ঋণ

শুন্য শুন্যালয় ২৩ জুলাই ২০১৬, শনিবার, ০৩:২৯:০৬পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি ৬০ মন্তব্য

ক্লাস শেষে খাতাপত্র হাতে এক দৌঁড়ে বাথরুম সিরিয়াল দিতে গেলাম। বাথরুম খালি থাকলে দুইখান চাঁন্দ হাতে পাওয়ার মতই আনন্দ, কিন্তু না, আজ অমাবশ্যা। সর্বনিম্ন যেই সিরিয়াল পাইলাম তার নাম্বার ৭ এবং কামরুন নাহারের পরের সিরিয়াল আমার। মুখ কালো করে রুমে ঢুকলাম। রুমে ঢুকতেই মুন্না আপু জিজ্ঞেস করলো, বাথরুম পাইছো? তোমার পরে আমি।
বললাম ঠিক আছে আজ আর গোসল করতে হবেনা।
কেন?
কারন আমার আগে কামরুন।

কামরুন আমার ক্লাসমেট এবং পরে আমার রুমমেট হয়েছিল। তার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে হাতে ছোট্ট এক বাটিতে কাঁচা হলুদ আর ময়দা মিশিয়ে বাথরুমে ঢোকা। গ্রীষ্ম, বর্ষা, মাঘ মাসের শীত, টাইফুন এমনকি আমাদের ৪০ নাম্বার সিগন্যাল প্রফেশনাল এক্সামও এই রুটিনের কোন পরিবর্তন আনতে পারে নাই। একবার এক দূর্যোগের সময় কলেজের বিদ্যুত সাপ্লাই, পানি সাপ্লাই সব বন্ধ হয়ে গেলো, শুনতে পেলাম শহরের একমাত্র বাজারেও বন্যার পানি উঠেছে তবুও রিস্ক নিয়ে আমরা বাজারে ছুটলাম বেশি করে মোমবাতি, শুকনা খাবার এসব জমিয়ে রাখতে। কামরুন হন্যে হয়ে কাঁচা হলুদ খুঁজতে লাগলো।

মুন্না আপুকে জিজ্ঞেস করলাম, খালা (বুয়া) কই?
বলে, বিদায় করে দিয়েছি।
কি? আমার মাথায় হাত। কেন?
বলে, পলা বরিশাল থেকে ফিরেছে। কেরোসিনের স্টোভে মাত্র ভাত চড়াইছে, খালাকে বললাম এক কৌটা চাল বেশি দেন খালা। খালা তার ছেলের সর্দি মুছে চালের ডিব্বায় হাত ডুবিয়ে চাল তুলে না ধুয়েই চুলার অই হাড়ির মধ্যেই ছেড়ে দিলো।
ইয়াক!
বলেছি ধন্যবাদ খালা, বাড়ি যান আবার পরে দেখা হবে।
খালার শোকে আমি পাথর হয়ে গেলাম। রান্নাবান্না বিশাল ভেজালের কাজ। ওদিকে রিপা আপু পড়তেই আছে, তার এদিকে কান নাই, দুইদিন পর কার্ড ফাইনাল পরীক্ষা। জিজ্ঞেস করলাম, রিপা আপু কাল ঘুমের মধ্যে কি লিখতে ছিলেন?
কয়, কি লিখছি?
তা কি আমি জানি? বিড়বিড় করে কি বলতেছিলেন আর শূন্যে আঙ্গুল দিয়ে কি যেন লিখতেছিলেন। মুন্না আপু বললেন হা হা তুমি ওর হাতে তখন একটা খাতা ধরিয়ে দিতে।
এই মুন্না আপুর কথা আগে একবার লিখেছিলাম। মনে আছে সেই কাঁটা পায়ের গল্প? আমার খুব পছন্দের আপু ছিলো, আপু তার সব কথা আমাকে শেয়ার করতো। আপুটা যেন পরে কেমন হয়ে গেলো। এক হুজুরের সাথে বিয়ে হলো, আমি পাশ করে বের হবার আগেই তিন বাচ্চার মা হয়ে গেলো। মিস করি আপুকে।

