নারী তুমি,অদেখা অনেক রূপ তোমার।কখনও বলো ত্যাগেই তোমার সুখ বড়! তবে জীবনের মাঝপথে কেন এই দীর্ঘ নিঃশ্বাস।বিয়ে তোমার যদি হয় ষোল সতেরো বছরে।মাঝপথেই বা কেন বলছো, এই জীবনকে শেষ সময়ই ও তো বলতে পারো।যতো সখ ছিলো তোমার,জীবনের প্রথম বেলাতেই দিতে হয়েছে জলাঞ্জলি।কেন, তা তো তুমিই ভালো জান।
বিয়ের পরে স্বামীর হাত ধরে চলে এলে।চোখ বন্ধ করে,আজীবন বিশ্বাসের হাত ধরে।স্বামী তোমার সুখে রাখবে বড়ই। হ্যাঁ,সুখে তো তুমি আছই।সুন্দর পদমর্যদার চাকুরি।থাকা খাওয়া,পোষাক কি নেই ওই সংসারে।কিন্তু তুমি ভালো আছ তো নারী? স্বামী বললো প্রথম দিনেই তোমায় অনেকগুলো ভাইবোন কিন্তু তার।মানুষ করতে হবে সব তোমায়।তখন যেন বয়স কতো তোমার? ষোল না সতেরো? সংসার মানে বোঝো তুমি?কতজনের জন্য কতটুকু চাল দিতে হবে জানো তুমি?তবুও তোমায় এদের সবাইকে মানুষ করতে হবে।হোক না এরা তোমার বয়সে বড়।এদের দু চারটা কাপড়ই না হয় ধুয়ে দিলে,প্লেট ধুতে সমস্যাই বা কি বলো?তোমার পরার কাপড়টা না হয় দিলেই বোন সমান ননদটি কে।তুমি বউ সখ কি আর করবে বলো?যতোই তারা তোমার বয়সে বড়।বাবার বাড়ির গয়নাটা দাও না বোন সমান ননদটি কে।পার হোক।যাক না ও শশুরবাড়ি।চাকুরিজীবী ননদ হলেও,থাক না ওর টাকাটা জমা।ওর যে হক আছে তোমার আমার প্রতি।
হক!কোন হক!এই প্রশ্ন করতে করতে তুমিও নারী সময় পার করলে।দায়িত্ব সব করলে ঠিকই। মনের কোণায় জমা রইলো ক্ষোভ অনেক।সখ যা ছিলো তোমার সিন্দুকে ঢুকে গেলো।এখন সন্তান মানুষ করতে করতে দিন চলে গেলো অজানায়।খুঁজে কি পেলে সব?
তুমি নারী ঐ কদম গাছ।গাছে থাকলে মৌ মৌ গন্ধে সবার মন মাতাল করো।সবুজের মাঝে হালকা কমলার যে সৌন্দর্য তুমি ছড়াও,তা নিচে পরলেই পঁচে বিশ্রি গন্ধে সবার বিরক্তির কারণ হও।নারী তুমি কর্তব্য করতে না পারলে সবার কাছে খারাপ হও।আর কর্তব্য করলে নিজেই নিজের কাছে বিরক্তি প্রকাশ করো।
নারী দিন তোমার চলে গেলো এভাবেই।অপেক্ষা তোমার আর একটি নতুন প্রজন্মের জন্য।
২৪টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
নারীকে নিয়ে আপনার লেখা পড়ে কেমন একটা চাবুকের আঘাত খেলাম
এমন ভাবে ভাবিনি আসলে
নারীর নিজের মাঝে থাকা নিজকে নিয়ে ভাবনা,অক্ষমতা,ক্ষোভ আপনার লেখায় এসেছে
ভালো লেগেছে আপনার লেখা
লিখুন নিয়মিত।
শুভ কামনা।
মৌনতা রিতু
ভাবনাগুলো কখন কলমে চলে আসে জানিনা।এই তো সব এলোমেলো ভাবনা।
মোঃ মজিবর রহমান
নাহ! এত করাঘাত লেখা!
