চল, সমুদ্রে যাই

ছাইরাছ হেলাল ২০ জানুয়ারি ২০১৬, বুধবার, ০৭:৩৬:২০পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি, ভ্রমণ ৪৭ মন্তব্য

বরিশাল থেকে কুয়াকাটার দূরত্ব একশ' কিলোমিটার, প্রশস্ততর মসৃণ রাস্তায় গড় গড় করে ছুটে চলা মজাই মজা। পটুয়াখালী পর্যন্ত একটি ফেরি। বড় নদী হলেও দু’দুটো বিশাল ফেরির কারণে তেমন মেজাজ ভঙ্গ হয় না সাধারণত।
যাওয়া হবে কী হবে না, এমন ভাবাভাবির মধ্যেই সব ঠিক হয়ে গেল, একটি বড় গাড়ী ও একটি ছোট গাড়ী, হোটেল বুকিং। সাকুল্যে দুই ড্রাইভার সহ এগারজন। তিন জন বুড়ো, আমি কনিষ্ঠতম, কুট্টি রকম পালের গোদা।
আগে থেকেই ঠিক ছিল ছেলেরা পটুয়াখালীতে টেনিস খেলবে। ধুম খেলা ও আপ্যায়ন শেষে রাত দশটায় কুয়াকাটার পথে রওয়ানা। তিন বুড়ো এক গাড়িতে বাকী ধাড়ী দুষ্টের দল অন্য গাড়িতে। সামান্য পথ চলার পর ই ফোন এলো ওদের ক্ষুধার উদ্রেক হয়েছে, পরাটা ও ডিম ভাজি খেতে চায়। অগত্যা গাড়ি থামিয়ে খোঁজ দ্যা শুরু হল, নো সুবিধা,
সময় নষ্ট করে আবার চলতে শুরু করা, ভাল কথা, সামনে দুটো ফেরি, একটি সামান্য বড় , এখানে এসে পাওয়া গেল কাঙ্ক্ষিত গরম পরোটা+ ডিম, সাথে বিখ্যাত রসগোল্লা। মার মার কাট কাট করে খাওয়া শুরু ও সেরাম ভাবেই শেষ। দূরত্বে বসে শুধুই দেখে যাওয়া। টাইম মেশিন অতীব দরকারি। ফেরি এপারেই, গাড়ির সংখ্যা অনধিক, তাই অপেক্ষার ফ্যা ফ্যা। বিশাল ব্রিজ আলো জ্বালিয়ে টিটকারি মারছে। কাজ শেষ, যেহেতু আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন হয়নি তাই চলাচল ও চালু হয়নি, অবশেষে পাড় হলাম অন্য ফেরিটিও, সেখানেও ব্রিজের কাজ শেষের পথে, কমপ্লিট ঝামেলা মুক্তি আসন্ন।
রাত একটায় হোটেলে গাট্টি ফেলে সবাই ভো দৌড় সি বিচে, আহা মড়ি মড়ি। ঘণ্টা খানেক পর সবাই ফিরলাম, আবার এক প্রস্থ খাওয়া খেয়ে,

আমার মন পড়ে রয় সাগর পাড়ে....................................
সমুদ্র আমার প্রাণ, হোটেলে ফিরতে মন চাইছিল না। মনে মনে বললাম, আসব আবার একটু পরেই।

শুরু হল গপ শপ, কিসের ঘুম কিসের নিদ্রা, ঠিক হল খুব সকালে সূর্যোদয় দেখা এখানে এই বিচ থেকেই(আসলে ঠিকঠাক ভাবে সূর্যোদয় দেখতে হলে প্রায় ন’কিলোমিটার দূরে যেতে হয়)। পাশের রুম থেকে আওয়াজ আসছিল গানের জোরেশোরেই।
রাত বাকী থাকতেই কাউকে কিছু না বলেই একাকী ফিরে আসলাম আবার ও, প্রিয় সমুদ্রের কাছে, বসে থাকতে থাকে কখন যে সকাল হল জানি না, খেয়াল হল ওদের ডাকাডাকিতে।
সারাদিন টরেটক্কা, যে যার মত মার্কেটিং, ভাড়ার মটর সাইকেলে যত্রতত্র বিচরণ,(আমি কিন্তু কাছ ছাড়া হইনি/করিনি সমুদ্রের) সূর্যাস্তের সময় জনসমুদ্রে যেন সমুদ্র ভরে গেল, সে এক অভাবনীয় দৃশ্য, এত্ত এত্ত ভালোবাসা সমুদ্রকে ঘিরে!!

ফেরার পথে ফিরতে শুরু করলাম, আনন্দের বেদনা নিয়ে।

আসব আমি মেঘ হয়ে কোন এক রাতে, অপলক মৌনতার চরে কবিতারা স্বপ্ন মেলবে, নিঝুমের নিঝুম রাতে, এই ভেজা বালিয়াড়িতে; এইইই, নটি সমুদ্র, ছেনাল কান্না কেঁদোনা, ফিরে তো আসি তোমারই অলিন্দে, হাতে নিয়ে বিষের পেয়ালা আসব আবারো। নীরবে গড়ান তোমার দু’ফোটা লোনা জলে জলবৃষ্টি দিয়ে যাব, হারিয়ে যাব আবারো এমন করে, জনস্রোতের এই উৎসবে।

পুনশ্চ:
তলে তলে টেম্পু চালাও; গাড়ি, বাস, ঢাউস ট্রাক ও,
আমি কইলেই কও হরতাল!!
বুঝি, সব ই বুঝি,
অসভ্য সমুদ্র,

0 Shares

৪৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