হাত মুখ ধোবার জন্য বেসিনে গেলাম। হাতে পানি নিতেই হাত ফস্কে পানি পরে গেলো। কারন -গান। বি ব্লক থেকে উচ্চ স্বরে গান গাইছে আইরিন আপু, "চোর আমি, ডাকু আমি বলোনারে, দুনিয়াতে সাধু আছে কয়টিরে?" সেকেন্ড ব্যাচের দজ্জালদের ভীড়ে এই একজনই হাসিখুশি আর মজার এক আপু। তার জুনিয়ার রুমমেটের সাথে তার সারাক্ষন লেগেই থাকতো, মধুর ঝগড়া যাকে বলে। তাদের কথোপকথন এমন ছিলো---
-তোর মতো ঝগড়াটে মেয়ে প্রত্যেকদিন জামাইএর কাছে লাত্থিগুতা খাবে।
=তাইলে আপনিও কম খাইবেন না।
-তা খাইতে পারি, তবে আমি হলফ করে কইতে পারি তোর থেকে আমি দুইদিন সংসার বেশি করুম
=তা করতেই পারেন, সবাই তো আর আপনার মতো লাত্থিগুতা খেয়ে সংসার করতে পারেনা। 😀

রুম চেঞ্জ করার পরে এবার আমার রুমে সবাই এক ক্লাসের। রাত দুইটার সময় সবার ভাব উঠলো, অই গান ধর। আমি চ্যাঁচাইতে শুরু করলাম, "অনেক সাধের ময়না আমার বাঁধন কেঁটে যায়"।
একটু পর আইরিন আপু গজড়াইতে গজড়াইতে আসলো (তার কএকদিন পর এক্সাম)। দেখি, মাঝ রাত্রিরে ময়না টিয়া কইরা কে চিল্লায়। মুখ কাঁচুমাচু করে বললাম আপু স্যরি, আর গাইবোনা। প্রসংগত এর দু একদিন আগেই বিল্ডিং এর নানা কাজ চলছে। আমাদের ব্লকের টাইলস লাগাবোর জন্য মিস্ত্রীরা এসে যেই মেশিন চালু করেছে, আইরিন আপু বললো, কি হচ্ছে এখানে?
টাইলস লাগাবো।
কোন টাইলস ফাইলস না, বের হন এখান থেকে। ব্রেইনে এমনিতেই গিট্টু লেগে আছে পড়তে পারছিনা।
প্রিন্সিপাল স্যার বলছে।
আপনার প্রিন্সিপাল স্যার কিংবা তার আব্বারে গিয়া বলেন আমি টাইলস লাগাতে দেইনাই। যান এখান থেকে। মিস্ত্রীদের আর ত্রি সীমানায় দেখিনাই।
সেই আপু ঝাড়ি দিয়ে সারারাত জেগে আমাদের রুমে বসে গান গাওয়ালো পানিশমেন্ট হিসাবে। আপু মিস ইউ।

মনে পড়ে,
রাত ১০ টার মধ্যেই ঘুমিয়ে যাওয়া কে রাত ১২ টায় একদিন ক্লাসমেটরা এসে খাট থেকে টেনে ফেলে দিলো। ভূমিকম্প ভেবে উঠে দেখি বান্দরনী গুলো। বলে, আজ বিজয় দিবস আর তুই ঘুমাচ্ছিস? থালাবাটি চামচ দিয়ে বাড়ি দিতে দিতে ছাদে গিয়ে উঠলাম। এরপর গান, দেশের যতগান,  "একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতায়", "প্রতিদিন তোমায় দেখি সূর্য্যরাগে" আরো কতশত--
এখানেও প্রসংগত উল্লেখ্য, কলেজের একমাত্র ছাত্রাবাসের ছাদ আমাদের থেকে মাত্র কএক হাত দূরে ছিলো 😉

প্রিয় কলেজ,
ফিরে ফিরে আসবোই, তোমার কাছে যে আমার অক্ষত ঋণ ...