হ্যা আপু আমাদের সমাজ ব্যাবস্থাটা এমন।
জন্মদাতা বাবা-মা মেয়ে কতটুকু কাজকর্মের যগ্যহল না হল, মেয়ে কে সঠিক বা যগ্যমাফিক করা হল কিনা না ভেবেই
পাত্রস্থ করা জন্য হুমড়িখায়ে পড়ে। মেয়ের বয়স, সাধারন গ্যানবুদ্বী কেমন হল এটা চেয়ে দেখে না। অল্প বয়সেই যদি একটি ভাল পাত্র পায় দিয়ে দাও। ও কিছু হবে না।
আরে এই পাত্র তাঁর মেয়ের অবস্থা কেমন করবে ভেবে না ভেবেই দেয় বিয়ে। আরে বাবা মেয়ের স্বাভাবিক একটি বয়স ত হয়া দরকার! নাকি?
ধন্যবাদ আপু সুন্দর পস্টের জন্য।
মৌনতা রিতু
আসলেই।কেন যে এইভাবে হুমড়ি খেয়ে পড়ে!ঐ যে একটা কথা আছে না,#আইতং যাইতং বিবাহের কারোনং#অর্থাৎ কুছু বাবা মা মেয়েকে মাধ্যমিক পর্যন্ত ঐ বিবাহের জন্যই পড়ায়।কোনোরকম ভালো পাত্র পেলেই ধাক্কা মেরে ঘর থেকে বেল করো।
ধন্যবাদ ভাই পড়ার জন্য।
আবু খায়ের আনিছ
নারী নিয়ে আপনার ভাবনা চিন্তা প্রসংশার দাবীদার। স্বাগতম আপনাকে, লিখতে থাকুন।
মৌনতা রিতু
ধন্যবাদ।
ভোরের শিশির
এ নিয়ে বোধহয় এইটা আপনার ২য় পোস্ট আমি যতটুকু দেখলাম। ২য় পোস্ট হিসেবে দারুণ বলেছেন। ঐ যে সময় নিতে বলেছেন! আসলেই, ধৈর্য্য ধরে দেখতে হবে। একজন মেয়ে, সে হগয় বৌ, ননদ বা অন্য কেউ কিন্তু একসময় তাকেও অন্যের জায়গা দখল করতে হবে কিন্তু ধৈর্য্য ধরলে সব কিছুই ঠিক করতেও পারে…
বেশ ভাবিয়ে তোলার মতো কথা বলেছেন আপু। ভাল লাগা রইলো এইজন্য।
স্বাগতম সোনেলায়, আরো লিখুন, নিয়মিত লিখুন এবং সোনেলায় অন্যদের পোস্টেও অংশগ্রহণ করার আমন্ত্রণ রইলো। ধন্যবাদ। -{@
মৌনতা রিতু
উৎসাহ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।লেখা তো অবশ্যই পড়ি।কিন্তু অনেক সময় মন্তব্য করতে ভয় পাই।হাত কাঁপে।কি লিখবো ভাবতে থাকি।
ভোরের শিশির
মন্তব্য করতে করতে বুঝে উঠবেন যে ভয় লাগছে না। সহজ করে বলে দিবেন মনে যা আসে। 😀
শুভেচ্ছা আবারো। -{@
মারজানা ফেরদৌস রুবা
প্রতিটা নারীর প্রতি আমার একটাই কথা, নিজেকে নিজে মূল্যায়ন করো আগে। আমি বলছি না যে তুমি আত্মস্বার্থবাদী হও। আমি বলছি তুমি নিজের ব্যাপারে সচেতন থাকো। তাই তোমাকে তোমারই মূল্যায়ন করতে হবে আগে।
যেদিন তুমি নিজেকে মূল্যায়ন করবে সেদিন তোমার চারপাশের সকলেই তোমাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।
ভালো থাকুন। আর আপনার লিখা আজই প্রথম পড়লাম। শুভেচ্ছা আপনাকে।
মৌনতা রিতু
ধন্যবাদ।
অরুনি মায়া
আসলে নারী জাতিকে যতদিন মানুষ না ভেবে মেয়ে মানুষ ভাবা হবে ততদিন এই অবস্থার উন্নতি হবেনা আপু 🙁
ভাল লিখেছেন |
মৌনতা রিতু
আমার সামনে যদি কেউ মেয়ে মানুষ বলে,তার কিছুটা হিসাব কষে দেই।সে আর জীবনেও বোলবে না।
ব্লগার সজীব
” স্বামী বললো প্রথম দিনেই তোমায় অনেকগুলো ভাইবোন কিন্তু তার।মানুষ করতে হবে সব তোমায়।তখন যেন বয়স কতো তোমার? ষোল না সতেরো? সংসার মানে বোঝো তুমি?কতজনের জন্য কতটুকু চাল দিতে হবে জানো তুমি?তবুও তোমায় এদের সবাইকে মানুষ করতে হবে।হোক না এরা তোমার বয়সে বড়।এদের দু চারটা কাপড়ই না হয় ধুয়ে দিলে,প্লেট ধুতে সমস্যাই বা কি বলো? “_______ আপু এভাবে ভাবিনি কোনদিন।আপনি তো আমার ভাবনাটিই পাল্টে দিলেন। আপনার প্রতি শ্রদ্ধা আপু -{@
মৌনতা রিতু
সত্যি কিন্তু হয় তাই।এই ক্ষোভগুলো থেকে যায় মনের কোনে।ভালোবাসা থাকলেও শ্রদ্ধা থাকে কি ওখানে?একটা মেয়ে কেন ভাববে তার থেকে তার স্বামির কাছে ভাইবোনই বড়!কেন বৌ দিবে তার বাবার বাড়ির গয়না?কেন সব চাওয়া তার জলান্জলি দিতে হবে,কেন কোথাও একান্তে বেড়াতে যেতে পারবে না?
