অনেক আগে অর্থাৎ আমার নানা দাদাদের সময়। তখন নাকি মুখে মুখেই জমি দান হয়ে যেতো। আবার জমি রদবদলও হতো। তাই দান করা জমি ও বদল করা জমি সেসব সূত্রে বসবাসকারিরাই জমির মালিক হয়ে যেতো একসময়।
আমার নানাও এরকমভাবে সরকার বাড়ির লোকদের ঘরতোলার জন্য কিছু ভিটে জমি দিয়েছিলেন, কারণ তাদের ঘর তোলার জন্য ভাল ভিটে জমি নেই। নানা বিনিময় দূরের কিছু ধানি জমি নিয়েছিলেন। তো সেই সরকার বাড়ির লোকরা প্রতিবেশি হিসেবে নানাদের বাড়ির কাছেই ঘর তুলে বসবাস করতে লাগলো। ছোটবেলায় ও বাড়ির পিচ্চিদের সাথে আমি খেলতাম। আমার একটাই মামা তার একটাই মেয়ে। সরকার বাড়ির ছেলের নজর পড়লো নানার অনেক জমি ও তার নাতির দিকে। কিন্তু মামা ও নানা আশ্রয় দাতা হিসেবে তাদের বাড়িতে মেয়ে বিয়ে দিতে চাইলেন না আশ্রিত বাড়ির ছেলের সাথে। যতোই অবস্থার পরিবর্তন হোক না কেন তারা এখানে আশ্রিত।
কিন্তু তারা হাল ছাড়লো না। অন্যপথ আশ্রয় নিলো। আমার মামাতো বোনের বিয়ের আগের দিন রাতে খুলনা থেকে গুন্ডা ভাড়া করে আনলো। এটা ১৯৯৬ সালের ঘটনা। সে মামলা এখনো রামপাল থানায় দাখিল করা আছে।
আমি তখন এস এস সির প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমার বড় আপার বাচ্চা হবে। সাতমাস বাচ্চা পেটে। হঠাৎ হামলা টের পেয়ে কিয়াম মামা মোটামুটি বড় আমাদের দুই তিনজনকে ঐ বর্ষা ও হালকা শীত শীত রাতে কিছুদূর আমার দাদাবাড়িতে নিয়ে রওনা হলেন। তাও নানাবাড়ির কবরস্থানের পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে হবে। কারণ, সামনে বড় রাস্তা দিয়ে গেলে ওদের মুখোমুখি হতে পারে। যেতে যেতে অন্ধকারে আমি এক ভাঙ্গা কবরে পড়ে গেলাম। কিয়াম মামা টেনে তুলে দেখে ভয়ে শক্ত হয়ে গেছি আমি।
যাইহোক কি করে দাদাবাড়ি পৌছাই তা মনে নেই।
এদিকে সরকারবাড়ির ছেলেও তার গুন্ডা বাহিনী নানাবাড়িতে হামলা করলো। বড় আপার পেটের উপর তারা বড় একটা দা ধরেছিল। মা তখন বলেছিল, আমরা কোন বাড়ির মানে আমার দাদাবাড়ির কথা। ওরা বড় আপাকে আর কিছু বলেনি। কাউকে কিছু না বলে নানাকে ধরে নিয়ে গেলো। যাওয়ার সময় রান্নাঘরে আগুন দিয়ে চলে গেছিল।
পরে সেই যে এসে আমার নানা বিছানায় পড়লো আর উঠলো না।
তার আশ্রিতরাই তাকে থাবা বসাইছিল।
১৭টি মন্তব্য
ইঞ্জা
আপু, লেখাটি আঙ্গুল দিয়ে অনেক কিছুই দেখিয়ে দিলো, যদি আমরা শিখি, কিন্তু শিখবো কিনা সন্দেহ আছে।
মৌনতা রিতু
গতকাল দেখলাম কিছু রহিঙ্গাদের পুলিশ গ্রেফতার করেছে ঢাকা কোচ থেকে। ভাবেন একবার!