0 Shares

৬০টি মন্তব্য

  • লীলাবতী

    স্মৃতি তুমি চটপটি, ফুচকা, চানাচুর, বাদাম 🙂 তা বুয়ার ছেলের ছর্দি মাখান ভাত খাবার টেস্ট কেমন ছিল? বুয়া যে মাত্র একদিন এমন করেছে তা তো নয়, বুয়ার জন্য কান্না শুনে বুঝলাম তার রাধা ভাত টেস্টিই ছিল।
    মধ্যের কথায় পরে, ছেলেদের ছাদের কথা জানতে চাই। ঘুমের মধ্যে আপনি ছাদে উঠতেন না? 🙂

    • শুন্য শুন্যালয়

      ইয়াক, ইয়াক, এই লীলা, সজুর জন্য আমার পোস্ট বরবাদ হয় খালি। একদিন নাকে কিস করার এক ছবি দিলাম, সজু কয় যদি ছেলেটার সর্দি থাকতো 🙁
      ভাতের খবর নিয়া লাভ নাই, অইটা ফালায় দেয়া হইছিল, তয় রান্নার ভয়েই আমি শোকে কাতর হয়ে গেছিলাম, তারপর দুইদিন অন্তর রুম থেকে হিটার সিজ করে নিয়ে যেত, স্টোভের চুলায় রান্না করেছেন ম্যাডাম? হাড়ি মাজতে মাজতেই কোমর এমনিতেই বাঁকা যেত তাইলে আপনার।
      ছাদের কথা সিক্রেট 🙂 ছেলেদের ছাদ বলে কথা, রোমান্টিক ভাব না আইলে ক্যাম্নে লিখি!! লিখুমনে একদিন, উৎসর্গ ভত্তাবতী। 🙂

      • লীলাবতী

        শুন্য আপু, আপনাকে এই লেখায় খুবই সপ্রতিভ মনে হয়েছে, শব্দ নির্বাচনের জন্য সামান্য থমকে থাকতে হয়নি সম্ভবত আপনাকে, পাঠকদেরও নয়। যেমন আপনার মন্তব্যে আসল শুন্য শুন্যালয়কে দেখা যায়। মন্তব্য করতে আপনার ভাবতে হয়না, যতটা ভাবেন আপনার লেখার জন্য। আমি কি বুঝাতে পেরেছি আপনাকে?
        রোমান্টিক ভাব আসুক, অপেক্ষা করি তাহলে 🙂 লেখাটি প্রিয় তালিকার কপালে একটি টিপ হয়ে থাকলো -{@

  • মোঃ মজিবর রহমান

    আপুরে কতই কি মনে মনে জাগে
    কতই সৃতি মনের গহীনে উঠলে উঠে
    কত জন কত কথার মালিক মনে জাগে
    খুব ভাল লাগলো আপু।

    আমরা একবার গেয়েছিলাম
    ও আমার দেশের মাটি তোমার পাছায় মারি লাথি।
    ও মাইর যা খাইছিলাম জানি না

  • জিসান শা ইকরাম

    ঝর্নার মত কলকলিয়ে লিখে গেলেন, পাখির অবিরাম কিচির মিচির কথা বলার মত।
    এমন উপস্থাপনায় কেন যে আপনি লেখেননা তা আমার বোধগম্য নয়। অবশ্য ট্যালেন্টদের লেখা সবার জন্য নয়, একারনে হয়ত এমন লেখা লেখেন না। যাই হোক এমন ধরনের লেখা বছরে একটি পেলেই বর্তে যাই।
    কি আর করা ;?

