জানা যায়, বাংলাদেশে মোবাইল ফোন প্রথম চালু হয় ১৯৯৩ সালের এপ্রিল মাসে । তখন হাচিসন বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (এইচবিটিএল) এই সেবা চালু করে । তখন থেকে AMPS মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু এবং আজ অবধি চলছেই । বর্তমানে এর প্রযুক্তি আরও উন্নত, আরও সহজ, আরও দ্রুতগতিসম্পন্ন ।

মোবাইল ফোন, সেলুলার ফোন বা হ্যান্ড ফোন (ইংরেজি ভাষায়: Mobile phone) তারবিহীন টেলিফোন বিশেষ । মোবাইল অর্থ ভ্রাম্যমান বা "স্থানান্তরযোগ্য"। এই ফোন সহজে যেকোনও স্থানে বহন করা এবং ব্যবহার করা যায় বলে মোবাইল ফোন নামকরণ করা হয়েছে । এই মোবাইল ফোনের উদ্ভাবক হলেন, মোটোরোলা কোম্পানিতে কর্মরত ডঃ মার্টিন কুপার এবং জন ফ্রান্সিস মিচেলক ।

এই দুইজন বক্তিকেই প্রথম মোবাইল ফোনের উদ্ভাবকের মর্যাদা দেয়া হয়ে থাকে । তাঁরা ১৯৭৩ সালের এপ্রিলে প্রথম সফলভাবে একটি প্রায় ১ কেজি (২পাউন্ড) ওজনের হাতে ধরা ফোনের মাধ্যমে কল করতে সক্ষম হন । জানা যায় উইকিপিডিয়া থেকে ।

তবে আমি এই মোবাইল ফোন বা সেলফোন নিয়ে কিছু লেখতে চাই না । চাই 'ছদ্মনাম' নিয়ে কিছু লিখতে ।

আমি ২০০৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে একটা মোবাইল কিনি । মোবাইলটি ছিল নোকিয়া ১১১০ মডেল, দাম ছিল মাত্র ৩৬০০ টাকা । এই মোবাইলটা দিয়ে (GPRS) সার্ভিস বা ইন্টারনেট কানেকশন পাওয়া যেত না । আগেই বলেই রাখা ভালো, তখন ছিল 2G এখন 3G । শুনছি কোনও একসময় চালু হতে যাচ্ছে 4G । প্রযুক্তির যুগে এটা আমাদের জন্য একটা ভাগ্য বটে । যেখানে আগে আমরা একটা ওয়ান ব্যান্ডের রেডিওর পেছন সারাক্ষণ দৌড়াতাম । সেখানে আজ ছোট্ট একটা যন্ত্রের ভেতরে রেডিও সহ অনেককিছু থাকে । যাই হোক, এর পর ২০০৭ সালে নোকিয়া সি থ্রী একটা মোবাইল ব্যবহার শুরু করি । ওই মোবাইলটা ছিল আমার ছেলের রেখে যাওয়া স্মৃতি । তখন থেকেই আমার এই তথ্যপ্রযুক্তি যুগের অনলাইনে প্রবেশ ।

প্রথমে গুগল প্লাস পরে ফেসবুক ইউটিউব সহ বহু ওয়েবসাইটে ছিল আনাগোনা । যা এখনো চলছে যথারীতি । দিনরাত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ২০ ঘন্টাই থাকা চাই অনলাইনে । ব্লগ আর ব্লগার সম্বন্ধেও আগে আমার তেমন কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না । বাংলাদেশের স্বনামধন্য পত্রিকা 'প্রথম আলো'তে একসময় নাগরিক সাংবাদিকতার একটা সাইট ছিল । সেখানে দেশের অনেক স্বনামধন্য লেখকরা লিখতেন, নিজেদের একান্ত অনুভূতি প্রকাশ করতেন । তারপর আস্তে আস্তে অনলাইন ভিত্তিক বহু ব্লগ সাইট তৈরি হয় । এগুলো যথাক্রমে; টেকটিউনস, সামহয়ারইনব্লগ, মুক্তমনা ব্লগ, টিউনারপেজ, পিসিহেল্পলাইনবিডি, টেকটুইটস, প্রথম আলো ব্লগ, নাগরিক ব্লগ, টিউটোরিয়ালবিডি, সুডোল্যাব সহ ছিল ইংরেজী ব্লগ ও ফোরাম ।