বুঝতেছি না কি হবে!
ভাল থাকবেন ভাইজু।
ইঞ্জা
আপু, বিপদ আসছে শুধু এই বুঝি।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
লেখাটায় খুব তড়িগড়ি মন ছিলো তাই হয়তো এতো দ্রুত শেষ করলেন।তবে যাই হয়েছে তা অন্যায় সে জন্যেই মানুষ চিনে সাহায্য বা সুবিদা দিতে হয়।
মৌনতা রিতু
হুম আর একটু গুছিয়ে লেখা যেতো। আসলে মূল থিমটা তুলতে চেয়েছিলাম ভাই।
লেখা দিচ্ছেন না কেন ভাই? লেখা দিন।
মোঃ মজিবর রহমান
এইগুলি সব জায়গাতেই ঘটে মানুষ যুগ যুগ ধরে অমানুষ আর বেমানুসে ভরা এটা তারই উদাহরন হিসেবেই নিতে হয়। এটাই বাস্তব কিছুই করার থাকেনা। অর্থ, জমি জনবল/বাহুবল সকল ক্ষমতাই জাদের আছে তাঁরা কখন নির্যাতইত হয়না।
মৌনতা রিতু
হুম। আসলে বুদ্ধি সাহস দুটোই রাখা উচিৎ।
তবেই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
ভাল থাকবেন ভাই।
জিসান শা ইকরাম
ছোট লেখায় অনেক বড় বার্তা।
ভাল হয়েছে খুব,
শুভ কামনা।
মৌনতা রিতু
ধন্যবাদ ভাইয়া। ভাল থাকবেন।
শুভকামনা রইলো। দোয়া করবেন ভাইয়া।
সঞ্জয় কুমার
রোহিঙ্গদের ব্যাপারে আমি আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সাথে একমত । ওদের মানবিক কারণে সাময়িক আশ্রয় দেয়া ঠিক আছে তবে অবশ্যই সবাইকে আবার ফেরত পাঠাতেই হবে ।
বিহারীদের মত অবস্থা হলে সেটা বাংলাদেশের জন্য অবশ্যই খারাপ কিছু ।
কৌশলে ব্যাপারটা উপস্থাপনের জন্য ধন্যবাদ
মৌনতা রিতু
অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইলো। ভাল থাকবেন।
গাজী বুরহান
খুব ছোট্র করে লিখায় এতকিছু বুঝিয়ে দিলেন!!
মৌনতা রিতু
ধন্যবাদ😊। জানি না এই ইস্যুতে আমরা কি করতে পারব। চিন যতোবারই নিজেদের পরাশক্তি হিসেবে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে তখনই এমন সব কান্ড করতে চেয়েছে। ওরা রাখাইন এলাকায় অলরেডি তাদের ইকোনোমিক জোন তৈরি শুরু করেছে।
নিতাই বাবু
এটাই আধি নিয়ম। উপকার করলে না কি বাঘে খায়!
মৌনতা রিতু
বিশ্বে বিরাট এক পরিবর্তন আসবে বলে মনে হয়।
দেখা যাক কি হয়!
ভাল থাকবেন ভাই। শুভকামনা রইলো।
শুন্য শুন্যালয়
বেঁচে থাকাটাই বড় মনেহয়, বাঁকি সব অর্থহীন। যে আশ্রয় দেয়, সে এইসব কিছুই ভাবেনা। খুব বেশি পার্থক্য কী হবে! এদেশের ভিত এমনিতেই নড়বড়ে হয়ে গেছে। কিছু ভাবতে ভয় হচ্ছে। জানিনা।
মৌনতা রিতু
ঠিক বলেছো যে অাশ্রয় দেয় সে কিছু ভাবে না। কি হবে দেখা যাক। কেমন অাছো? ভালো থেকো। -{@ (3