    • শুন্য শুন্যালয়

      বাব্বাহ এত প্রশংসা! ট্যালেন্ট টুলেন্টতো জানিনা, আজকের ভোরে ঘুম পাড়ানি গান শুনতে পেলাম, ভোরকে বললাম, ঘুমাও, আমি লিখি। তারপর কিসব লিখলাম কে জানে। এমন করে বললে কিন্তু ভাল্লাগে 🙂 লিখিনা কে বললো? সারাক্ষনই তো লিখছি যা ইচ্ছে। 🙂

      • জিসান শা ইকরাম

        হ্যা সারাক্ষনই লেখেন, ট্যালেন্টদের জন্য।
        আমার মত সাধারন ম্যাংগ পিপলদের জন্য না। মুগ্ধ হয়ে দেখি আকাসে দুরের সুন্দর নক্ষত্র 🙂
        ইচ্ছায় সবাই স্বাধীন,

      • শুন্য শুন্যালয়

        কিচ্ছু বুঝিনাই মন্তব্য ^:^ ট্যালেন্টদের জন্য লিখি মানে? আমি সোনেলার সবার জন্যই লিখি। তার মানে দাঁড়াচ্ছে সোনেলার সবাই-ই ট্যালেন্ট। আপনি ম্যাঙ্গো পিপল তা জানি, ম্যাংগোর এখন অনেক দাম।
        ভালো লিখলেও দোষ, না লিখলেও দোষ। কঠিন, সরল সবকিছুতেই দোষ। আমিও এখন থেকে মুগ্ধ হয়ে শুধু দেখুমই, লিখুম না 🙁

      • জিসান শা ইকরাম

        আমি যে জিসান চাষী তা অনেকেই জানে 🙂 মুক্য সুক্য চাষারা ট্যালেন্ট হয়নারে ভাইডি।
        কমেন্ট বুঝলেন ন্না আবার দোষ খুইজ্জা পাইলেন?
        ভিন্ন মতের আর কমেন্টই দিমু না, জোয়াইর‍্যা নায়ের পালে হাওয়া দেওয়াই ভাল 🙂
        হাওয়া ভাল দিতে পারি, সাইকেলে হাওয়া দেয়ার অভিজ্ঞতা আছে বিদেশে 🙂

      • শুন্য শুন্যালয়

        ভোরের না ঘুমানোর রোগ আছে, রোজ ঘুমায় না, আর লেখার জন্য ভোর কে ঘুমায় রাখতে পারবোনা জনাব, ভোর না হইলে আমার দিন হয়না। ইহা আমার মনের আনন্দ। 🙂

  • নীলাঞ্জনা নীলা

    আপু তুমি যে শয়তানের দুই নম্বর পজিশনে আছো আমি ছাড়া আর কে বলতে পারে? কতো যুদ্ধ করে প্রথম পজিশন ধরে আছি। ^:^

    জীবন থেকে যে দিনগুলো চলে গেছে, সেসবই গল্প হয়ে যায়। এই তো সেদিন। পাজি, নচ্ছার সময়কে পেলে বাঁশ দিতাম কনফার্ম। 😀

  • ছাইরাছ হেলাল

    আচ্ছা এই যে বিশাল সিরিয়াল তা না হয় বুঝলাম, বড়টি চেপে বসলে তার সমাধান
    কী সে বিষয়ে কুনই আলোকপাত দেখলাম না,
    এ হাত দূরে ছেলেদের ছাদ! এত্ত দূর ক্যা! আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। এটা নিশ্চয়ই
    এক বা দু’ আঙ্গুলের বেশি না।
    কাঁচা হলুদের আঁচ ছবি-ছুবিতে টের পাচ্ছি,
    পিচ্চির সর্দির জন্য বুয়াকে তুলে দেয়া ঠিক হয়নি, শুধু সর্দি!! আরও কত কী খাইয়েছে তার হিসাব কে নেবে!।

