁারা জীবনেও দেখাতে পারবেন না ¡ আমার মতে ছোটোবেলার প্রেম কারোর জীবনে শেষ পর্যন্ত থাকলে বা তঁাকেই বিয়ে করলে আমি মনে করি তঁার মহাসুখী কেউ নন -- কারন তঁাদের মধ্যে আন্ডারস্টেন্ডিং টা খুব বেশী থাকে , ঠিক যেমন রোদ তেমন বৃষ্টি -- নাতিশীতোস্ন ওয়েদার - খুব ই স্বাস্থ্যকর --- বাদবাকি মেয়ে বা ছেলেরা -- অপরিচিত --- তঁাদের জন্য একটাই নীতিবাক্য আপনারা পরের জিনিসটাই আপন করছেন !-- সাবধানে চলবেন ¡কারন কুড়ি পঁচিশ পর কোন ছেলে মেয়ে ই সিঙ্গেল থাকেন না --- কেউ না কেউ জীবনে থাকবেই?

Continue

--
অরুণিমা মন্ডল দাস
২৬ জানুয়ারী ২০১৬
কলকাতা, ভারত।

0 Shares

৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