ধন্যবাদ তো দিতেই হয় পড়ার জন্য।ধন্যবাদ।
ব্লগার সজীব
আপনি নিজেও জানেন না হয়ত যে আপনি আমার কত বড় উপকার করলেন।স্ত্রীর উপরে এসব আমি চাপিয়ে দেবো না, আপনার লেখা পড়ে এই উপলব্দি হয়েছে আমার আপু।ধন্যবাদ আপনাকে।
মৌনতা রিতু
আসলে প্রথমে ঠিকই মেনে নেই আমরা।পরে একসময় মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে,ক্ষোভে পরিণত হয়।সংসার তো ঠিকই থাকে কিন্তু ভালোবাসা শ্রদ্ধাবোদ থাকে কিনা জানিনা।
ছাইরাছ হেলাল
বাস্তব উপলব্ধি আপনার লেখায়।
লিখতে থাকুন।
মৌনতা রিতু
হুমমম।চেষ্টা করবো।সাহস দেবার জন্য ধন্যবাদ।
নীলাঞ্জনা নীলা
আপনি তো আমার মনের কথা লিখে ফেললেন! আর এমন দৃশ্য কতো যে দেখেছি। চোখের সামনে বিয়ে হয়ে গেলো বন্ধুটির। কতো ধরণের মানসিক যন্ত্রণা পেয়েছে। কিন্তু ভাগ্য ভালো ছিলো ওর স্বামী অসম্ভব ভালো একজন মানুষ হওয়ায় ওর ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। শুধু কি এই? আরোও অনেক আছে। কম বয়সের বিয়ের পরিণতি ভালো হয়না কখনোই। খুব কম। আর পুরুষরা তো জীবনেও বুড়ো হয়না। তাদের তো মৃত্যুর আগ পর্যন্তও ডানা থাকে। তাই উড়তে পারে।
বুড়ী হয় মেয়েরাই। কম বয়সে বিয়ে হলে তো কথাই নেই।
এতো ভালো লেখেন কি করে? খুব, খুব, খুউউউউউউবই ভালো লেগেছে। (y) -{@
মৌনতা রিতু
সত্যি তাই।আমার বিয়েছে কিন্তু,সেই সতের বছরে।কতোকিছু যে দেখলাম!কিন্তু আমাকে বুড়ি বানায় ওর কি সাধ্যি!হাহাহা।এখন ডানা কাটার সময়।
এই ধন্যবাদ তোমায়।পাশে থাকার জন্য,পড়ার জন্য।
বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা নিও।
নীলাঞ্জনা নীলা
বুড়ী কেউ কাউকে বানাতে পারেনা। যেমন আমি বুড়ী হবোনা এ জীবনে। 😀
অপার্থিব
সিমন দ্য বোভয়ার বলেছিলেন “কেউ নারী হয়ে জন্মায় না , সমাজ তাকে নারী হিসেবে গড়ে তোলে”। পুরুষতান্ত্রীক সমাজ ব্যবস্থা নারীদের জন্য
গতানুগতিক কিছু মুল্যবোধ তৈরী করে রেখেছে। এই মুল্যবোধ গুলো ভাঙ্গার মধ্য দিয়েই নারীদের মুক্তির পথ নিশ্চিত করতে হবে।
মৌনতা রিতু
আসলেই ঠিকই বলোছেন।
ধন্যবাদ।