    দ্রুত ফিরে ঋণ-ফিন হা আছে শোধ করে দিন।

    • শুন্য শুন্যালয়

      আজকে কারো মন্তব্য আমার মাথায় ঢুকছে না। বড়টি চেপে বসলে মানে কী? ^:^
      কএক হাত দূরে রে এক হাত বানায় ফেলছেন, জানিতো এমনই বলবেন, এক দুই আঙ্গুল কইলে কি বলতেন কে জানি! কিছু ঋণ শোধ হয়না। হবেওনা।
      সর্দির প্রতি দেখি আপনার মোহাব্বত জেগেছে 🙂 বেশি হিসাবে গন্ডগোল হবার সম্ভাবনা, মাথার, পেটের তাই পত্রপাঠ বিদায় 😀
      ও আচ্ছা বড়? বাথরুম আর বড় তো আলাদা। হুম সেখানেও লাইন দেয়া লাগতো 😀

      • ছাইরাছ হেলাল

        আপনি ঋণ নিয়ে কবরে যাবেন তা ভাবতেই পারি না,
        ফেরেশতাদের মাইরমুইর কিন্তু ভয়ংকর, সে চিক্কুর আমাদের সহ্য হপে না।
        পরিশোধিত ঋণে মোলায়েম ইহকালও নিশ্চিত করুণ।
        অন্য ছাদের গপ্পো বলুন মিথ্যেমিথ্যি ভাব মেলে।

      • শুন্য শুন্যালয়

        মিথ্যে তো কবিদের কাজ, দাঁতের কোনায় ফিকফিকে হাসি নিয়ে তারা মর্মপীড়ার লেখা লিখতে পারে, আবার বলতে পারে লেখাতো লেখাই। আমিতো কপি নই 🙂 শুধু ভাব কেনু, ভাবের ভবন নিয়ে কি কান্ডাকান্ডি সবই লিখবো সহি বঙ্গানুবাদ সহকারে।
        ফেরেশতাদের ভয় কেনু দেখাচ্ছেন? মইরা গেলে না হয় এসে আত্মীয়ের মতো ঘোষনা দিলেন, মৃত ব্যক্তির কাছে কারো কোন ঋণ থাকলে বলুন নয়তো ক্ষমা করে দিন। আর তাও না পারলে না হয় চিক্কুরের চক্ষুজল মাপতে বসবেন, কি আর করার।

  • জিসান শা ইকরাম

    কাঁচা হলুদ কামরন আপা তো তাঁর কর্ম সম্পর্কে খুবই সিরিয়াস ছিলেন। কাছের প্রতি এমন একাগ্রতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। সবাই যদি কামরুনের মত হতে পারতো, তবে কতই না ভাল হত 🙂
    খালার দুস্কে কাতর হইয়া এর পর তাঁর মত খালা একজন এনেছিলেন তো?
    এবার বুঝলাম আপনি কিভাবে এত ভাল লেখেন, রিপা ঘুমের মধ্যে কি লিখতেন, সব আপনাকে বলে গিয়েছেন, ভাল লেখার গুপন রহস্য উন্মোচিত 😀
    মুন্না আপুর তিন সন্তান আপনার বিয়ের আগেই হয়ে গেলো, আপনি বিয়ে করেছেন কত বছর হলো? ঐকিক নিয়মে বের করে ফেলুন তো কত বাচ্চার মা হওয়া উচিৎ আপনার? এত কিপ্টুস কেন আপনি?
    গান আপনি ভালোই পারেন, প্রমান তো এখানেই আছে, এই সোনেলায়। তা ময়না টিয়ার গানটা একদিন শুনাইয়েন আমাদের, ধন্য হই।
    ফিল্ড মার্শাল আইরিন আপু কই? যেমন কমান্ড ওণার, এমন একজনকেই সোনেলা খুঁজছে, মডু এনাকে বানানোর জন্য সুপারিশ করলাম। যারা মডু তারা নরম, এগো দিয়া কাজ চলতো না।
    কয়েকহাত দূরের ছাত্রাবাস নিয়ে কিছু লেখার অপেক্ষায় থাকলাম, ব্যাপার না ছাত্রজীবনের আট খুন মাফ।