এসব অনলাইন ভিত্তিক ব্লগ বা দিনলিপিতে অনেক নামীদামী লেখকরাই লিখতেন । অনেকে নিজের নাম গোপন করে ছদ্মনামে লিখে যেতেন । এই "ছদ্মনাম" নিয়ে যদি কিছু লিখতে যাই, তাহলে ছদ্মনামের পুরো ইতিহাস টানতে হয় ।

ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, ছদ্মনাম কোনো ব্যক্তি বা ক্ষেত্রবিশেষে কোনো গোষ্ঠীর কাল্পনিক নাম । ছদ্মনাম ব্যবহারের প্রধান উদ্দেশ্য কোনো ব্যক্তির প্রকৃত পরিচয় গোপন রাখা । শুধুমাত্র লেখকেরাই ছদ্মনাম ব্যবহার করেন না, গ্র্যাফিটি শিল্পী, প্রতিবাদী আন্দোলনকারী অথবা সন্ত্রাসবাদী এমনকি কম্পিউটার হ্যাকারেরাও ব্যবহার করেন এই জাতীয় নকল নাম । অভিনেতা, গায়ক বা অন্যান্য শিল্পীরা অনেক সময় নিজেদের জাতিগত পরিচয় গোপন রাখার জন্য মঞ্চনাম ব্যবহার করেন । কোনো কোনো ক্ষেত্রে আবার একাধিক ব্যক্তি একক ছদ্মনামের আড়ালেও লিখে থাকেন । কোনো রচনার সহকারী লেখকবৃন্দের ক্ষেত্রেও এই জাতীয় ছদ্মনাম গ্রহণের প্রবণতা দেখা যায় ।

বাংলা ভাষাতে ছদ্মনাম গ্রহণের প্রথাটি সুপ্রচলিত । কৈশোরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর "ভানুসিংহ ঠাকুর" ছদ্মনামে কয়েকটি কবিতা রচনা করেছিলেন । বিশিষ্ট লেখক রাজশেখর বসু স্বনামে অনুবাদ সাহিত্য, প্রবন্ধ ইত্যাদি রচনা করলেও, তাঁর প্রসিদ্ধ শ্লেষাত্মক গল্পগুলি লিখতেন "পরশুরাম" নামে । এমন আরও অনেকই ছিলেন ছদ্মনামে । তাদের মধ্যে কিছু কবি ও লেখকদের ছদ্মনাম নিম্নরূপ ।