    লেখা খুব ভাল হয়েছে।

    • শুন্য শুন্যালয়

      আপনার পর্যবেক্ষন ক্ষমতা ভালো, কামরুন স্টুডেন্ট হিসাবেও ভালো ছিল, ৫/৬ এর মধ্যে থাকতো সবসময়।
      দুঃখ খালার জন্যে নাগো ভাইজান, কামকাইজের ভয়, আপনাগোর রান্নাবান্না তো করা লাগেনা, লাগলে না বুঝতেন ক্যান কানছিলাম। তার মতো স্পেশাল খালা এক পিচই পাইছিলাম, আর পাই নাইক্কা এরপর যারে পাইছিলাম তারা খালার মতো এত পরিষ্কার আছিলো না 😀
      রিপা আপু প্রায় রাতেই এই কাজ করতো, দিনে যা পড়তো রাইতে ঘুমের মধ্যে আবার পড়তো, দিনে লিখতো রাইতেও লিখতো। আচ্ছা আচ্ছা আমার লেখা তাইলে স্বপ্নে পাওয়া, এইজন্যেই তো দিনের বেলা লেখা মাথায় আসেনা ক্যান 🙂
      আপনি কিন্তু আমার কষ্টের জায়গায় হাত দিয়া ফালাইছেন 🙁 খুব শখ আছিলো পোলাপাইন ১১ খান হইলে একটা ক্রিকেট টিম বানামু, একখানই আমার বারোটা বাজায় দিছে। আপনি তো অংকে ভালো, কি কিক নিয়ম জানি কইলেন, একটু কষ্ট কইরা বাইর কইরা দেন না, কয়টা হইতো, প্লীজ লাগে। ইয়ে মানে, সময় এখনো শেষ হইয়া যায়নাই।
      ময়না টিয়া, অইটা তো গান না, চ্যাঁচানি আছিল, আপনি কি আমাকে সোনেলা থেকে ভাগাবার প্লান করছেন নাকি ;?
      আইরিন আপু এখন আমেরিকা থাকে, বছর খানেক আগে তার প্রথম বেবি হয়েছে, বোঝেন তাইলে আমার চাইতেও বেশি কিপ্টুস কেউ কেউ আছে। অবশ্য ফিল্ড মার্শাল দেখে বিয়েটাও দেরী করেই হয়েছে 😀 তারে মেসেজ পাঠাইয়া দেব, জিসান ভাইএর আইডি দিয়ে। হাতের কাছে এমন কারাতে একজন ছিল মডু বানানোর, চোখেই দেখলেন না, কি আর করার।
      ছাত্রাবাস নিয়া সবকিছু কওন যাইতো না, দেখা যাইবো আটের জায়গায় নয়খান খুন করে বসে আছি, তখন?
      আপনি ভালো হইছে কইলে ভালো না হইয়া যায়? থাংকু থাংকু 🙂 -{@

  • আবু খায়ের আনিছ

    জানিনা লেখার সময় কেমন অনুভুতি হয়েছে, তবে পড়ার সময় কখনো হেসেছি, কখনো ইয়াক করেছি আবার কখনো পুরুনো দিনে ফিরে গিয়ে গানও গেয়েছি। দুই লাইন পড়ে তিন লাইন স্বৃতিচারণ করেছি। পলিটেকনিক এর সেই বান্দরগুলোর কথা মনে গেলো।

    • শুন্য শুন্যালয়

      লেখার সময়ও এমনই অনুভূতি কাজ করেছে। স্মৃতিগুলো এতো তরতাজা ছিলো যেন মনে হচ্ছিলো এ লেখা আর থামবে না, পুরো পাঁচ বছর এক লহমায় লিখে ফেলতে পারবো, তবে সবার পিটানির ভয়ে থেমে গিয়েছি। 🙂
      বান্দরগুলোর কথা লিখে ফেলো আনিছ ভাই। আমি না থাকলেও কোথাও কিছু স্মৃতির অক্ষর পড়ে থাকবে তাও বা কম কি!