ছদ্ম নাম---------------প্রকৃত নাম

• অপরাজিতা দেবী------রাধারানী দেবী
• কালকূট-----------------সমরেশ বসু
• ওমর খৈয়াম------------সৈয়দ মুজতবা আলি
• কাকাবাবু----------------প্রভাত কিরণ বসু
• কালপেঁচা----------------বিনয় ঘোষ
• কমলাকান্ত--------------বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
• জরাসন্ধ-----------------চারুচন্দ্র চক্রবর্তী
• ইন্দ্রনাথ মিত্র------------ডঃ অরবিন্দ গুহ
• যাযাবর------------------বিনয় মুখোপাধ্যায়
• অবধূত------------------দুলাল মুখোপাধ্যায়
• ভানুসিংহ---------------রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
• নিরপেক্ষ---------------অমিতাভ চৌধুরী
• নীলকন্ঠ----------------দীপ্তেন্দ্র সান্যাল
• কাফি খাঁ---------------প্রফুল্ল চন্দ্র লাহিড়ী
• বিরূপাক্ষ---------------বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র
• যুবনাশ্ব-----------------মনীশ ঘটক
• নীললোহিত-----------সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
• মহাস্থবির-------------প্রেমাঙ্কুর আতর্থী
• বীরবল----------------প্রমথ চৌধুরী
• প্র.না.বি.--------------প্রমথনাথ বিশী
• স্বপনবুড়ো------------অখিল নিয়োগী
• ধনঞ্জয়----------------বৈরাগী তরুণ রায়
• বেদুইন----------------দেবেশ রায়
• ভীষ্মদেব--------------দেবব্রত মল্লিক
• বিজ্ঞানভিক্ষু ---------লালিত মুখোপাধ্যায়
• টেকচাঁদ ঠাকুর ------প্যারীচাঁদ মিত্র
• দীপক চৌধুরী -------নিহার ঘোষাল
• মৌমাছি --------------বিমল চন্দ্র ঘোষ
• চাণক্য সেন ---------ভবানী সেনগুপ্ত
• পরশুরাম -----------রাজশেখর বসু
• শ্রীপান্থ ---------------নিখিল সরকার
• বানভট্ট --------------নীহাররঞ্জন গুপ্ত
• ভাস্কর ---------------জ্যোতির্ময় ঘোষ
• রূপদর্শী -------------গৌরকিশোর ঘোষ
• সুপান্থ ----------------সুবোধ ঘোষ
• বিকর্ণ ----------------নারায়ন সান্যাল
• প্রবুদ্ধ ----------------প্রবোধ চন্দ্র বসু
• শংকর ---------------মণিশংকর মুখোপাধ্যায়
• শ্রীভট্ট ----------------দীনেশ গঙ্গোপাধ্যায়
• বনফুল ---------------বলাই চাঁদ মুখোপাধ্যায়
• সুনন্দ -----------------নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
• অনিলা দেবী ---------শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
• অমিয়া দেবী ---------অমৃতলাল বন্দোপাধ্যায়
• ত্রিলোচন কলমচী ---আনন্দ বাগচী
• নবকুমার কবিরত্ন ----সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
• মানিক বন্দোপাধ্যায় --প্রবোধ বন্দোপাধ্যায়
• সত্য সুন্দর -------------মোহিত লাল মজুমদার
• পঞ্চানন ----------------ইন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায়
• উদয়ভানু --------------প্রাণতোষ ঘটক
• নীহারিকা দেবী -------অচিন্তকুমার সেনগুপ্ত
• হুতোম পেঁচা ----------কালি প্রসন্ন সিংহ
• দৃষ্টিহীন ----------------মধুসূদন মজুমদার
• সত্য সুন্দর দাস ------মোহিত লাল মজুমদার
• নীল লোহিত ----------সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

তাহলে বুঝাই যাচ্ছে যে, এই ছদ্মনাম অনেক অনেকদিন থেকেই প্রচলিত । যা এখনো চলছে দেশ বিদেশের অনলাইন ভিত্তিক দিনলিপিতে আর কবি লেখকদের মাঝে । যেমনটা দেখা যায় অন্যান্য ব্লগে আর সোনেলা দিগন্তেও । এসব ছদ্মনামের লেখকদের লেখায় মন্তব্য দিতে বাঁধে খটকা । ছদ্মনামে বোঝা যায় না লেখকের লিঙ্গ পরিচয় । তাই অনেক সময় সম্মোধন করতে গিয়ে ভাইয়ের জায়গায় বোন লিখে ফেলে কেউ কেউ । যেমন; " সম্মানিত দিদি, আপনার অসাধারণ লেখনী পড়ে অনেককিছুই জানা হলো । এই অসাধারণ লেখাটির জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই ।"