      • আবু খায়ের আনিছ

        সে লিখছি মাঝে মধ্যেই স্বৃতিচারণ করে।
        খুব সুন্দর একটা কথা বলেছ আপু, আমি না থাকলেও আমার দুয়েকটা কথা কোথাও পড়ে থাকবে তাই বা কম কি!

      • শুন্য শুন্যালয়

        হ্যাঁ এই লোভেই ছাইপাশ লিখি, কি লিখি কে জানে! তবুও লিখি।
        হুম তোমার লেখার মধ্যেও স্মৃতিচারণ থাকে, তোমার নিজের বাস্তব কথা থাকে, দেখেছি আমি। লিখো অনেক অনেক। ভালো থেকো।

  • মিষ্টি জিন

    পুরান ও সেই দিনের কথা ভুলবি কিরে হায় , ও সে চোখের দেখা , প্রানের কথা সে কি ভোলা যায়।

    কলেজ জীবনের স্মৃতি সেতো সোনার অক্ষরে লেখা থাকে হৃদয়ে,,

  • ব্লগার সজীব

    এইত আমাদের আনন্দে উচ্ছল উজ্জ্বল ঝকমকে চকচকে শুন্য আপুকে দেখা যাচ্ছে। প্রতিটি ঘটনার লেখা পড়ছি, আর ব্যাকগ্রাউন্ডে আপনাকে দেখছি। শুন্যালয়ের একটু কনা দেখিয়ে পার পেয়ে যাবেন, তা কিন্রু হচ্ছে না আপু। আরো চাই।

    • শুন্য শুন্যালয়

      আপনি যেমন পোস্ট লিখলে পোস্ট পড়ার আগেই মুখটা হাসিখুশি হয়ে যায়, তেমন মন্তব্যেও। শুন্যালয়ের একটু কণা কই? কতো দেখালাম। জয়েন পিডিএফ এর মতো জোড়া দিলেই পেয়ে যাবেন আস্ত শুন্যালয় 🙂
      লিখবো আরো অবশ্যই কিন্তু সজু লিখবেনা? পিচ্চি বেলার একটা গল্প লিখেই পার আপনিও পাবেন না। লেখা চাই। 🙂

      • ব্লগার সজীব

        একটি ঔষধ কোম্পানী প্রতিষ্ঠিত করেছি, উৎপাদন নিয়ে খুবই ব্যস্ত আপু। কোম্পানীর একটি প্রডাক্টের বিজ্ঞাপন দেব ভাবছি সোনেলায়। নীতিমালায় পড়েছি বিজ্ঞাপন দেয়া যাবেনা এখানে, আপনি একটু বলে দিয়েন সবাইকে, আমার বিজ্ঞাপনটি যেন মুছে ফেলা না হয় 🙂

  • মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)

    অনেকগুলো আপুদের গল্প শুনলাম আর ভাবলাম শুধু ছেলেরাই পাজি নয় মেয়েরাও কম যায় না।সবগুলো আপুর জন্য শুভকামনা আর আপনার পরীক্ষা পাশের মিষ্টির অপেক্ষায় 😀

  • মৌনতা রিতু

    ওরে বান্দরের দল! তাই তো মোর মেজদা কইছিল জিন্দেগীতে হোস্টেলের গান জানা মেয়ে করুম না। সকালে তাইলে ঘুমাইতে দিব না।
    এহন তোমার লেখার রহস্য জানতে পারলাম। খালা তো ভালোই পরিস্কার !

    • শুন্য শুন্যালয়

      আপনার মেজদা বুঝি জানেনা আর্লি টু বেড এন্ড আর্লি টু রাইজ মেকস এ ম্যান হেলদি? 😀
      আমি কি বলি প্রত্যেক মানুষকেই সে ছেলে বা মেয়ে হোক জীবনের কিছু অংশ হোস্টেলে লিড করা উচিৎ। নয়তো অপূর্ণ থেকে যাবে। যদিও পূর্নতার আক্ষরিক কোন সীমা নেই। আমরা তো ভোরে না রাতে ঘুমাইতে দিতাম না 😀
      হুম ম্যালা পরিষ্কার। অইটারে কেউ রাখেনাই হোস্টেলের। 🙂

    • শুন্য শুন্যালয়

      পিটানির ভয়ে অল্প লিখছি পরী নইলে টাইপ থামানো মুশকিল হচ্ছিল। 🙂
      তুমি কবে লিখবা আবার? অপেক্ষা করে আছি কতকিছু জানার জন্য। কোথায় কোথায় বেড়ালে? কি রাঁধতে গিয়ে হাত পুড়াইছো সবকিছু। ৯ মাস ধরে অপেক্ষা করছি, আর কতো?

      • খেয়ালী মেয়ে

        কার এত্তো সাহস যে তোমায় পিটানি দিবে?
        এমন লেখা আরো পড়তে চাই 🙂
        ইশ আমিও যে কতোকিছু লেখার/ জানানোর অপেক্ষায় আছি,,,কতো লেখা যে আমি অর্ধেক লিখে ফেলে রেখেছি,শেষ করতে পারছি না,,,বড্ড বেশী অলস হয়ে গেছি,আমার যে কি হবে ;?

      • শুন্য শুন্যালয়

        আলসে রোগের ট্রিটমেন্ট জানিনাতো, আমিও খুব আলসে 🙂 লেখো যখন তোমার ইচ্ছে হয়। ইচ্ছেই রাজা, ইচ্ছেই রানী, ইচ্ছেই পরী। একজন পেটাতে শুরু করলে তোমরা সবাই মিলেই পিটাবা। বাঙ্গালী না!! 🙂

  • মেহেরী তাজ

    যুগে যুগে একই ঘটানর পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।
    উফ হোস্টেল লাইফ………!

    প্রত্যেক হোস্টেলে মনে হচ্ছে কামরুন আপুর মত একটা করে মানুষ থাকে আর সেই সাথে শুন্য তাজের মত করে বাঁদরামো করার ও কেউ না কেউ থাকে।
    কি আমি নাকি একায় বাঁদর? আপনিও তো কম যান না! আপনি গলা ছেড়ে গান গেয়ে বকা খান আর আমি কেউ বকা দিয়ে আসলেই বাত্তি নিভায়ে ঘুমে যাওয়ার ভান করি….. হ হা হা হা হা।
    এমন একান্ত অনুভূতির নাম “ঋন” দেওয়া যায় আমার কখন ও মাথায় আসতো না!

    • শুন্য শুন্যালয়

      লিখতে গিয়ে কিন্তু আপনার ইয়ে মানে তোর কথা আমার মনে হয়েছে। একটা পোস্ট ছিলোনা তোর খাবার কিভাবে সুস্বাদু করবেন? অই পোস্ট। খালারে বিদায় করার পঅর অই দশা হইছিল। 🙁
      আমি বাঁদর? কি বলিস? আমিতো অনেক লক্ষি, আমি কোন ছেলেদের নিয়ে ছড়া বানাতাম না সত্যি। আর তুই যে ডেটল খাওয়ায় দিছিলি, অই বুদ্ধি তো আমার জিন্দেগী ছিলোনা 😀
      তবে এখন হোস্টেলে যাইতে পারলে তোর বুদ্ধি গুলা কাজে লাগাইতাম, বাত্তি নিভাইয়া ঘুমাইয়া পড়তাম। 😀
      তুই হচ্ছিস দুস্টের তাজ। (3

  • নাসির সারওয়ার

    নাহ, লেখাটা ভালোই হয়েছে। শুরুটা ভালো, শেষটাও মন্দ নয়। তবে কি যেনো নাই।
    মনে পরছে মনে পরছে, পাশের ছাত্রাবাস থেকে হবু মন্টু ডাক্তার যে বাথরুমে গানের ছলে চিল্লাইয়া আপ্নাগো কান ফাটাইতো, হেইডা মিসিং হইছে…।।

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