আসলে লেখাটি লিখেছেন একজন লেখক (পুরুষ) ছদ্মনাম ছিল: "আকাশের তারা" । এই ছদ্মনামটিতে কি বোঝা যায়, লেখক নারী -না-পুরুষ? বোঝা মুশকিল । আবার প্রোফাইল ছবিটাও থাকে নকল, হয়ত ফুলের, না হয় কোনও পশুপাখির । তাই ধন্যবাদ জানাতেও মুশকিল হয়ে পড়ে । আমি নিজেও সময় সময় এরকম মুশকিলে পড়েছিলাম । যেমুন পড়েছি ফেসবুকে, তেমন পড়েছিলাম অনলাইনে লেখবার অন্যান্য দিনলিপিতে । এখানে একজন ছদ্মনামের লেখকের নাম উল্লেখ করা যেতে পারে । নাম: "বাংগাল" এই নামের লেখকের আসল নামটি আজও জানা হলো না । জানা হলো না তার লিঙ্গ পরিচয় । অথচ এই লেখকের লেখার সাথে আমার হৃদয়ের সম্পর্ক বহু আগে থেকে । যাক সেই লেখক আর লেখা, এই সোনেলা দিগন্তেও এমন বহু ছদ্মনামের লেখক দেখা যায় । তাদের লেখায় মন্তব্য দিতে মন চাইলেও দিতে দ্বিধাবোধ হয় । কেন হয়? হয় এই কারণে যে, দিদির জায়গায় যদি দাদা সম্মোধন করে ফেলি, তাই । অনেক সময় এরকম উল্টাপাল্টা করেও ফেলি । তখন আবার দ্বিতীয় মন্তব্য টেনে দুঃখপ্রকাশ করতে হয় ।

এখানে উপরোল্লিখিত "ছদ্মনাম'র কবি ও লেখকদের বহুকাল থেকে মানুষ চিনে । তাদের ছদ্মনামের পাশাপাশি আসল নামও মানুষে জানে । সম্মানিত লেখক কবিদের এই ছদ্মনাম ইতিহাসের পাতায় লেখা । এই পৃথিবী নামক গ্রহটি যতদিন থাকবে, ততদিন তাঁরা এই ছদ্মনামেই মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবে । কিন্তু আমরা যারা ছদ্মনামের লেখক, তাদের মানুষে চিনবে জানবে কী করে? চিনবে শুধু ছদ্মনামধারী লেখকের পরিবারবর্গ । এ ছাড়া অন্য কেহ জানার উপায় আছে বলে আমার মনে হয় না । কেননা, ছদ্মনামের "বাংগাল" যদি আমার সামনে দিয়ে হেটে যায়, তারপরেও আমি চিনবো না যে, এটা সম্মানিত লেখক "বাংগাল" বা "আকাশের তারা"।

বর্তমানে ছদ্মনামের ছড়াছড়ি চলছে সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুকে । চলছে দেশের স্বনামধন্য অনলাইন ভিত্তিক লেখবার দিনলিপি ব্লগগুলোতে । আগেকার সময় প্রতিবাদী লেখকদের লেখায় মানুষের মনে প্রতিবাদের ঝড় ওঠত । তাঁরা মানুষের কল্যাণের জন্য লিখে যেতেন, তাই হয়ত তাদের ভয় ছিল । সেই ভয়েই তারা ব্যবহার করতেন ছদ্মনাম, যাতে মানুষ সরাসরি তাদের না চেনে । যেই ভয়ে আক্রান্ত হয়েছিল আমাদের দেশের একটা স্বনামধন্য ব্লগ "মুক্তমনা"। কিন্তু আজ আমরা যারা লেখালেখি করছি, তাদের মধ্যে সবার লেখাই কী প্রতিবাদী লেখা? কোনও ধর্ম অবমাননা লেখা? কোনও রাষ্ট্র বিরোধী লেখা? তাহলে কিসের ভয়? কেন ছদ্মনাম? কেন নিজের প্রোফাইলে নকল ছবি? কেন-ই-বা আত্মগোপনে থাকা? কেন-ই-বা কাছে থেকে দূরে সরে থাকা? এসব প্রশ্নগুলো শুধু থেকেই যায়, উত্তর মেলে না । আপনাদের কাছে কোনও উত্তর আছে কী?

বিশেষ দ্রষ্টব্য: এখানে যারা ছদ্মনামে আছেন, তারা লেখাটি পড়ে মনঃক্ষুণ্ণ হবেন না । আর মনকষ্ট নিবেন না । লেখাটি আমি একান্ত অনুভূতি থেকে লিখেছি ।

লেখার তথ্য সংগ্রহ উইকিপিডিয়া ও অন্যান্য ওয়েবসাইট থেকে ।

0 Shares

১৫টি মন্তব্য

  • নীরা সাদীয়া

    বেশ ভাল ও তথ্যবহুল পোস্ট। মজার ব্যাপার হল, সেদিন আমাকে একজন রিকু দিয়েছেন, যার নাম “মৃত মানুষ”! এইবার বোঝেন কী ভয়ঙ্কর ব্যপার! সত্যি ছদ্মনামের পাশাপাশি তাঁদের আসল নামটাও প্রকাশ করা উচিত।

  • সঞ্জয় কুমার

    ছদ্দ নামের কিছুটা প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই আছে । আর এই কারণেই প্রাচীন কাল থেকে লেখকরা ছদ্দ নাম ব্যাবহার করছে ।

    ভয় ! সব লেখককেই ভয়ে ভয়েই কলম চালাতে হয় । কোন কাজটা আপনার আমার কাছে ভাল হলেও কারও কাছে সেটা উষ্কানীমূলক !!! অবমাননা দায়ক ।

    বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী তারেক সালমান এবং ইমতিয়াজ মাহমুদের ব্যাপার তো জানেনই । ।

    তবে ফেসবুকে বিকৃত নাম ব্যাবহার অশোভনীয়

  • মোঃ মজিবর রহমান

    আমার অনেক দিনের প্রশ্ন আপনার মাধ্যমে প্রকাশ হল। হ্যাঁ ছদ্মনাম দরকার আছে তবে পূর্বে কেউ খারাপ উদ্দশ্য নিয়ে লিখত না তাঁরা দেশের স্বার্থে বা আন্দোলন বা ব্যাক্তি উদ্দেশে লিখত কিন্তু এখন ফেবু বা সাইটে অনেক খারাপ লেখা দেয় জা ব্যাথিত করে,।

    ভাললাগা রইল।

  • ইঞ্জা

    বেশ তত্ববহুল লেখা দিয়েছেন দাদা আর এই কারণেই আপনাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি, কথা প্রসঙ্গে বলে রাখি, আমার নামও ছদ্মনাম নয়, আমার ডাক নামেই আমার একাউন্ট।

  • অলিভার

    আপনার সাথে একাত্ম মনোভাব প্রকাশ করছি এই নিয়ে যে, ছদ্মনাম নিয়ে অনেক সময় বিড়ম্বনায় মুখোমুখি হতে হয়। ব্লগিং এর শুরুর দিক হতে এখন পর্যন্ত অনেক জায়গাতেই অনেক ব্লগার/ফেসবুক ব্যবহারকারীকে ‘ভাইয়া’ ‘আপু’ ডাকতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে।

    তবে ছদ্মনাম নিয়ে ধারণাটির সাথে একমত হতে পারলাম না বলে দুঃখিত। ছদ্মনামের ব্যবহার কিন্তু শুধু ভয় থেকে নয়, আমার কাছে এর ভিন্ন একটি অর্থ আছে। এটা তাদের শৈল্পিক মনোভাব প্রকাশেরও একটা মাধ্যম হয়ে দাড়ায়। নিজ নিজ অবস্থান থেকে স্বনামে লিখেও মাঝে মাঝে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়, না সেটি আক্রমণাত্মক ভয় থেকে নয়, সামাজিক কিংবা অন্য কোন পরিপ্রেক্ষিতে সেই বিব্রতকর অবস্থার মুখোমুখি হয় তারা। আর একজন ব্যক্তি যখন ছদ্মনামের আড়ালে লিখতে শুরু করে, তখন শুরুতে নিজের জড়তা ধরে রাখলেও একটা সময় সে তার নিজের দায়রা থেকে বাইরে বের হয়ে অনেক বিস্তৃত চিন্তা করতে পারে।

    তার মানে এই ও নয় যে সকল ছদ্ম ‘নিক’ গুলির সমস্ত কার্যকলাপের আমি প্রতিনিধিত্ব করছি। ছদ্মনামের অনেক অপব্যবহারও হয়েছে। আগেও হয়েছে, এখনও হচ্ছে আর বোধ করি ভবিষ্যতেও হবে। আর এটাও অস্বীকার করছি না যে নিজ নামে লিখলে কারও সৃষ্টিশীলতায় গণ্ডিতে কেউ আটক পড়ে যায়।

    আপনার লেখাটি ইনফরমেটিক। ছদ্মনামের ধারণা পেতে লেখাটি অনেকের জন্যেই সহায়ক হবে।

    শুভকামনা জানবেন 🙂

    • নিতাই বাবু

      আপনার সাথে একাত্ম মনোভাব প্রকাশ করছি এই নিয়ে যে, ছদ্মনাম নিয়ে অনেক সময় বিড়ম্বনায় মুখোমুখি হতে হয়। ব্লগিং এর শুরুর দিক হতে এখন পর্যন্ত অনেক জায়গাতেই অনেক ব্লগার/ফেসবুক ব্যবহারকারীকে ‘ভাইয়া’ ‘আপু’ ডাকতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে।

      ধন্যবাদ অজস্র ।

      তবে ছদ্মনাম নিয়ে ধারণাটির সাথে একমত হতে পারলাম না বলে দুঃখিত। ছদ্মনামের ব্যবহার কিন্তু শুধু ভয় থেকে নয়, আমার কাছে এর ভিন্ন একটি অর্থ আছে। এটা তাদের শৈল্পিক মনোভাব প্রকাশেরও একটা মাধ্যম হয়ে দাড়ায়। নিজ নিজ অবস্থান থেকে স্বনামে লিখেও মাঝে মাঝে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়, না সেটি আক্রমণাত্মক ভয় থেকে নয়, সামাজিক কিংবা অন্য কোন পরিপ্রেক্ষিতে সেই বিব্রতকর অবস্থার মুখোমুখি হয় তারা।

      কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর “ভানুসিংহ ঠাকুর” ছদ্মনামে কয়েকটি কবিতা রচনা করেছিলেন প্রথম জীবনে । এরপর তিনি ভাবলেন যে, “আমি তো লেখবই। তাহলে ছদ্মনামের প্রয়োজন নাই ।”
      সেই থেকে কবি গুরু স্বনামেই লিখতেন । আর যারা ছদ্মনামে লিখতেন, তারা একের অধিক লেখা যখন লিখে ফেলেছেন, তখন তারা মানুষের কাছে, পাঠকের কাছে ছদ্মনামেই পরিচিতি লাভ করে ফেলেছেন। তখন তারা আর তাদের রাখা ছদ্মনাম পাল্টাতে পারেনি, ছদ্মনামেই রয়ে গেল সম্মানিত কবি ও লেখকবৃন্দ ।
      আপনিও যদি আমাদের মাঝে ছদ্মনামে লিখেন, ছদ্মনামেই থাকবেন ।
      তবে আপনি দাদা না দিদি তা আমি জানি না । আপনাকে বলছি! বিখ্যাত কবি লেখকদের ছদ্মনামের পাশাপাশি প্রকৃত নামটাও মানুষ জানে । এখানে ছদ্মনামের লেখকদের প্রকৃত নাম জানবো কী করে?

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